Sunday, 15 December 2019

চাঁদের নাম লুনা - ১৯


অ্যাপোলো-১

অ্যাপোলো-১ মিশনের মূল নাম ছিল অ্যাপোলো স্যাটার্ন-২০৪ (SA-204)। অ্যাপোলো মিশনের চন্দ্রযান উৎক্ষেপণের রকেট স্যাটার্ন-ফাইভ এর কার্যক্রম পরীক্ষা করে দেখাই ছিল এই মিশনের উদ্দেশ্য। কমান্ড মডিউল ও সার্ভিস মডিউল যথাযথভাবে পৃথিবীর কক্ষপথে স্থাপন করাই ছিল এই মিশনের লক্ষ্য। মিশনের তিনজন নভোচারী ছিলেন গাস গ্রিসম (Gus Grissom), এড হোয়াইট (Ed White), ও রজার শ্যাফি (Roger Chaffee)।




গাস ছিলেন মিশন কমান্ডার, এড ছিলেন কমান্ড মডিউল পাইলট, এবং রজার ছিলেন লুনার মডিউল পাইলট। উৎক্ষেপণের পরিকল্পনা ছিল ১৯৬৭ সালের ২৭ ফেব্রুয়ারি। কিন্তু ২৭ জানুয়ারি ১৯৬৭ পূর্ণাঙ্গ অনুশীলনের সময় যখন তিনজন নভোচারী কমান্ড মডিউলের ভেতরে ছিলেন তখন উৎক্ষেপণ মঞ্চে আগুন লেগে যায়। সেই আগুন ছড়িয়ে পড়ে বিভিন্ন জায়গায়। কেবিন প্রেসার বেড়ে গিয়ে কমান্ড মডিউলের ভেতর তিনজন নভোচারীই মারা যান।
            এই দুর্ঘটনা থেকে শিক্ষা নিয়ে সবকিছুর ডিজাইন আবার পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে পরীক্ষা করে দেখা হয়। বেশ কিছু রদবদলও করা হয়।
            অন্যান্য মিশনের নভোচারীদের দাবিতে অ্যাপোলো স্যাটার্ন-২০৪ মিশনের নাম বদলে অ্যাপোলো-১ রাখা হয়।


অ্যাপোলো-২ থেকে অ্যাপোলো-৬

অ্যাপোলো-২ থেকে অ্যাপোলো-৬ ছিল যান্ত্রিক মিশন। সেখানে কোন নভোচারী ছিল না। অ্যাপোলো-১ এর দুর্ঘটনার পর সবকিছু আবার পরীক্ষা করে দেখা শুরু হলো।

অ্যাপোলো-২: এই মিশনে মহাশূন্যে ওজনহীন অবস্থায় রকেট ও চন্দ্রযানের জ্বালানি ব্যবস্থার নিরাপত্তা পরীক্ষা করে দেখা হয়।

অ্যাপোলো-৩: এই মিশনে রকেটের কার্যক্রমের দক্ষতা এবং সব মডিউলের সার্বিক তাপনিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা পরীক্ষা করে দেখা হয়।

অ্যাপোলো-৪, ৫, ৬: এই তিনটি মিশনের চন্দ্রযানেও কোন মানুষ ছিল না। রকেট স্যাটার্ন-ফাইভ, কমান্ড মডিউল ও সার্ভিস মডিউল নির্ভুলভাবে কাজ করছে কিনা পরীক্ষা করে দেখার জন্যই এই তিনটি মিশন চালোনো হয়েছিল। অ্যাপোলো-৪ ও অ্যাপোলো-৫ ঠিকমতোই কাজ করেছিল। কিন্তু অ্যাপোলো-৬ মিশনটি সফল হয়নি। তবুও অ্যাপোলো-৪ ও অ্যাপোলো-৫ এর ফলাফল থেকে বিজ্ঞানীরা নিশ্চিত হয়ে গিয়েছিলেন যে যে সবকিছু ঠিকঠাক কাজ করছে।

তারপরের চারটি মিশন ছিল নভোচারীসহ চাঁদের কক্ষপথে এবং পৃথিবীর কক্ষপথে ঘুরে দেখা। চাঁদে নামার সময় যেন কোথাও কোন ভুল না থাকে। কারণ মহাশূন্যে খুব সামান্য ভুলের জন্যও মারাত্মক ক্ষতি হয়ে যেতে পারে। 

No comments:

Post a Comment

Latest Post

কৃত্রিম স্নায়ুতন্ত্র ও যন্ত্রের লেখাপড়া

  মানুষ যখন থেকে বুঝতে পেরেছে যে তাদের মগজে বুদ্ধি আছে এবং বুদ্ধিবৃত্তিক চর্চার মাধ্যমে বুদ্ধির পরিমাণ এবং তীক্ষ্ণতা বাড়ানো যায় – তখন থেকেই ...

Popular Posts