Saturday 31 October 2020

যে গ্রহে সূর্য উঠে পশ্চিম দিকে - পর্ব ৯



সপ্তম অধ্যায়

শুক্র গ্রহে অভিযান

 

সূর্যের আটটি গ্রহের মধ্যে বুধ, শুক্র, পৃথিবী ও মঙ্গল - এই চারটি গ্রহ কঠিন এবং বৃহস্পতি, শনি, ইউরেনাস ও নেপচুন - এই চারটি গ্রহ গ্যাসীয়। কঠিন গ্রহগুলো আকার ও আয়তনে প্রায় কাছাকাছি। এই চারটি গ্রহের ঘনত্বও তুলনামূলকভাবে অন্য চারটি গ্রহ থেকে অনেক বেশি। বৃহস্পতি, শনি, ইউরেনাস ও নেপচুন পৃথিবী থেকে অনেক দূরে অবস্থান করছে এবং তাদের আয়তন পৃথিবীর তুলনায় অনেক গুণ বেশি। বুধ, শুক্র ও মঙ্গল - পৃথিবীর কাছাকাছি এই গ্রহ তিনটিতে স্বয়ংক্রিয় নভোযান পাঠানো শুরু হয় ১৯৬১ সালে স্পুটনিক প্রোগ্রামের মাধ্যমে। তৎকালীন সোভিয়েত ইউনিয়ন শুক্র গ্রহে অভিযানের উদ্দেশ্যে অনেকগুলো মিশন পরিচালনা করে এবং বেশ সাফল্য অর্জন করে। আমেরিকার ন্যাশনাল অ্যারোনটিক্‌স অ্যান্ড স্পেস অ্যাডমিনস্ট্রেশান বা নাসা (NASA) শুক্রে অভিযানের জন্য অনেক সফল মিশন পরিচালনা করে। সাম্প্রতিক কালে জাপান এবং ইওরোপিয়ান স্পেস এজেন্সিও শুক্র গ্রহে অভিযানের প্রকল্প হাতে নিয়েছে। এপর্যন্ত শুক্র অভিযানের ৪৫টি মিশন পরিচালনা করা হয়েছে। এই ৪৫টি মিশনের মধ্যে ৩২টি মিশন পরিচালনা করেছে তৎকালীন সোভিয়েত ইউনিয়ন। ১৯৬১ সাল থেকে ১৯৮৪ সাল পর্যন্ত এই মিশনগুলো পরিচালিত হয়। চাঁদে অভিযানে যেমন আমেরিকানদের সাফল্য তুলনামূলকভাবে বেশি, তেমনি শুক্র অভিযানে সোভিয়েত ইউনিয়নের সাফল্য বেশি ছিল। শুক্র গ্রহে এপর্যন্ত ১০টি মিশন পরিচালনা করে আমেরিকা, ১টি জাপান, এবং দুটো মিশন চালায় ইওরোপীয় ইউনিয়ন। শুক্রগ্রহে অভিযানের লক্ষ্যে পরিচালিত মিশনগুলোর সংক্ষিপ্ত পরিচয় ধারাবাহিকভাবে আলোচনা করছি।

         

 

শুক্রে অভিযান ১

মিশন/

মহাকাশযান

দেশ

উৎক্ষেপণের তারিখ

প্রধান লক্ষ্য ও ফলাফল

স্পুটনিক 7 (Sputnik 7)

সোভিয়েত ইউনিয়ন

4/2/1961

শুক্র গ্রহের কাছাকাছি যাওয়া।

মিশন ব্যর্থ হয়।

           

স্পুটনিক-৭ ছিল শুক্র গ্রহে অভিযানের প্রথম চেষ্টা। সোভিয়েত ইউনিয়ন বেশ সাফল্যের সাথে পৃথিবী পৃষ্ঠ থেকে পৃথিবীর কক্ষপথে উৎক্ষেপণ করে স্পুটনিক-৭। এই নভোযানে শুক্র গ্রহে পাঠানোর জন্য স্বয়ংক্রিয় যন্ত্রপাতি ছিল। লক্ষ্য ছিল পৃথিবীর কক্ষপথে একবার ঘুরে চলে যাবে শুক্রের কাছাকাছি। সেখান থেকে শুক্রের আবহাওয়ামন্ডল পর্যবেক্ষণ করবে। কিন্তু পৃথিবীর কক্ষপথ থেকে এটা শুক্রের দিকে যেতে পারেনি। পৃথিবী থেকে উৎক্ষেপণের ২২ দিন পর এটা পৃথিবীর বায়ুমন্ডলে ফিরে আসে।

