Sunday 15 December 2019

চাঁদের নাম লুনা - ২৮




অ্যাপোলো-১৫

মিশন
অ্যাপোলো-১৫
কমান্ডার
ডেভিড স্কট (David Scott)
কমান্ড মডিউল পাইলট
আলফ্রেড ওয়ারডেন (Alfred Worden)
লুনার মডিউল পাইলট
জেমস ইরউইন (James Irwin)
কমান্ড মডিউলের ডাক নাম
এনডেভার (Endeavor)
লুনার মডিউলের ডাক নাম
ফ্যালকন (Falcon)
উড্ডয়নের তারিখ
২৬/০৭/১৯৭১
চাঁদে নামার তারিখ
৩০/০৭/১৯৭১
প্রত্যাবর্তনের তারিখ
০৭/০৮/১৯৭১
মহাকাশে অতিবাহিত সময়
১২ দিন ৭ ঘন্টা ১১ মিনিট
চাঁদে অবস্থানের সময়
২ দিন ১৮ ঘন্টা ৫৪ মিনিট
মিশনের লক্ষ্য
নিরাপদে নভোচারীদের চাঁদে নামা এবং সেখানে কিছু সময় থেকে নিরাপদে পৃথিবীতে ফিরে আসা। চাঁদে বৈজ্ঞানিক পরীক্ষানিরীক্ষার যন্ত্রপাতি বসানো। চাঁদে ব্যাটারিচালিত গাড়ি নিয়ে যাওয়া।  
ফলাফল
সফল। পৃথিবীর মানুষ চতুর্থবারের মতো চাঁদে পা রাখলো। গাড়ি করে ঘুরলো চাঁদের পিঠে।
চাঁদে নামার স্থান
হ্যাডলি রিল (Hadley Rille)


অ্যাপোলো-১৫ এর তিনজন নভোচারী

অ্যাপোলো-১৫ মিশন ছিল প্রযুক্তি ও বৈজ্ঞানিক অনুসন্ধানের দিক থেকে আগের সব অ্যাপোলো মিশনের চেয়ে  উন্নত। অ্যাপোলো মিশনের লুনার মডিউলে চাঁদের বুকে চালানোর জন্য একটি ব্যাটারিচালিত গাড়ি লুনার রোভিং ভেহিকল (Lunar Roving Vehicle) নিয়ে যাওয়া হয়। এই গাড়ির ওজন ছিল প্রায় ২২৭ কেজি। এর বহনক্ষমতা ছিল প্রায় ৪০০ কেজি। দুজন নভোচারী এবং অন্যান্য যন্ত্রপাতি নিয়ে চাঁদের পিঠে ঘন্টায় প্রায় আঠারো কিলোমিটার বেগে চলতে পারে।
            নভোচারীরা কিছু উন্নত প্রযুক্তির যন্ত্রপাতি সাথে নিয়ে গিয়েছিলেন। দুটো স্যাটেলাইট নিয়ে গিয়েছিলেন চাঁদের কক্ষপথে স্থাপন করার জন্য। সেগুলো সৌরজগতের বিভিন্ন গ্রহের মধ্যে চৌম্বকক্ষেত্র নির্ণয় করবে।
            ১৯৭১ সালের ২৬শে জুলাই পৃথিবী থেকে চাঁদের উদ্দেশ্যে যাত্রা করে ৩০শে জুলাই চাঁদে নামে অ্যাপোলো-১৫'র লুনার মডিউল। চাঁদে নেমে দুই ঘন্টার মধ্যেই কাজ শুরু করে দেন ডেভিড স্কট ও জেমস ইরউইন।
            চাঁদের বুকে গাড়ি চালিয়ে তাঁরা চাঁদের বুকে জরিপ চালান। চাঁদের উৎপত্তির সময় ও ইতিহাস লুকিয়ে আছে চাঁদের পাথরের মধ্যে। স্কট ও ইরউইন চাঁদের পাথর সংগ্রহ করলেন অনেক। তাঁরা খুঁজে পেলেন এমন একটা পাথর যার বয়স হিসেব করে দেখা গেছে সাড়ে চারশ' কোটি বছর যা চাঁদের বয়সের সমান।

চাঁদের পিঠে লুনার রোভিং ভেহিকলের সাথে জেমস ইরউইন

অ্যাপোলো-১৫ চাঁদের যে পাথর ও অন্যান্য ভূ-তাত্ত্বিক নমুনা সংগ্রহ করে আনে তা থেকে চাঁদের জন্ম ও বিবর্তন সম্পর্কে অত্যন্ত দরকারি তথ্য পাওয়া যায়। আমরা জানতে পারি কীভাবে জন্ম হয়েছিল চাঁদের, কীভাবে বিবর্তিত হয়েছে গত সাড়ে চারশো বছর ধরে।
            ফিরে আসার আগে ডেভিড স্কট অভিকর্ষ সম্পর্কিত প্রায় চারশো বছরের পুরনো একটি সহজ পরীক্ষা করে দেখেন চাঁদের ওপর। ১৫৮৯ সালে গ্যালেলিও পৃথিবীতে পরীক্ষা করে দেখিয়েছিলেন যে বাতাসের বাধা না থাকলে সব বস্তুর উপরই পৃথিবীর মাধ্যাকর্ষণের টান সমান। চাঁদে কোন বাতাস নেই। তিনি একটি পালক ও একটি হাতুড়ি একই সাথে হাত থেকে ছেড়ে দিয়ে দেখলেন যে দুটো একই সাথে নেমে এলো চাঁদের মাটিতে।
            সাত আগস্ট  পৃথিবীতে ফিরে এলেন অ্যাপোলো-১৫ এর নভোচারীরা।

No comments:

Post a Comment

Latest Post

Dorothy Crowfoot Hodgkin

  Look closely at the fingers of the person in the picture. Her fingers had not bent in this way due to age; she had been suffering from chr...

Popular Posts