Wednesday 24 June 2020

মেঘনাদ সাহা - পর্ব ২৮



মৃত্যু

অনেক দিন থেকেই উচ্চ রক্তচাপে ভুগছিলেন মেঘনাদ সাহা। শরীরের জন্য বিশ্রামের দরকার হলেও তিনি বিশ্রাম নেননি। জীবনের শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত কাজ করেছেন। ১৯৫৬ সালের ১৬ই ফেব্রুয়ারি দিল্লিতে প্ল্যানিং কমিটির অফিসে যাবার পথে প্ল্যানিং কমিশন চত্বরের সিঁড়ির কাছে হার্ট অ্যাটাকে মারা যান মেঘনাদ সাহা।

          তাঁর মৃত্যুর খবরে সারা দেশে শোকের ছায়া নেমে আসে। মহান বিজ্ঞানী, শিক্ষক, সাংসদ আর বিপ্লবী মেঘনাদ সাহার জীবনাবসান হলো ৬৩ বছর বয়সে।

          মেঘনাদ সাহা লিখেছিলেন, বিজ্ঞানীরা নিজেদের তৈরি আইভরি টাওয়ার বা গজদন্তমিনারে বাস করে। সেখানে পারিপার্শ্বিক দুঃখসুখের কোন স্থান নেই। কিন্তু সাধারণ মানুষের জন্য সরাসরি কাজ করার জন্যই তিনি বিজ্ঞানীদের গজদন্তমিনার থেকে নেমে এসেছিলেন জনগণের রাস্তায়। তাদের সরাসরি ভোটে তাদের প্রতিনিধি হয়ে গিয়েছিলেন সংসদে। জনগণের জন্য কাজ করতে করতেই তিনি জীবন দিয়েছেন।

          মেঘনাদ সাহা তাঁর কর্মময় জীবনে বিজ্ঞান, সমাজ, শিল্পায়ন, শিক্ষাসহ বিভিন্ন বিষয়ে মত দিয়েছেন, যখন যেখানে দরকার গঠনমূলক সমালোচনা করেছেন। তাঁর মৃত্যুর পর তাঁর সবচেয়ে বড় সমালোচকও স্বীকার করেছেন যে মেঘনাদ সাহা তাঁর সাধ্যানুযায়ী জাতির বিবেকের কাজ করেছেন। তিনি প্রিয়ভাষণের চেয়েও সত্যভাষণের প্রতি অঙ্গিকারবদ্ধ ছিলেন। সেই কারণে তিনি হয়ে উঠেছেন চিরঞ্জীব। তিনি বেঁচে আছেন তাঁর কর্মের মধ্য দিয়ে। আমাদের গর্ব এই যে তিনি জন্মেছিলেন আমাদের দেশে। আমরা তাঁর কাজের উত্তরাধিকারী।

 

১৬ ফেব্রুয়ারি ১৯৫৬। সকাল ১১টা। প্ল্যানিং কমিশনের এই সিঁড়িতেই ম্যাসিভ হার্ট অ্যাটাকে মারা যান মেঘনাদ সাহা


শোকার্ত জনতা



শোকার্ত পরিবার


শোকার্ত পরিবার

কলকাতায় ইন্সটিটিউট অব নিউক্লিয়ার ফিজিক্সের সামনে শোকার্ত মানুষের ঢল। মেঘনাদ সাহার নামে এই ইন্সটিটিউটের নামকরণ করা হয় 'সাহা ইন্সটিটিউট অব নিউক্লিয়ার ফিজিক্স'।

পরের পর্ব >>>>>>>>>>>


No comments:

Post a Comment

Latest Post

সংবাদপত্রে বঙ্গবন্ধু - ১৫ আগস্ট ২০২৪

  শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আওয়ামী লীগের শোচনীয় মৃত্যু ঘটেছে ৫ আগস্ট ২০২৪। কীভাবে কী হয়েছে তার নানারকম চুলচেরা বিশ্লেষণ আমরা পাচ্ছি এবং পেতেই থাক...

Popular Posts