Tuesday 15 June 2021

শংকরের একা একা একাশি

 


'কত অজানারে' যখন প্রকাশিত হয় তখন তার লেখকের বয়স মাত্র একুশ। সীমাহীন দারিদ্র্য আর জীবন-সংগ্রাম করতে করতে সাহিত্যের অঙ্গনে জায়গা করে নিয়েছেন লেখক শংকর। সেই ১৯৫৪-৫৫ সালে বাংলা সাহিত্যের শেয়ার মার্কেট যাঁরা নির্ধারণ করতেন তাঁরা নিদান হেঁকেছিলেন তাঁর জীবনে কিছু হবে না। লেখক হওয়া অবশ্যই নয়। ভাড়া বাড়িতে ইলেকট্রিক বিল দিতে পারেননি বলে লাইন কাটা গিয়েছিল। রাতের পর রাত অন্ধকারে কুপির টিমটিমে আলোতে বসে সাহিত্যের সাধনা করেছেন শংকর। একনিষ্ঠ সাধনার ফলও পেয়েছেন তিনি। তাঁর সবগুলো লেখাই ঈর্ষণীয় পাঠকপ্রিয়তা পেয়েছে। তাঁর প্রত্যেকটি উপন্যাস পুনর্মুদ্রিত হয়েছে কমপক্ষে পঞ্চাশ ষাটবার। সত্যজিৎ রায় তাঁর 'জন অরণ্য' ও 'সীমাবদ্ধ' উপন্যাসকে চলচিত্ররূপ দিয়েছেন। ২০১৫ সালে প্রকাশিত হয়েছে তাঁর লেখক হয়ে ওঠার আত্মজৈবনিক গ্রন্থ "একা একা একাশি"। এই বইতে শংকর ফিরে দেখেছেন তাঁর একাশি বছরের জীবনের নানা দিক। লেখক হয়ে ওঠার জন্য যে ধারাবাহিক সংগ্রাম করতে হয় - তার প্রত্যক্ষ প্রমাণ এই বই। 




শংকর হলেন এমন একজন লেখক - যিনি শক্ত পাথরকেও নরম সুস্বাদু সন্দেশের মত করে পরিবেশন করতে জানেন। আর আশ্চর্য তাঁর পরিমিতিবোধ - যেটা একজন লেখকের অবশ্যই থাকা চাই। 'একা একা একাশি' বিভিন্ন জায়গায় প্রকাশিত অনেক লেখার একটি সমন্বিত রূপ বলে অনেক জায়গায় পুনরাবৃত্তি ঘটেছে একই ঘটনার।




এত দীর্ঘদিনের লেখালেখি শংকরের। জনপ্রিয়তার শীর্ষে থাকা সত্ত্বেও কোন ধরনের সাহিত্য পুরষ্কার পাননি এতদিন। ২০২১ সালে তাঁকে ২০২০ সালের একাডেমি পুরষ্কার দেয়া হয়েছে তাঁর 'একা একা একাশি' বইটির জন্য। অথচ এর চেয়েও আরো কত ভালো ভালো বই তিনি লিখেছেন। 


No comments:

Post a Comment

Latest Post

নিউক্লিয়ার শক্তির আবিষ্কার ও ম্যানহ্যাটন প্রকল্প

  “পারমাণবিক বোমার ভয়ানক বিধ্বংসী ক্ষমতা জানা সত্ত্বেও আপনি কেন বোমা তৈরিতে সহযোগিতা করেছিলেন?” ১৯৫২ সালের সেপ্টেম্বরে জাপানের ‘কাইজো’ ম্য...

Popular Posts