Wednesday 19 May 2021

সাহা সমীকরণ

 



জ্যোতিঃপদার্থবিজ্ঞানের (astrophysics) দশটি গুরুত্বপূর্ণ আবিষ্কারের যদি একটি তালিকা তৈরি করা হয়, সেই তালিকায় স্থান পাবে বিজ্ঞানী মেঘনাদ সাহার তাপীয় আয়নন তত্ত্ব (Thermal ionization theory)। নোবেলবিজয়ী জ্যোতির্পদার্থবিজ্ঞানী (astrophysicist) স্যার আর্থার এডিংটন নিজে এই স্বীকৃতি দিয়ে গেছেন। নরওয়ের প্রথিতযশা জ্যোতিঃপদার্থবিজ্ঞানী সেভিন রোজল্যান্ড অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটি থেকে প্রকাশিত তাঁর বিখ্যাত “থিওরেটিক্যাল অ্যাস্ট্রোফিজিক্স” বইতে স্পষ্টভাবে উল্লেখ করেছেন ১৯২০ সালে মেঘনাদ সাহার তাপীয় আয়ননের সমীকরণ (ionization equation) প্রকাশিত হবার পর থেকে ১৯৩৮ সাল পর্যন্ত জ্যোতিঃপদার্থবিজ্ঞানে যত গবেষণা হয়েছে তাদের প্রায় সবগুলোই সাহার সমীকরণ দ্বারা প্রভাবিত। অ্যাস্ট্রোফিজিক্সের গবেষণায় আলোড়নসৃষ্টিকারী এই Saha Equation of Thermal Ionization প্রথম প্রকাশিত হয় ১৯২০ সালে। মেঘনাদ সাহা তখন কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের সদ্য প্রতিষ্ঠিত সায়েন্স কলেজের তরুণ লেকচারার।  আমাদের সবচেয়ে কাছের নক্ষত্র - সূর্যের বর্ণালীরেখা (spectral line) বিশ্লেষণ করে এই সূত্র প্রতিষ্ঠা করেছেন তিনি। 


