Wednesday 12 February 2020

বুধ - পর্ব ৫


পৃথিবীর আকাশে বুধ

সূর্যের একেবারে কাছের গ্রহ হবার কারণে বুধকে পৃথিবী থেকে দেখা খুব সহজ নয়। পৃথিবী থেকে বুধ ও সূর্যের মধ্যবর্তী কৌণিক দূরত্ব কখনোই ২৮ ডিগ্রির বেশি হয় না। ফলে পৃথিবী থেকে সূর্য ও বুধকে প্রায় একই জায়গায় দেখা যায়। আকাশ থেকে সূর্য যখন অস্তমিত হয় - বুধও তখন আড়ালে চলে যায়। তাই অন্ধকারে বুধকে দেখা যায় না। আবার যখন সূর্য প্রচন্ড আলো দেয় তখনো বুধকে দেখা যায় না সূর্যের আলোর কারণে। পৃথিবী থেকে বুধকে দেখতে পাওয়ার সবচেয়ে ভালো সময় হলো বসন্তকালের সূর্যাস্ত হবার ঠিক পরে পশ্চিমাকাশে অথবা হেমন্তকালে সূর্যোদয়ের সময় পূর্বাকাশে।
            
পৃথিবী থেকে সূর্যের দূরত্ব ১৫০ মিলিয়ন কিলোমিটার অর্থাৎ ১৫ কোটি কিলোমিটার। পৃথিবী থেকে বুধের গড় দূরত্ব ৭৭ মিলিয়ন কিলোমিটার অর্থাৎ সাত কোটি ৭০ লক্ষ কিলোমিটার। গ্রহদের নিজস্ব আলো থাকে না। বুধেরও নেই। বুধের আকার ও আয়তন আমাদের চাঁদের আয়তনের প্রায় সমান। কিন্তু আমরা সহজেই চাঁদ দেখতে পাই - কারণ পৃথিবী থেকে চাঁদের দূরত্ব মাত্র তিন লক্ষ ৮৪ হাজার কিলোমিটার। তাছাড়া চাঁদ বুধের চেয়ে অনেক বেশি আলোর প্রতিফলন ঘটায়। বুধের প্রতিফলকত্ব (reflectivity) হলো ০.০৭ কিন্তু চাঁদের প্রতিফলকত্ব ০.১২। অর্থাৎ চাঁদে সূর্যের আলো পড়লে তার শতকরা ১২ ভাগ প্রতিফলিত হয়। কিন্তু বুধের গায়ে সূর্যের যে আলো পড়ে তার মাত্র শতকরা সাত ভাগ প্রতিফলিত হয়। বুঝতেই পারছো - পৃথিবী থেকে বুধ গ্রহকে কেন সহজে দেখা যায় না। যখন দেখা যায় তখন তাকে ছোট্ট একটা বিন্দুর মত লাগে।
            
তবুও প্রাচীন কাল থেকে বুধ গ্রহকে খেয়াল করে দেখছে পৃথিবীর অনুসন্ধিৎসু মানুষ। ভোরে ও সন্ধ্যায় দেখা যায় বলে বুধকে দুটো আলাদা বস্তু বলে মনে করেছিল প্রাচীন কালের মানুষ। তাই বুধের দুটো আলাদা আলাদা নামও দিয়েছিল তারা।
            
দেখা যাক প্রাচীন কালের মানুষের কী ধারণা ছিল বুধ সম্পর্কে। 

No comments:

Post a Comment

Latest Post

নিউক্লিয়ার শক্তির আবিষ্কার ও ম্যানহ্যাটন প্রকল্প

  “পারমাণবিক বোমার ভয়ানক বিধ্বংসী ক্ষমতা জানা সত্ত্বেও আপনি কেন বোমা তৈরিতে সহযোগিতা করেছিলেন?” ১৯৫২ সালের সেপ্টেম্বরে জাপানের ‘কাইজো’ ম্য...

Popular Posts