Sunday 15 December 2019

চাঁদের নাম লুনা - ২৫



অ্যাপোলো-১২

মিশন
অ্যাপোলো-১২
কমান্ডার
চার্লস কনরাড (Charles Conrad)
কমান্ড মডিউল পাইলট
রিচার্ড গর্ডন (Richard Gordon)
লুনার মডিউল পাইলট
অ্যালেন বিন (Alan Bean)
কমান্ড মডিউলের ডাক নাম
ইয়াংকি ক্লিপার (Yankee Clipper)
লুনার মডিউলের ডাক নাম
ইনট্রেপিড (Intrepid)
উড্ডয়নের তারিখ
১৪/১১/১৯৬৯
চাঁদে নামার তারিখ
১৯/১১/১৯৬৯
প্রত্যাবর্তনের তারিখ
২৪/১১/১৯৬৯
মহাকাশে অতিবাহিত সময়
১০ দিন ৪ ঘন্টা
চাঁদে অবস্থানের সময়
৩১ ঘন্টা ৩১ মিনিট
মিশনের লক্ষ্য
নিরাপদে নভোচারীদের চাঁদে নামা এবং সেখানে কিছু সময় থেকে নিরাপদে পৃথিবীতে ফিরে আসা। 
ফলাফল
সফল। পৃথিবীর মানুষ দ্বিতীয়বারের মতো চাঁদে পা রাখলো। পিটার কনরাড ও অ্যালেন বিন চাঁদের বুকে হাঁটলেন।
চাঁদে নামার স্থান
সি অব স্টর্মস

অ্যাপোলো-১২ এর তিনজন নভোচারী

অ্যাপোলো-১২ ছিলো মানুষের দ্বিতীয়বার চাঁদে নামার মিশন। ১৯৬৯ সালের ১৪ নভেম্বর উড্ডয়নের ঠিক সাড়ে ছয়ত্রিশ সেকেন্ড পর একটি প্রকান্ড বজ্রপাত আঘাত হানে রকেট স্যাটার্ন-ফাইভের গায়ে। গ্রাউন্ড কন্ট্রোলের সাথে কমান্ড মডিউলের ডাটা ট্রান্সমিশান বন্ধ হয়ে যায়। এই সমস্যার সমাধান না হলে অ্যাপোলো-১২ মিশন পরিত্যক্ত ঘোষণা করতে হবে। হাতে সময় মাত্র কয়েক সেকেন্ড। অনুশীলনের সময় একবার এরকম হয়েছিল। একটা বিশেষ কমান্ড ব্যবহার করে কমিউনিকেশান চালু করা সম্ভব হয়েছিল। এবারেও সেটা প্রয়োগ করা হলো। সমস্যার সমাধান হয়ে গেলো। তারপর নির্বিঘ্নে রকেট পৌঁছে গেলো চাঁদের কক্ষপথে।
            ১৯ নভেম্বর চার্লস কনরাড ও অ্যালেন বিন লুনার মডিউল ইনট্রেপিডে করে চাঁদে নামলেন। অ্যাপোলো-১২ নামার স্থান ছিল চাঁদের সি অব স্টর্মস। সার্ভেয়ার-৩ যেখানে ছিল তার প্রায় ৪০০ মিটার দূরে এই জায়গা। চাঁদের বুকে যা যা মানুষ এতদিন ধরে পাঠিয়েছে সেগুলো যেখানে ছিল সেখানেই আছে। পরে সেগুলোই পথ চেনার কাজে ব্যবহৃত হয়েছে।
            ইনট্রেপিডে পাঁচ ঘন্টা অপেক্ষা করার পর চাঁদে নামলেন চার্লস কনরাড ও অ্যালেন বিন। চাঁদে নিয়ে গিয়েছিলেন কালার টিভি-ক্যামেরা। অ্যালেন বিন টিভি ক্যামেরা ফিট করার সময় সরাসরি সূর্যের দিকে তাক করার পর ভিডিকন নষ্ট হয়ে গেলো। চার্লস কনরাড সেটা ঠিক করার চেষ্টা করলেন হাতুড়ি দিয়ে পিটিয়ে। ঠিক হওয়ার বদলে সেটা একেবারেই নষ্ট হয়ে গেলো। তাদের কাজকর্মের টেলিভিশন সম্প্রচার বন্ধ হয়ে গেলো।
            লুনার মডিউলের বাইরে প্রায় চার ঘন্টা কাটিয়ে তাঁরা চাঁদের চৌম্বক ক্ষেত্র, আবহাওয়া, সৌরঝড় ইত্যাদি মাপার যন্ত্রপাতি ফিট করলেন। তারপর মডিউলের ভেতর ঢুকে বিশ্রাম ঘুম ইত্যাদির পর আবার বের হলেন। পরের তিন ঘন্টা ৪৯ মিনিট তারা সার্ভেয়ার-৩ এর যন্ত্রপাতি সংগ্রহ করলেন। সার্ভেয়ার-৩ চাঁদে পাঠানো হয়েছিল চাঁদে জরিপ চালিয়ে বিভিন্ন তথ্য রেকর্ড করার জন্য। এখন সেই যন্ত্রপাতি পৃথিবীতে নিয়ে এসে উপাত্ত পরীক্ষা করে দেখলে অনেক তথ্য পাওয়া যাবে চাঁদ সম্পর্কে।

 
নভোচারী অ্যালেন বিন চাঁদে নমুনা সংগ্রহ করছেন

লুনার মডিউলে করে কমান্ড মডিউলে ফিরে এসে লুনার মডিউলকে ছেড়ে দেয়া হলো। তারপর কমান্ড মডিউল নিয়ে পৃথিবীতে ফেরা। ২৪ নভেম্বর সাগরে ঠিকমতোই পড়েছিল কমান্ড মডিউল। কিন্তু ভেতরের একটা ক্যামেরা স্থানচ্যুত হয়ে অ্যালেন বিনের মাথায় এমন জোরে আঘাত করলো যে মারাত্মকভাবে কেটে গেলো আলেনের মাথা। ছয়টি সেলাই দিতে হয়েছিল তার মাথায়।

No comments:

Post a Comment

Latest Post

নিউক্লিয়ার শক্তির আবিষ্কার ও ম্যানহ্যাটন প্রকল্প

  “পারমাণবিক বোমার ভয়ানক বিধ্বংসী ক্ষমতা জানা সত্ত্বেও আপনি কেন বোমা তৈরিতে সহযোগিতা করেছিলেন?” ১৯৫২ সালের সেপ্টেম্বরে জাপানের ‘কাইজো’ ম্য...

Popular Posts