Sunday, 15 December 2019

চাঁদের নাম লুনা - ১৩


দূরবীণে চাঁদ

প্রকৃতির অনেক জিনিস আছে যা খালি চোখে স্বাভাবিক দৃষ্টিতেই সুন্দর। আমাদের চাঁদের কথাই ধরা যাক। রূপালী রাতের চাঁদ দেখলেই যেরকম "চাঁদের হাসির বাঁধ ভেঙেছে উছলে পড়ে আলো" বলে মনে হয় - খুব কাছ থেকে দেখলে কি চাঁদকে সেরকম মনে হবে? চাঁদের বুকে কত বড় বড়  গর্ত,  পানিশূন্য বিশাল বিশাল খাল আর জমাট ধুলোর আস্তরণ চারদিকে।
            কিন্তু সৌন্দর্য ব্যাপারটা খুবই আপেক্ষিক। প্রকৃতিকে গভীরভাবে জানার মধ্যেই নিহিত থাকে প্রকৃত সৌন্দর্য। আমাদের আফতাব স্যার মাঝে মাঝে বলেন, "দিস ইজ দি বিউটি অব ফিজিক্স দ্যাট ইট ক্যান এক্সপ্লেইন দি নেচার।" স্যারের ইংরেজি উচ্চারণ শুনলে মনে হয় স্যার ইংরেজি ভাষাকেও চট্টগ্রামের আঞ্চলিক ভাষায় রূপান্তরিত করে ফেলেছেন। সে যাই হোক। স্যার বলতে চেয়েছেন পদার্থবিজ্ঞান প্রকৃতিকে যে ব্যাখ্যা করতে পারে সেখানেই পদার্থবিজ্ঞানের সৌন্দর্য। একই ভাবে বলা যায় চাঁদের সবকিছু জানার মধ্যেই লুকিয়ে আছে চাঁদের প্রকৃত সৌন্দর্য। মানুষ চাঁদের সেই সৌন্দর্য আবিষ্কারের চেষ্টা করছিলো অনেক অনেক বছর আগে থেকে।
            ১৬০৯ সালের আগপর্যন্ত খালি চোখেই চাঁদ দেখতে হয়েছে পৃথিবীর বিজ্ঞানীদের। প্রথম দূরবীণ বা টেলিস্কোপের ধারণা যখন পাওয়া গেলো তখন চাঁদ দেখার ব্যাপারটা আর শুধুমাত্র দেখায় থেমে থাকলো না। শুরু হলো চাঁদ পর্যবেক্ষণ।




           
১৬০৯ সালের ২৬ জুলাই ব্রিটিশ গণিতজ্ঞ টমাস হ্যারিয়ট প্রথম চাঁদ দেখেন টেলিস্কোপের সাহায্যে। তিনি চাঁদের কিছু ম্যাপও তৈরি করেন। কিন্তু ১৬১১ সাল পর্যন্ত তিনি কোন ম্যাপ প্রকাশ করেননি। ফলে অনেকেই জানতে পারেননি যে তিনিই প্রথম দূরবীণ দিয়ে চাঁদ দেখেছিলেন।
            ১৬০৯ সালের শেষের দিকে ইতালিয়ান জ্যোতির্বিজ্ঞানী গ্যালিলিও গ্যালিলি তাঁর নিজস্ব দূরবীণ তাক করলেন চাঁদের দিকে। তিনি অবাক হয়ে দেখলেন চাঁদের বুকে অসংখ্য কালো কালো দাগ। আবার সমতল দাগগুলোর কাছে উজ্জ্বল উঁচু পাহাড়। ১৬১০ সালে তিনি প্রকাশ করলেন চাঁদের ম্যাপ।


No comments:

Post a Comment

Latest Post

Enigmatic quantum theory

  “ ‘There is actually no such thing as a quantum world. The quantum state exists only inside my head, something I use to do calculations. Q...

Popular Posts