Saturday 12 June 2021

ধর্ষণ: পুরুষদের লজ্জা

৮  অক্টোবর ২০২০ 

কোন সমাজে ধর্ষকামী পুরুষের সংখ্যা যখন বেড়ে যায়, সেই সমাজের পুরুষদের লজ্জা হওয়া উচিত। আমারও হচ্ছে। লজ্জা হচ্ছে – কারণ আমাদেরই প্রচ্ছন্ন প্রশ্রয়ে বেড়ে উঠছে এসব ধর্ষক। আমরা আমাদের মেয়েদের দোষ ধরতে যখন ব্যস্ত থাকি, মেয়েদের স্বাভাবিক চলাফেরাটুকুকেও বিধিনিষেধের বেড়া দিয়ে ক্রমাগত সংকুচিত করে ফেলি, ঠিক একই সময়ে আমাদের ঘরের ছেলেদেরকে এটুকু শিক্ষা দিই না যে মেয়েদের সম্মান করতে হয়। আমাদের ছেলেরা যখন ধর্ষণ করে এসে মিথ্যা কথা বলে, তখন আমরা ধর্ষিতার দোষ দিই। পুরুষদের হাতে অপমানিত হবার পর চারপাশের মানুষের আবারো ক্রমাগত অপমান সহ্য করতে না পেরে কত মেয়েকে আত্মহত্যা করতে হয়েছে। অথচ একজন ধর্ষককেও আমরা দেখলাম না যে সামাজিক চাপে কোনঠাসা হয়ে রয়েছে। আমরা যখন জানতে পারি আমাদের পরিচিত কোন পুরুষ কোন নারীকে অপমান করেছে – আমরা কি সেই পুরুষকে ত্যাগ করি? যখন অপমানিতার ভিডিও কেউ শেয়ার করে পাঠায়, তখন কি আমরা তাকে বর্জন করি? বাংলাদেশের মত ঘনবসতিপূর্ণ জায়গায় একজন মেয়েকে যখন কিছু পুরুষ মিলে অত্যাচার করে, তখন আশেপাশের সব পুরুষ কোন্‌ জাদুতে ঘুমিয়ে থাকে? একটা নোংরা ভিডিও যখন সামাজিক মাধ্যমে আপলোড করে কোন পুরুষ, তার হাজারো পরিচিত অপরিচিত পুরুষ সেগুলোকে ভাইরাল করে মজা দেখে। আমাদের সমাজের মোট পুরুষের তুলনায় ধর্ষক পুরুষের সংখ্যা তো হাতে গোনা। আমাদের প্রশ্রয় না পেলে এরা তো এভাবে বাড়তে পারতো না। সারাদেশজুড়ে এখন ধর্ষণ ও নারী নির্যাতনের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ চলছে। এই বিক্ষোভ প্রতিদিন প্রতিঘরে চলা উচিত। প্রত্যেক মা-বাবার উচিত তাদের ছেলেকে উপযুক্ত শিক্ষা দেয়া। তাহলে আর মেয়েদের গৃহবন্দী করে রাখতে হবে না। ধর্ষণ শুধু পুরুষরাই করে। তাই এই লজ্জা, এই কলংক পুরুষদের। আর কলংকমোচনের দায়িত্বও পুরুষদের। 


৯ জুলাই ২০১৯

আমি জানি আমার মতো আপনিও রাগে-দুঃখে-ক্ষোভে-হতাশায় হতভম্ব হয়ে গেছেন। আমাদের শিশুরা, আমাদের কন্যারা - আজ কোথায় নিরাপদ??? আমাদের বিশ্বাসের জায়গা কমছে তো কমছেই। কিছু ধর্ষক-পুরুষের কারণে লজ্জায় আমার মাথা নত হয়ে আসছে - কারণ আমিও একজন পুরুষ। এরকম জঘন্য কাজ শুধুমাত্র পুরুষের পক্ষেই করা সম্ভব। আমাদের ছেলেরা যেন এরকম কাজ কখনো না করে সে শিক্ষা কি আমরা আমাদের  ছেলেদের দিচ্ছি? নাকি প্রশ্রয় দিতে দিতে বিপজ্জনক পুরুষে পরিণত হতে সাহায্য করছি?

No comments:

Post a Comment

Latest Post

বিজ্ঞানী গীতাঞ্জলি রাও

  পানি-দূষণের মাত্রা নির্ধারণের দ্রুততম বৈজ্ঞানিক পদ্ধতি ‘টেথিস’ উদ্ভাবন করে গীতাঞ্জলি রাও যখন   ২০১৭ সালে আমেরিকার শ্রেষ্ঠ তরুণ বিজ্ঞানীর শ...

Popular Posts