 

 

শুক্রে অভিযান ২

মিশন/

মহাকাশযান

দেশ

উৎক্ষেপণের তারিখ

প্রধান লক্ষ্য ও ফলাফল

ভেনেরা 1 (Venera 1)

সোভিয়েত ইউনিয়ন

12/2/1961

শুক্র গ্রহের পাশ দিয়ে উড়ে যাওয়া।

যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে মিশন ব্যর্থ হয়।

 

রুশ ভাষায় শুক্র গ্রহের নাম ভেনেরা। সোভিয়েত ইউনিয়ন ভেনেরা প্রকল্পের আওতায় ভেনেরা-১ থেকে ভেনেরা-১৬ পর্যন্ত ১৬টি বৈজ্ঞানিক মিশন চালিয়েছিল শুক্র গ্রহের বৈজ্ঞানিক তথ্য সংগ্রহ করার কাজে। পৃথিবীর বাইরে অন্য কোন গ্রহে সর্বপ্রথম পৃথিবীতে প্রস্তুত কোন নভোযান অবতরণ করানোর সাফল্য এসেছে ভেনেরা প্রকল্পের মাধ্যমে।

          ভেনেরা-১ ছিল শুক্র গ্রহের পাশ দিয়ে উড়ে যাওয়ার উদ্দেশ্যে তৈরি প্রথম মহাকাশযান। এর উচ্চতা ছিল 2.035 মিটার, ব্যাস 1.05 মিটার। জ্বালানিসহ এর ভর ছিল 643.5 কেজি। দুই বর্গমিটার ক্ষেত্রফলের দুটো সোলার প্যানেল যুক্ত ছিল । একটি দুই মিটার লম্বা অ্যান্টেনা যুক্ত ছিল তথ্য পাঠানোর জন্য। শুক্রে পাঠানোর জন্য স্বয়ংক্রিয় যানে ছিল ম্যাগনেটোমিটার, কসমিক রেডিয়েশান কাউন্টার ইত্যাদিসব সেই সময়ের অত্যাধুনিক যন্ত্রপাতি।

 

 

চিত্র 21: ভেনেরা-1

         

সাফল্যের সাথে উৎক্ষেপণের পর সবকিছুই পরিকল্পনা অনুসারে চলছিল। ১২ ফেব্রুয়ারি ১৯৬১, উৎক্ষেপণের পরে ১,২৬,৩০০ কিলোমিটার দূর থেকে পৃথিবীতে সিগনাল পাঠায় ভেনেরা-১। পরের দিন সিগনাল পাঠায় ৪,৮৮,৯০০ কিলোমিটার দূর থেকে। ১৭ ফেব্রুয়ারি সিগনাল পাঠায় ১৮ লক্ষ ৯০ হাজার কিলোমিটার দূর থেকে। তারপর ২২ ফেব্রুয়ারি ৩২ লক্ষ কিলোমিটার দূর থেকে সিগনাল এসেছিল মনে করা হলেও পরে তা নিশ্চিত করা যায়নি। পৃথিবীর সাথে ভেনেরা-১ এর যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। হিসেব মতে মহাকাশে ভেনেরা-১ ১৯৬১ সালের মে মাসের ১৯-২০ তারিখে শুক্র গ্রহের এক লক্ষ কিলোমিটারের মধ্যে পৌঁছানোর কথা। কিন্তু পৃথিবীর সাথে কোন যোগাযোগ না থাকায় এই মিশনকে একটি ব্যর্থ মিশন হিসেবে ধরে নিতে হয়।

          আমেরিকার ন্যাশনাল অ্যারোনটিক্‌স অ্যান্ড স্পেস অ্যাডমিনস্ট্রেশান বা নাসা (NASA) ম্যারিনার প্রোগ্রামের আওতায় ১৯৬২ থেকে ১৯৭৩ - এই ১২ বছরে ম্যারিনার-১ থেকে ম্যারিনার-১০ এই দশটি ম্যারিনার মিশন মহাকাশে পাঠায়। এদের মধ্যে ম্যারিনার-১, ম্যারিনার-২ ও ম্যারিনার-৫ এর লক্ষ্য ছিল শুক্র গ্রহের পাশ দিয়ে উড়ে যাওয়া। ম্যারিনার-১০ ছিল শুক্র গ্রহ ও বুধ গ্রহের পাশ দিয়ে যাবার মিশন। ম্যারিনার মিশনে মোট খরচ হয়েছিল প্রায় 554 মিলিয়ন ডলার যা আমাদের টাকার হিসেবে 4,432 কোটি টাকা।

