Thursday 13 February 2020

বুধ - পর্ব ১৮


মেসেঞ্জার থেকে দেখা বুধ

মেসেঞ্জার বুধের ১০০% জায়গার ছবি তুলে পাঠিয়েছে। ম্যারিনার-১০ নভোযান শুধুমাত্র বুধের ৪৫% জায়গা কভার করতে পেরেছিল। তখন বুধের পুরো ম্যাপ তৈরি করা সম্ভব হয়নি। ম্যাসেঞ্জার থেকে পাঠানো ছবিগুলো থেকে বুধের পুরো ম্যাপ তৈরি করা সম্ভব হয়েছে।
            মেসেঞ্জারের ওয়াইড অ্যাঙ্গেল ক্যামেরা পুরো বুধ গ্রহের ছবি তোলে বিভিন্ন অ্যাঙ্গেল থেকে। রঙের বিন্যাসের মাধ্যমে বুধের পিঠের বিভিন্ন গহ্বর, খাঁজ, খাদ, ভাঁজ সবকিছু দেখা যায় সেখানে। মেসেঞ্জারের পাঠানো ছবিগুলোতে উজ্জ্বল লাল রঙের ভূমিগুলো হলো বুধের মসৃণ অংশ। সাধারণত এগুলোর সুনির্দিষ্ট সীমানা দেখা যায়। হালকা নীল রঙের অংশগুলোও লাল ভূমির মতোই সমতল তবে তাদের উজ্জ্বলতা অনেক কম। ঘন নীল রঙের অংশগুলো হলো বুধের বিশাল গহ্বরের ভেতর সমতল অংশ। ঘন লাল বিন্দুগুলো হলো শত কোটি বছর আগে ঘটা আগ্নেয়গিরি থেকে বিক্ষিপ্ত অংশ।  

 
শূন্য ডিগ্রি পূর্ব কোণের কাছ থেকে ওয়াইড অ্যাঙ্গেল ক্যামেরায় তোলা বুধের গোলক। নিচের দিকের দেখা যাচ্ছে দিবুসি (Debussy) গহ্বর। ফরাসি সুরকার ক্লদ দিবুসির (Claude Debussy) নাম অনুসারে এই ৮১ কিলোমিটার ব্যাসের গহ্বরটির নাম রাখা হয়েছে। দিবুসির উত্তর-পূর্বে ১৭০ কিলোমিটার বিস্তৃত গহ্বর দোরে (Derain)। ফরাসী চিত্রকর অঁদ্রে দোরের (Andre Derain) নাম অনুসারে এই গহ্বরের নাম রাখা হয়েছে।

 
বুধের ৯০ ডিগ্রি পূর্ব থেকে ওয়াইড অ্যাঙ্গেল ক্যামেরায় তোলা বুধের একটি তলের ছবি। উপরের ডানদিকে ক্যারোলিস অববাহিকার (Carolis Basin) কিছু অংশ দেখা যাচ্ছে। বুধের সবচেয়ে বড় অববাহিকা ক্যারোলিসের ব্যাস প্রায় ১৫০০ কিলোমিটার। নিচের দিকের (দক্ষিণ) মাঝামাঝি রেমব্রন্ত অববাহিকা দেখা যাচ্ছে। বিশ্ববিখ্যাত ডাচ শিল্পী রেমব্রন্ত ভন রেনের  (Rembrandt van Rijn) নাম অনুসারে এই অববাহিকার নামকরণ করা হয়েছে।

বুধের ১৮০ ডিগ্রি পূর্ব থেকে ওয়াইড অ্যাঙ্গেল ক্যামেরায় তোলা বুধের ছবি। উপরের অংশের সামান্য বামে ক্যারোলিস অববাহিকা। নিচের দিকে ছোট্ট অববাহিকা টলস্টয়। বিশ্ববিখ্যাত রুশ সাহিত্যিক লিও টলস্টয়ের নাম অনুসারে এই অববাহিকার নামকরণ করা হয়েছে।

বুধের ২৭০ ডিগ্রি পূর্ব কোণ থেকে ওয়াইড অ্যাঙ্গেল ক্যামেরায় তোলা বুধ গ্রহের ছবি।

ম্যারিনার-১০ ও মেসেঞ্জার এই দুটি অভিযান থেকে পাওয়া ছবি ও তথ্য থেকে বুধ গ্রহের বেশির ভাগ ভৌত ধর্ম ও বৈশিষ্ট্য এবং বুধের অভ্যন্তরীণ গঠন সম্পর্কে আমরা বিস্তারিত ধারণা পেয়ে গিয়েছি। এখন দেখা যাক সেগুলো কী কী। 









No comments:

Post a Comment

Latest Post

নিউক্লিয়ার শক্তির আবিষ্কার ও ম্যানহ্যাটন প্রকল্প

  “পারমাণবিক বোমার ভয়ানক বিধ্বংসী ক্ষমতা জানা সত্ত্বেও আপনি কেন বোমা তৈরিতে সহযোগিতা করেছিলেন?” ১৯৫২ সালের সেপ্টেম্বরে জাপানের ‘কাইজো’ ম্য...

Popular Posts