কিন্তু কী আছে এই সমীকরণে? কেন এই সমীকরণ এত গুরুত্বপূর্ণ? এক বাক্যে বলতে হলে বলা যায় এই সমীকরণের মাধ্যমে সূর্য এবং অন্যান্য নক্ষত্রের কেন্দ্রে আয়নন বা আয়নাইজেশান কীভাবে ঘটে তার সঠিক বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা দেয়া যায়। প্রাচীন কাল থেকেই মানুষ সূর্যের আলোতে সূর্যকে দেখছে। সূর্য ও অন্যান্য নক্ষত্রগুলোর শক্তির উৎস সম্পর্কে কৌতূহলী হয়েছে, কিন্তু তখনো পর্যন্ত খুব বেশি কিছু জানতে পারেনি। স্যার আইজাক নিউটন যখন সূর্যের আলোর বর্ণালী আবিষ্কার করলেন তখন থেকেই শুরু হয়েছে বর্ণালীবীক্ষণের মাধ্যমে আলোকের ধর্ম বিশ্লেষণ। উনবিংশ শতাব্দীতে জার্মান বিজ্ঞানী জোসেফ ফ্রনহফার আরো নিবিড়ভাবে বর্ণালী পর্যবেক্ষণ করে দেখলেন যে উজ্জ্বল সমান্তরাল আলোক-রেখাগুলোর মাঝখানে সূক্ষ্ম কালো কালো রেখা এক আলোক-রেখাকে অন্য আলোক-রেখা থেকে আলাদা করে রেখেছে। এই কালো রেখাগুলোকে ফ্রনহফার লাইন বলা হয়। আলোর বর্ণালী আলোর উৎসের উপাদানগুলোর ধর্মের উপর নির্ভরশীল। তার মানে আলোর বর্ণালী পরীক্ষা করে পদার্থের ধর্ম জানা সম্ভব। আমরা spectrometre ব্যবহার করে spectral analysis-এর মাধ্যমে বস্তুর রাসায়নিক ধর্ম ইত্যাদি সব নির্ণয় করতে পারি। বিজ্ঞানীরা সূর্য ও অন্যান্য নক্ষত্রের বর্ণালীর ছবি (spectrograph) তুলে রাখতে শুরু করলেন পরে বিশ্লেষণ করে দেখার জন্য। এভাবে অনেক তথ্য জমা হতে লাগলো পৃথিবীর বিভিন্ন গবেষণাগারে। ১৮৬৪ সালে বিজ্ঞানী হিগিন্স ও মিলার  সূর্যসহ পঞ্চাশটি উজ্জ্বল নক্ষত্রের বর্ণালী পরীক্ষা করেন এবং সিদ্ধান্তে আসেন যে সবগুলো নক্ষত্রের রাসায়নিক উপাদান সূর্যের উপাদানের মতো একই রকমের। তার মানে মহাবিশ্বের সবগুলো নক্ষত্র রাসায়নিকভাবে এক। আমেরিকান জ্যোতির্বিজ্ঞানী হেনরি ড্র্যাপার হার্ভার্ড ইউনিভার্সিটির মাউন্ট উইলসন অবজারভেটরিতে কাজ করছিলেন এবং বিপুল সংখ্যক নক্ষত্রের বর্ণালীচিত্র সংগ্রহ করেন। এই বিপুল পরিমাণ ডাটার সামান্য কিছু অংশ বিশ্লেষণ করতে সক্ষম হয়েছিলেন বিজ্ঞানীরা। সেখান থেকে কিছু সাদৃশ্য আবিষ্কার করে নক্ষত্রগুলোর শ্রেণিবিভাগ করার চেষ্টা করেন বিজ্ঞানীরা। ১৯২০ সালের মধ্যে জ্যোতির্বিজ্ঞানীদের মধ্যে 'হার্ভার্ড ক্লাসিফিকেশান' গ্রহণযোগ্য তথ্যকেন্দ্র হিসেবে প্রতিষ্ঠা পায়।  
এমএসসি ক্লাসে থার্মোডায়নামিক্স ও স্পেকট্রোস্কোপি পড়ানোর সময় থেকেই থার্মাল আয়নাইজেশান বা তাপীয় আয়ননের ধারণা দানা বাঁধতে থাকে মেঘনাদ সাহার মনে। জার্মান বিজ্ঞান সাময়িকীর নিয়মিত পাঠক হিসেবে তিনি জানতেন এ সংক্রান্ত কী কী গবেষণা চলছে। ১৮৬৮ সালের দিকে সূর্যের বর্ণমন্ডল বা ক্রোমোস্ফিয়ারের বর্ণালী পর্যবেক্ষণ করেছিলেন ব্রিটিশ বিজ্ঞানী লকিয়ের। তারপর বিজ্ঞানী ফাউলার, মিশেল এবং আরো অনেকে সূর্যগ্রহণের সময় ক্রোমোস্ফিয়ারের পর্যায়ক্রমিক ছবি তুলে পর্যবেক্ষণ করে দেখেছেন যে সূর্যের বায়ুমন্ডলে হালকা পরমাণু হাইড্রোজেন, হিলিয়াম ও সোডিয়ামের চেয়ে ভারী পরমাণু ক্যালসিয়ামের বর্ণালী রেখার পরিমাণ বেশি। কিন্তু পদার্থবিজ্ঞানের সাধারণ নিয়ম অনুযায়ী এরকম তো হবার কথা নয়। 

১৯১৭ সালে মেঘনাদ সাহা যখন এ সংক্রান্ত গবেষণা শুরু করেন তখন পর্যন্ত বিজ্ঞানীরা সূর্যের বর্ণালী বিশ্লেষণ করে যা পেয়েছিলেন তা সংক্ষেপে এরকম: (১) সূর্যের ক্রোমোস্ফিয়ারের উপরের দিকের বর্ণালী-রেখাগুলোর উজ্জ্বলতা বেশি, (২) পৃথিবীতে অবস্থিত অনেক মৌলিক পদার্থ সূর্যের ক্রোমোস্ফিয়ারের বর্ণালীতে দেখা যায় না, (৩) বর্ণালীতে হিলিয়াম আছে - কিন্তু প্রচলিত নিয়মে মনে হচ্ছে ভুল জায়গায় আছে, (৪) ক্যালসিয়াম হাইড্রোজেনের চেয়ে ভারী হওয়া সত্ত্বেও ক্রোমোস্ফিয়ারে ক্যালসিয়ামের উপস্থিতি হাইড্রোজেনের চেয়ে বেশি দেখা যায়। 