 

শুক্রে অভিযান ৩

মিশন/

মহাকাশযান

দেশ

উৎক্ষেপণের তারিখ

প্রধান লক্ষ্য ও ফলাফল

ম্যারিনার 1 (Mariner 1)

আমেরিকা

22/07/1962

শুক্র গ্রহের পাশ দিয়ে উড়ে যাওয়া।

উৎক্ষেপণ চেষ্টা ব্যর্থ হয়।

 

শুক্র গ্রহের পাশ দিয়ে উড়ে যাবার লক্ষ্যে ডিজাইন করা হয়েছিল ম্যারিনার-১। উড্ডয়নের দিন সবকিছু ঠিকমতই এগোচ্ছিল। লঞ্চিং কমান্ড শুরু হয়ে যাবার পর দেখা গেলো যে লঞ্চিং প্যাডের একটা ত্রুটির কারণে রকেটটির গতিপথ বদলে যাবার সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে। সেই অবস্থায় রকেটটি  উৎক্ষিপ্ত হলে সেটা মহাকাশে না গিয়ে উত্তর আটলান্টিকের জাহাজের সারির উপরে গিয়ে পড়বে, অথবা কোন আবাসিক এলাকায় গিয়ে পড়বে। কিন্তু ততক্ষণে লঞ্চিং কাউন্টডাউন শুরু হয়ে গেছে। লঞ্চিং প্যাড ছেড়ে আকাশে উঠে যাওয়ার মাত্র ৬ সেকেন্ড আগে ম্যারিনার-১ ধ্বংস করে ফেলা হয়। মারাত্মক দুর্ঘটনা থেকে বাঁচা গেলেও ম্যারিনার-১ মিশন ব্যর্থ হলো।

 

শুক্রে অভিযান ৪

মিশন/

মহাকাশযান

দেশ

উৎক্ষেপণের তারিখ

প্রধান লক্ষ্য ও ফলাফল

স্পুটনিক 19 (Sputnik19)

সোভিয়েত ইউনিয়ন

25/08/1962

শুক্র গ্রহের পাশ দিয়ে উড়ে যাওয়া।

উৎক্ষেপণ রকেটের ফাইনাল স্টেজ ব্যর্থ হয়। 

 

স্পুটনিক-১৯ নভোযান ডিজাইন করা হয়েছিল শুক্র গ্রহে অবতরণ করানোর জন্য। ১৯৬২ সালের ২৫ আগস্ট উৎক্ষেপণ করা হয় স্পুটনিক-১৯। পৃথিবীর চারপাশে তিন দিন ঘুরার পরেও শুক্রের কক্ষপথের দিকে যেতে না পেরে আবার পৃথিবীর বায়ুমন্ডলে ঢুকে পড়ে । মিশনটি ব্যর্থ হয়।

 

শুক্রে অভিযান ৫

মিশন/

মহাকাশযান

দেশ

উৎক্ষেপণের তারিখ

প্রধান লক্ষ্য ও ফলাফল

ম্যারিনার 2 (Mariner 2)

আমেরিকা

27/08/1962

শুক্র গ্রহের পাশ দিয়ে উড়ে যাওয়া।

মিশন সফল হয়।

 

 

চিত্র 22: ম্যারিনার-2

 

ম্যারিনার-১ মিশনের ব্যার্থতার এক মাস পর ম্যারিনার-২ উৎক্ষেপণ করা হয়। ম্যারিনার-২ বেশ সাফল্যের সাথে শুক্র গ্রহের পাশ দিয়ে উড়ে যায়। সেখান থেকে শুক্র গ্রহের পরিবেশ, চৌম্বক ক্ষেত্র, চার্জিত কণার উপস্থিতি পরিমাপ করে। পৃথিবী থেকে শুক্রে কাছ দিয়ে যাবার সময় এক গ্রহ থেকে অন্য গ্রহের মধ্যবর্তী মাধ্যমের উপাদানের পরিমাপ করতেও সক্ষম হয়।

          ম্যারিনার-২ নভোযানের উচ্চতা ছিল 3.66 মিটার। দুইটি সোলার প্যানেলের মোট দৈর্ঘ্য 5.05 মিটার, প্রস্থ 76 সেন্টিমিটার। ষড়ভূজ আকৃতির মূল অংশ 1.04 মিটার চওড়া এবং 36 সেন্টিমিটার উঁচু। সব প্রয়োজনীয় বৈজ্ঞানিক যন্ত্রপাতি রাখা ছিল সেই ষড়ভূজ আকৃতির বাক্সে। জ্বালানিসহ ম্যারিনার-২ এর ভর ছিল 202.8 কেজি।

