Saturday 9 October 2021

নোবেল পুরষ্কার ২০২১ - শান্তি

 

মারিয়া রেসা


দিমিত্রি মুরাতভ


#নোবেল_পুরষ্কার_২০২১_শান্তি

২০২১ সালের শান্তিতে নোবেল পুরষ্কার পেয়েছেন ফিলিপাইনি বংশোদ্ভূত আমেরিকান সাংবাদিক মারিয়া রেসা এবং রাশিয়ান সাংবাদিক দিমিত্রি মুরাতভ।

মত প্রকাশের স্বাধীনতায় অবদান রাখার জন্য এই দুই সাহসী সাংবাদিককে এবার নোবেল শান্তি পুরষ্কার দেয়া হয়েছে। বর্তমান পৃথিবীতে মত প্রকাশের অসংখ্য মাধ্যম আছে সেটা ঠিক। কিন্তু স্বাধীনভাবে মত প্রকাশের, আমার যা মনে হচ্ছে তা প্রকাশের কোন সুযোগ সেভাবে কোথাও নেই। এই নোবেলজয়ী সাংবাদিকরা তাঁদের নিজ নিজ ক্ষেত্র থেকে সংগ্রাম করছেন মত প্রকাশের স্বাধীনতার জন্য।

মারিয়া অ্যাঞ্জেলিটা রেসার জন্ম ১৯৬৩ সালের ২ অক্টোবর ফিলিপাইনের ম্যানিলায়। তাঁর বয়স যখন এক বছর তখন তার বাবা মারা যান। এক বছর বয়সী মারিয়াকে ম্যানিলায় রেখে তার মা আমেরিকায় চলে যান। মারিয়াকে তার মায়ের মা-বাবা লালন-পালন করতে থাকেন। মারিয়ার মা আমেরিকায় গিয়ে একজন ইতালিয়ান-আমেরিকানকে বিয়ে করেন। মারিয়ার বয়স যখন দশ, তখন তাকে আমেরিকায় নিয়ে যান তার মা এবং সৎ-বাবা। মারিয়া প্রিন্সটন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইংরেজি সাহিত্যে বিএ ডিগ্রি অর্জন করেন। এরপর পলিটিক্যাল থিয়েটারে উচ্চতর ডিগ্রি নেন ফিলিপাইনের ইউনিভার্সিটি অব ফিলিপাইনস ডিলিমান থেকে। সাংবাদিক হিসেবে তাঁর কর্মজীবনের শুরু হয় ১৯৮৭ থেকে। দুই দশকের বেশি সময় ধরে তিনি সিএনএন এর সিনিয়র সাংবাদিক হিসেবে কাজ করছেন। গত বছর ফিলিপাইনের সরকারের বিরুদ্ধে সংবাদ প্রচারের কারণে মারিয়াকে সাইবার-ক্রাইম আইনের আওতায় জেলও খাটতে হয়েছে। বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ প্রকাশ এবং মত প্রকাশের স্বাধীনতার ব্যাপারে মারিয়া রেসার  আপোষহীন ভূমিকার কারণে ২০১৮ সালে তিনি টাইম ম্যাগাজিনের পারসন অব দ্য ইয়ার মনোনীত হয়েছিলেন।

দিমিত্রি মুরাতভের জন্ম ১৯৬১ সালের ৩০ অক্টোবর তৎকালীন সোভিয়েত ইউনিয়নে। তিনি লোমোনসভ মস্কো স্টেট ইউনিভার্সিটিতে ভাষাতত্ত্ব বিষয়ে পড়াশোনা করেছেন পাঁচ বছর। তারপর দুই বছর বাধ্যতামূলক রেড আর্মির মিলিটারি সার্ভিস শেষ করে সাংবাদিকতায় যোগ দেন ১৯৮৭ সালে। তখন থেকেই তিনি মত প্রকাশের স্বাধীনতার পক্ষে কাজ করে যাচ্ছেন। সোভিয়েত ইউনিয়নের প্রাভদা পত্রিকায় তাঁর সাংবাদিকতার শুরু। প্রাভদা কমিউনিস্ট পার্টি নিয়ন্ত্রিত পেপার ছিল। সেখানে পার্টির মতের বাইরে অন্য কোন মত প্রকাশের স্বাধীনতা ছিল না। ১৯৯৩ সালে তিনি আলাদা পত্রিকা বের করেন – নভায়া গেজেটা। সোভিয়েত ইউনিয়ন ভেঙে দেয়ার পুরষ্কার স্বরূপ মিখাইল গর্বাচেভ যে নোবেল শান্তি পুরষ্কার পেয়েছিলেন সেই টাকা দিয়ে গর্বাচেভ এই পত্রিকা প্রকাশে সাহায্য করেন। পরে রাশিয়ার একনায়কতন্ত্রের বিরুদ্ধে দিমিত্রি মুরাতভের পত্রিকাই ছিল একমাত্র পত্রিকা যেটা রাশিয়ায় স্বাধীন মত প্রকাশের পক্ষে ক্রমাগত সংগ্রাম করেছে। 


No comments:

Post a Comment

Latest Post

নিউক্লিয়ার শক্তির আবিষ্কার ও ম্যানহ্যাটন প্রকল্প

  “পারমাণবিক বোমার ভয়ানক বিধ্বংসী ক্ষমতা জানা সত্ত্বেও আপনি কেন বোমা তৈরিতে সহযোগিতা করেছিলেন?” ১৯৫২ সালের সেপ্টেম্বরে জাপানের ‘কাইজো’ ম্য...

Popular Posts