বিজ্ঞানীরা সমস্যায় পড়ে গেলেন। এত বিপুল পরিমাণ উপাত্ত হাতের কাছে থাকা সত্ত্বেও শুধুমাত্র তত্ত্বের অভাবে বোঝা যাচ্ছে না সূর্যে আসলে কী ঘটনা ঘটছে। সূর্যের ভেতর আসলে কী হচ্ছে জানতে পারলে অন্যসব নক্ষত্র সম্পর্কেও জানা হয়ে যেতো। যদি উচ্চ-তাপমাত্রা উজ্জ্বলতার সমানুপাতিক হয় তাহলে সূর্যের ক্রোমোস্ফিয়ারের বাইরের দিকের তাপমাত্রা ভেতরের দিকের ফটোস্ফিয়ারের তাপমাত্রার চেয়ে বেশি হওয়ার কথা। সেই হিসেবে সূর্যের কেন্দ্র থেকে যত দূরে যাবে তাপমাত্রা তত বেশি হবে। তাহলে তো পৃথিবীর তাপমাত্রা সূর্যের চেয়ে বেশি হবার কথা। কিন্তু তা মেনে নেয়া যায় না। তাহলে কারণটা তাপমাত্রা নয়, অন্যকিছু। অনেক হিসাব নিকাশ ও গবেষণার পর মেঘনাদ সাহা তত্ত্ব দিলেন যে তাপের ফলে আয়নন ঘটে। ফলে পরমাণু থেকে ইলেকট্রন বের হয়ে যায় এবং যেখানে অনেক বেশি আয়নন ঘটে সেখানে বর্ণালীরেখা অনেক বেশি উত্তেজিত এবং উজ্জ্বল দেখায়। 
ছোটবেলা থেকেই জ্যোতির্বিজ্ঞান ছিল মেঘনাদের প্রিয় বিষয়। হাতের কাছে বৈজ্ঞানিক কল্পকাহিনি ও জনপ্রিয় বিজ্ঞানের বই যা পেতেন তার সবই পড়ে ফেলতেন মেঘনাদ। সেরকম একটা বই ছিল অ্যাগনিস ক্লার্কের 'পপুলার হিস্ট্রি অব অ্যাস্ট্রোনমি'। বইতে লেখক কিছুটা কল্পনার আশ্রয় নিয়ে সূর্যের বায়ুমন্ডলের বর্ণনায় বলেছেন সেখানে কিছু বল কাজ করে যা শুধু কিছু নির্দিষ্ট পরমাণুর উপর কাজ করে, কিন্তু অন্য পরমাণুর উপর কাজ করে না। যেমন ক্যালসিয়ামের উপর কাজ করে ক্যালসিয়ামকে টেনে তোলে, কিন্তু হাইড্রোজেনের প্রতি কোন আকর্ষণই দেখায় না। মেঘনাদ ভাবলেন এরকম ব্যাপার যদি আসলেই ঘটে থাকে তার পেছনে যুক্তিগ্রাহ্য বৈজ্ঞানিক কারণ অবশ্যই থাকবে। এ কথা মাথায় রেখে তিনি তাঁর গবেষণাপত্র On the selective radiation pressure-এ আলোর কোয়ান্টাম তত্ত্বের ভিত্তিতে দেখিয়েছেন আলোর বিকিরণের চাপ কীভাবে শুধু কিছু নির্দিষ্ট পরমাণুর ক্ষেত্রে কাজ করে। 