          ১৯৬২ সালের ১৪ ডিসেম্বর ম্যারিনার-২ শুক্রগ্রহের 34,773 কিলোমিটার দূরত্বের মধ্যে পৌঁছাতে সক্ষম হয়। তারপর আবার দূরে চলে যেতে থাকে। ম্যারিনার-২ এর সাথে পৃথিবীর শেষ যোগাযোগ হয়েছিল ১৯৬৩ সালের ৩ জানুয়ারি।

          ম্যারিনার-২ এর পাঠানো তথ্য থেকে বিজ্ঞানীরা জানতে পারেন শুক্র নিজের অক্ষের উপর খুবই আস্তে আস্তে ঘুরে এবং পূর্ব থেকে পশ্চিম দিকে  ঘুরে। শুক্র গ্রহের তাপমাত্রা এবং বায়ুর চাপ অত্যন্ত বেশি। বায়ুমন্ডলে কার্বন-ডাই-অক্সাইডের পরিমাণ অত্যন্ত বেশি। শুক্রের ঘন গ্যাসের মেঘের আস্তরণ প্রায় ৬০ কিলোমিটার পুরু। শুক্রের চৌম্বক ক্ষেত্রের পরিমাণ নগণ্য।

 

শুক্রে অভিযান ৬

মিশন/

মহাকাশযান

দেশ

উৎক্ষেপণের তারিখ

প্রধান লক্ষ্য ও ফলাফল

স্পুটনিক 20 (Sputnik20)

সোভিয়েত ইউনিয়ন

01/09/1962

শুক্র গ্রহের পাশ দিয়ে উড়ে যাওয়া।

উৎক্ষেপণ রকেটের ফাইনাল স্টেজ ব্যর্থ হয়। 

 

সোভিয়েত ইউনিয়নের স্পুটনিক-২০ মিশনের লক্ষ্য ছিল শুক্রগ্রহের ভূমিতে অবতরণ করা। ইতোমধ্যে আমেরিকার ম্যারিনার-২ মিশন সফল হয়েছে। কিন্তু সোভিয়েত ইউনিয়নের আগের তিনটি মিশন ব্যর্থ হয়েছে। ১৯৬২ সালের ১লা সেপ্টেম্বর উৎক্ষিপ্ত হবার পর পৃথিবীর চারপাশে ঘুরার কক্ষপথে পৌঁছেছিল। কিন্তু সেখান থেকে শুক্রের কক্ষপথে ঢুকতে ব্যর্থ হয়। পাঁচ দিন পর পৃথিবীর বায়ুমন্ডলে ফিরে আসার সময় এটা ধ্বংস হয়ে যায়। স্পুটনিক-২০ মিশন ব্যর্থ হয়।

শুক্রে অভিযান ৭

মিশন/

মহাকাশযান

দেশ

উৎক্ষেপণের তারিখ

প্রধান লক্ষ্য ও ফলাফল

স্পুটনিক 21 (Sputnik21)

সোভিয়েত ইউনিয়ন

12/09/1962

শুক্র গ্রহের পাশ দিয়ে উড়ে যাওয়া।

উৎক্ষেপণ রকেটের ৩য় স্টেজে আগুন ধরে যায়। মিশন ব্যর্থ।

 

স্পুটনিক-২১ মিশনের মূল লক্ষ্য ছিল শুক্র গ্রহের পাশ দিয়ে উড়ে যাওয়া। কিন্তু স্পুটনিক-২০ এর মতোই পরিণতি ঘটে স্পুটনিক-২১ এর। উৎক্ষেপণের পর পৃথিবীর কক্ষপথে ঢুকেছিল ঠিকই। কিন্তু সেখান থেকে শুক্রের দিকে রওনা হবার সময় বিস্ফোরিত হয়ে ধ্বংস হয়ে যায় স্পুটনিক-২১। এই মিশনও ব্যর্থ হয়।

 

শুক্রে অভিযান ৮

মিশন/

মহাকাশযান

দেশ

উৎক্ষেপণের তারিখ

প্রধান লক্ষ্য ও ফলাফল

কসমস 21 (Cosmos21)

সোভিয়েত ইউনিয়ন

11/11/1963

ভেনেরা প্রজেক্টের টেস্ট ফ্লাইট

পৃথিবীর কক্ষপথে তিন দিন ছিল

 

