মাসুদ রানা
সিরিজের প্রথম বই – ধ্বংসপাহাড় প্রকাশিত হয়েছিল ১৯৬৬ সালের মে মাসে। কাজী আনোয়ার হোসেন
সম্ভবত খুব একটা নিশ্চিত ছিলেন না এই সিরিজের সাফল্যের ব্যাপারে। তাই সিরিজের প্রথম
কয়েকটি বইতে লেখকের ছদ্মনাম ‘বিদ্যুৎ মিত্র’ ব্যবহার করা হয়েছিল।
পাকিস্তান আমলের
বই। সেই সময় বাংলাদেশের মানুষ পাকিস্তানকে নিজের দেশ হিসেবে অনেক পছন্দ করতো। পাশের
দেশ ভারতের সাথে পাকিস্তানের শত্রুভাবাপন্নতার অনেক কারণ ছিল তখন। তাই মাসুদরানা সিরিজের
প্রথম বইতে ভারতকে বাংলাদেশের সাফল্যের শত্রু হিসেবে দেখানো হয়েছে।
কাহিনি আবর্তিত
হয়েছে কাপ্তাই জলবিদ্যুৎ প্রকল্পের জন্য সদ্যনির্মিত বাঁধকে নিয়ে। পাকিস্তানের কিছু
মানুষ ভারতীয়দের সাহায্য নিয়ে উদ্বোধনের দিনেই
কাপ্তাই বাঁধ ধ্বংস করে দেয়ার প্ল্যান করে। সেই প্ল্যানের কথা ফাঁস হয়ে যায় পাকিস্তান
কাউন্টার ইন্টেলিজেন্স এর ঢাকা অফিসে। তারা মাসুদ রানাকে পাঠায় এই পরিকল্পনা বাঞ্চাল
করতে। সুন্দরী ভারতীয় এজেন্ট সুলতা রায়ের সাথে কাজ করতে গিয়ে যা হয় – প্রেম-ভালোবাসা
ইত্যাদিও হয়ে যায়।
এই বইয়ের সবচেয়ে বড় আকর্ষণ বিজ্ঞানী কবীর চৌধুরি। কাপ্তাই-এর জঙ্গলের মধ্যে তিনি গড়ে তুলেছিলেন বিরাট গবেষণাগার। তাঁর গবেষণার বিষয় ছিল আধুনিক পদার্থবিজ্ঞান। সেই ১৯৬৬ সালেই অ্যান্টি-ম্যাটার, অ্যান্টি-গ্র্যাভিটি, আর সুপারসাউন্ড নিয়ে কাজ করছিলেন তিনি। কিন্তু এত মেধাবী মানুষ – শুধুমাত্র বাঁধের কারণে ল্যাব ডুবে যাচ্ছে বলেই এতটা নৃশংস হয়ে উঠতে পারেন – ভাবা যায় না। কাপ্তাই বাঁধ তৈরি করার সময় অনেকেই ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিলেন, কিন্তু সরকার সবাইকেই যথাযথ ক্ষতিপূরণ দিয়েছিল।
সে যাই হোক – এই সিরিজটি এত বেশি জনপ্রিয় হয়েছে যে ৫৫ বছর
পরেও এখনো এর পাঠকসংখ্যা কমেনি।
যে সময় আমার
অনেক বন্ধু সেবা প্রকাশনীর বই পড়ছিল বুঁদ হয়ে, আমি তখন পড়েছি দস্যু বনহুর। এত বছর পরে
মাসুদ রানা পড়ছি। হাহাহা।
No comments:
Post a Comment