১৯১৭ সালের শেষের দিকে ‘সিলেকটিভ রেডিয়েশান প্রেসার’ শিরোনামে বেশ বড় গবেষণাপত্র অ্যাস্ট্রোফিজিক্যাল জার্নালে প্রকাশের জন্য পাঠিয়েছিলেন মেঘনাদ সাহা। কিন্তু জার্নালের সম্পাদক জানালেন গবেষণাপত্রটি প্রকাশের পক্ষে বড় দীর্ঘ হয়ে গেছে। তবে প্রকাশ করা যেতে পারে একটি শর্তে। প্রকাশনার খরচ যদি মেঘনাদ সাহা দিতে পারেন তবে। সেই ১৯১৭ সালে মেঘনাদের পক্ষে শতাধিক ডলার দেয়া কোনভাবেই সম্ভব ছিল না। বিশ্ববিদ্যালয়ে গবেষণা খাতে কোন টাকা বরাদ্দ নেই। সাহা যা বেতন পান তা দিয়ে মা-বাবাকে সাহায্য করা ছাড়াও ছোট-ভাইয়ের যাবতীয় খরচও সামলাতে হতো। অ্যাস্ট্রোফিজিক্যাল জার্নালের সম্পাদককে জানালেন টাকা দিতে না পারার কথা। তারপর সম্পাদকের কাছ থেকে আর কিছুই জানা যায়নি। পেপারটিও তিনি ফেরৎ পাননি। মূল পেপারটির অনেকদিন কোন খবর না পেয়ে পেপারের অনুলিপিটি কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞান সাময়িকীতে প্রকাশের জন্য পাঠিয়েছিলেন।  সেখান থেকে ‘অন সিলেকটিভ রেডিয়েশান প্রেসার অ্যান্ড প্রোবলেম অব সোলার   অ্যাটমোস্ফিয়ার’ শিরোনামে গবেষণাপত্রটি প্রকাশিত হয় ১৯২০ সালে। স্বাভাবিকভাবেই কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের অভ্যন্তরীণ জার্নালের খবর সবার কাছে পৌঁছায় না। ফলে বিকিরণের চাপ সংক্রান্ত মেঘনাদ সাহার মৌলিক গবেষণার কথা প্রায় অজানাই রয়ে গেলো বেশ কয়েক বছর। 
 
নক্ষত্র-বর্ণালীর এসব ধারণা ও গ্রাউন্ড ওয়ার্ক থেকে সাহার তাপীয় আয়ননের সূত্র বা থার্মাল আয়নাইজেশান থিওরি প্রতিষ্ঠিত হয়। এ সময় স্যার আর্থার এডিংটন নক্ষত্রের অভ্যন্তরীণ গঠন সম্পর্কে তত্ত্বের ভিত্তি তৈরি করছিলেন। এডিংটন ধারণা দিলেন যে নক্ষত্রের কেন্দ্রের উচ্চ তাপমাত্রার ফলে সেখানকার পরমাণুগুলোর বেশিরভাগ ইলেকট্রনস্বল্পতায় ভুগবে। অর্থাৎ সেসব পরমাণু থেকে ইলেকট্রন বের হয়ে যাবে। কিন্তু কীভাবে? তখনো কারো কাছে কোন উত্তর ছিল না। পোস্টড্যাম অ্যাস্ট্রোফিজিক্যাল ল্যাবোরেটরির বিজ্ঞানী কহলশুটার (Kohlschutter) এডিংটনের তত্ত্বের একটা বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা দেয়ার চেষ্টা করলেন বার্লিনের একটি সেমিনারে। বার্লিনের বিখ্যাত পদার্থবিজ্ঞানী নার্নস্টের তরুণ সহকারী জন এগার্ট (John Eggert) এতে উদ্বুদ্ধ হয়ে সূর্যের কেন্দ্রে রাসায়নিক বিক্রিয়ার ফলে উদ্ভূত আয়নাইজেশান এনার্জির একটা ব্যাখ্যা দাঁড় করালেন। মেঘনাদ সাহা এগার্টের পেপারটি মনযোগ দিয়ে পড়লেন। তিনি দেখলেন যে এগার্ট পরমাণুর আয়নাইজেশান এনার্জির কিছু ধারণাগত মান ব্যবহার করেছেন। অথচ এটার দরকার ছিল না। এই আয়নাইজেশান এনার্জির সঠিক মান বর্ণালী-বিশ্লেষণ করে হিসেব করা যায়, অথবা ফ্রাঙ্ক ও হার্টজের আয়নাইজেশান পটেনশিয়েল এক্সপেরিমেন্ট থেকে বের করা যায়। কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের থার্মোডায়নামিক্স পড়ানোর জন্য নিজে নিজে পড়ে তাপগতির যে জ্ঞান অর্জন করেছিলেন তা কাজে লেগে গেলো। মেঘনাদ সাহার থার্মাল আয়নাইজেশান থিওরির ভিত্তি স্থাপিত হলো এখান থেকে। 
মেঘনাদ সাহা ব্যাখ্যা করলেন কীভাবে সূর্যের কেন্দ্রে উচ্চ তাপের কারণে থার্মাল আয়নাইজেশান ঘটে। ফলে বর্ণালী রেখায় যা সাধারণ পদার্থবিজ্ঞানের ধারণায় দেখার কথা তার বদলে অন্য কিছু দেখা যায়। সাহা আয়নাইজেশান পটেনশিয়েল সঠিক ভাবে হিসেব করলেন, যেখান থেকে যেকোনো তাপে ও চাপে যেকোনো পরমাণুর আয়নাইজেশান বা আয়নন সঠিকভাবে নির্ণয় করা যাবে।