পরপর অনেকগুলো মিশন ব্যর্থ হবার পর সোভিয়েত ইউনিয়ন ১৯৬৩ সালের শুরুতে কসমস প্রোগ্রাম শুরু করে। যে নভোযানগুলো পৃথিবীর কক্ষপথের বাইরে যেতে পারতো না তাদের নাম হতো কসমস। কসমস-২১ ছিল শুক্রের মূল মিশন ভেনেরা নভোযানের জন্য সবকিছু ঠিক আছে কি না দেখার মিশন। পৃথিবী থেকে উৎক্ষেপণের পর পৃথিবীর কক্ষপথে তিন দিন ঘুরার পর পৃথিবীর বায়ুমন্ডলে ফিরে আসে কসমস-২১। এই মিশন থেকে শুক্র গ্রহ সম্পর্কে নতুন কিছু জানা যায়নি।

 

শুক্রে অভিযান ৯

মিশন/

মহাকাশযান

দেশ

উৎক্ষেপণের তারিখ

প্রধান লক্ষ্য ও ফলাফল

ভেনেরা 1964A (Venera 1964A)

সোভিয়েত ইউনিয়ন

19/02/1964

শুক্র গ্রহের পাশ দিয়ে উড়ে যাওয়া।

উৎক্ষেপণ চেষ্টা ব্যর্থ হয়

ভেনেরা-1964A মিশনের আওতায় জন্ড (Zond) নভোযান শুক্রগ্রহের পাশ দিয়ে উড়ে যাওয়ার লক্ষ্য নিয়ে উৎক্ষেপণ করা হয় ১৯৬৪ সালের ১৯ ফেব্রুয়ারি। জন্ড নভোযানের উচ্চতা ছিল 3.6 মিটার এবং ব্যাস ছিল 1.1 মিটার। যথারীতি উৎক্ষিপ্ত হবার কিছুক্ষণের মধ্যেই এই নভোযান বিস্ফোরিত হয়ে যায়। মিশন ব্যর্থ হয়।

 

শুক্রে অভিযান ১০

মিশন/

মহাকাশযান

দেশ

উৎক্ষেপণের তারিখ

প্রধান লক্ষ্য ও ফলাফল

ভেনেরা 1964B (Venera 1964B)

সোভিয়েত ইউনিয়ন

01/03/1964

শুক্র গ্রহের পাশ দিয়ে উড়ে যাওয়া।

উৎক্ষেপণ চেষ্টা ব্যর্থ হয়

 

ভেনেরা-1964A মিশন ব্যর্থ হওয়ার কিছুদিন পর একই ধরনের আরেকটি মিশন ভেনেরা-1964B নিয়ে চেষ্টা করা হয়। কিন্তু সেটারও একই পরিণতি হয়। এই ব্যর্থ মিশনগুলো থেকেও বিজ্ঞানীরা অনেক কিছু শিখছিলেন আর রকেট ও মহাকাশ প্রযুক্তির উন্নতি সাধন করছিলেন।

 

শুক্রে অভিযান ১১

মিশন/

মহাকাশযান

দেশ

উৎক্ষেপণের তারিখ

প্রধান লক্ষ্য ও ফলাফল

কসমস 27 (Cosmos27)

সোভিয়েত ইউনিয়ন

27/03/1964

শুক্র গ্রহের পাশ দিয়ে উড়ে যাওয়া

উৎক্ষেপণ রকেটের ফাইনাল স্টেজ ব্যর্থ

 

কসমস-27 মিশনও ছিল কসমস-21 মিশনের মত একটি মিশন যার মূল উদ্দেশ্য ছিল শুক্রের পাশ দিয়ে উড়ে যাওয়া। কিন্তু মহাকাশযানটি পৃথিবীর কক্ষপথ থেকে শুক্রের কক্ষপথের দিকে যেতে ব্যর্থ হয়। এটাও ছিল একটি ব্যর্থ মিশন।

 

পৃথিবী থেকে মহাকাশে স্বয়ংক্রিয় যেসব মহাকাশযান পাঠানো হয় অন্যান্য গ্রহ উপগ্রহের উদ্দেশ্যে সেগুলো এক একটা স্যাটেলাইট।[1]



[1] বিস্তারিত জানার জন্য পড়ো 'সবার জন্য স্যাটেলাইট', প্রদীপ দেব, ২০১৯, তাম্রলিপি, ঢাকা।

Latest Post

Young Scientist Gitanjali Rao

At just twelve years old and in seventh grade, Gitanjali Rao earned the title of America’s Top Young Scientist in 2017 after developing &quo...

Popular Posts