একটি সাধারণ আয়নন সমীকরণ যদি এরকম হয়:



১৯১৯ সালের মার্চ থেকে সেপ্টেম্বরের মধ্যে পরপর চারটি গবেষণাপত্র রচনা করে ফিলসফিক্যাল ম্যাগাজিনে প্রকাশের জন্য পাঠালেন মেঘনাদ সাহা। ১৯২০ সালে গবেষণাপত্রগুলো ফিলসফিক্যাল ম্যাগাজিনে প্রকাশিত হয়। তাঁর “আয়নাইজেশান ইন দি সোলার ক্রোমোস্ফিয়ার” গবেষণাপত্রে বর্ণিত হয় তাঁর বিখ্যাত তাপীয় আয়ননের সমীকরণ যা ‘সাহা থার্মাল আয়নাইজেশান ফর্মূলা’ নামে পরিচিতি লাভ করে। ১৯২১ সালে নেচার সাময়িকীতে সাহার এ সংক্রান্ত আরেকটি পেপার “দি স্টেশনারি এইচ অ্যান্ড কে লাইন্‌স অব ক্যালসিয়াম ইন স্টেলার  অ্যাটমোস্ফিয়ার ” প্রকাশিত হলে তা অনেকেরই চোখে পড়ে এবং সেখান থেকে অনেক বিজ্ঞানী নতুন ধারণা হিসেবে গবেষণাপত্র প্রকাশ করেন - যা এক বছর আগে মেঘনাদ প্রকাশ করেছিলেন কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের জার্নালে। 

মেঘনাদ সাহার আয়ননের সমীকরণ দ্বারা সূর্যসহ অন্যান্য সব নক্ষত্রের আয়ননের কারণ সঠিকভাবে ব্যাখ্যা করা যায়। সূর্যের ক্রোমোস্ফিয়ারের উপরের দিকে বিকিরণের চাপ কম এবং সেখানেই আয়নন ঘটে সবচেয়ে বেশি। আর কেন্দ্রের দিকে বিকিরণের চাপ বেশি থাকে। সেখানে আয়নন ঘটতে পারে না কেন্দ্রের চাপের ফলে। কোন্‌ পরমাণুর আয়নন কী পরিমাণে ঘটবে তা নির্ভর করে পরমাণুর আয়নাইজেশান পটেনশিয়েলের ওপর। এই পটেনশিয়েল এবং তাপমাত্রার তারতম্যের কারণে নক্ষত্রের বিভিন্ন অংশে বিভিন্ন মৌলের অস্তিত্ব পাওয়া যায়।

তথ্যসূত্র:
মেঘনাদ সাহা: বিপ্লবী পদার্থবিজ্ঞানী - প্রদীপ দেব (২০১৮), নেচার সাময়িকী (১৯২১), ফিলোসফিক্যাল ম্যাগাজিন (১৯২০)। 
________________________

বিজ্ঞানচিন্তা নভেম্বর ২০১৮ সংখ্যায় প্রকাশিত। 





No comments:

Post a Comment

Latest Post

Dorothy Crowfoot Hodgkin

  Look closely at the fingers of the person in the picture. Her fingers had not bent in this way due to age; she had been suffering from chr...

Popular Posts