Friday 14 August 2020

ছিন্ন পাতার সাজাই তরণী - পর্ব ৪৩

 

43

When you sit with a pretty girl for two hours you think its only a minute, but when you sit on a hot stove for a minute you think its two hours. Thats relativity.

আলবার্ট আইনস্টাইন যখন থিওরি অব রিলেটিভিটি আবিষ্কার করছিলেন, তখন একবারও কি ভেবেছিলেন যে একদিন তাঁর তত্ত্বের এরকম তুলনামূলক ব্যাখ্যা দিতে হবে? প্রচণ্ড জটিল গাণিতিক তত্ত্বটির ব্যাখ্যা তিনি এমনভাবে দিয়েছেন যেন কত সহজ ব্যাপারটা - কোন সুন্দরী মেয়ের সান্নিধ্যে দুই ঘন্টা সময় কাটালেও মনে হবে এক মিনিটের মতো, আর গরম চুলার উপর বসলে এক মিনিটকেও মনে হবে দুই ঘন্টার মতো। কিন্তু সুন্দরী মেয়ের সান্নিধ্য লাভ করা যে গরম চুল্লিতে বসার চেয়েও কঠিন কাজ – তা আইনস্টাইনকে কে বোঝাবে? তিনি তো নোবেল পুরষ্কার পাবার পর পৃথিবীবিখ্যাত হয়ে এই ব্যাখ্যাটি দিয়েছেন। তাঁর খ্যাতির কারণে অনেক সুন্দরীই তাঁর প্রতি আকৃষ্ট হয়েছেন। কিন্তু সবাই তো আইনস্টাইন নন। সবাই আইনস্টাইন না হলেও রিলেটিভিটি থিওরির এই ব্যাখ্যাটা যে শোনে – সে-ই ভাবে এ তো সবাই জানে, এ আর নতুন কী! আমি শিওর আইনস্টাইনের থিওরি অব রিলেটিভিটির এই ব্যাখ্যা যদি এখন আমার সামনে দাঁড়ানো পিয়ন আবুল হোসেনকেও দিই – তিনিও তাঁর পান খাওয়া লাল দাঁত বের করে হাসতে হাসতে বলবেন, ‘টিক বলেচেন ছার’।

পিয়ন আবুল হোসেন রুমে ঢুকেছেন একটু আগে। ভারপ্রাপ্ত প্রিন্সিপাল ম্যাডাম কলিং বেল টিপে ডেকে এনেছেন তাকে। এই কলিং-বেলটার শব্দও কর্কশ। সম্ভবত শাহীন কলেজের পরিচালনা পরিষদের নীতিমালায় আছে -  প্রিন্সিপালের রুমের কলিং-বেলের শব্দ কর্কশ হতে হবে। নতুন বিল্ডিং-এ প্রিন্সিপালের রুম কিছুটা আধুনিক হয়েছে, কিন্তু আয়তনে ছোট হয়ে গেছে। তবে কলিং-বেলের শব্দ সেই রকমই কর্কশ আছে। শুনেছি শিশুদের কান্না আর কলিং-বেলের শব্দ যত কর্কশ হয় ততই ভালো। কারণ কান্না যদি মধুর হয় – সবাই সেই কান্না শুনতে চাইবে – কান্নার কারণ খোঁজার কথা ভুলে যাবে। কলিং-বেলের শব্দ যত কর্কশ হবে তত দ্রুত সাড়া পাওয়া যাবে। সাড়া যে দ্রুত পাওয়া যায় – তা চোখের সামনেই দেখতে পাচ্ছি। বেল টেপার সাথে সাথেই আবুল হোসেন রুমে ঢুকেছেন। ভারপ্রাপ্ত প্রিন্সিপাল ম্যাডাম বললেন, “আবুল হোসেন, নাসরীন ম্যাডামকে ডেকে আনো।“

“জ্বি ম্যাডাম”

আবুল হোসেনের পদযুগল এত ধীরে সঞ্চালিত হয় যে মাত্র দুই মিটার প্রস্থের রুম থেকে প্রস্থান করতে তাঁর প্রায় মিনিট খানেক লাগলো। এই গতিতে চললে ম্যাডামদের অফিসরুমে গিয়ে নাসরীন ম্যাডামকে ডেকে নিয়ে আসতে আরো দশ পনের মিনিট লেগে যাবে। রিলেটিভিটির কারণে এমনিতেই মনে হচ্ছে সময় থমকে আছে এই রুমে। দেয়ালে লাগানো বড় চৌকোণা কোয়ার্টজ ঘড়িটা যদিও টিক টিক শব্দ করে জানান দিচ্ছে যে সময় চলমান, কিন্তু আর কোনভাবে তা প্রতীয়মান হচ্ছে না। এই রুমে ঢুকেছি মিনিট পাঁচেক হলো, অথচ মনে হচ্ছে পাঁচ ঘন্টা।

পুরনো ভবন থেকে ফিরেছি একটু আগে। ক্লাস শেষ করে রিকশার জন্য অপেক্ষা করতে করতেই টিফিন আওয়ার শেষ হয়ে গেলো। এ বিল্ডিং-এ এসে রিকশা থেকে নামতেই পিয়ন ইদ্রিস জানালেন, ‘ভাইস-প্রিন্সিপাল ম্যাডাম আপনাকে ডেকেছেন স্যার।“

“আমি তো এখনো টিফিনও করিনি। টিফিনটা খেয়ে আসি?”

“এখনি যেতে বলেছেন স্যার। কয়েকবার খোঁজ নিয়েছেন।“

নিজের ডেস্কে না গিয়ে সোজা চলে এলাম দোতলায়। ভাইস-প্রিন্সিপাল ম্যাডাম এখন প্রিন্সিপালের দায়িত্ব পালন করছেন। তাই প্রিন্সিপালের রুমে বসেন। দরজার বাইরে এখনো কোন ট্রাফিক-বাতি লাগানো হয়নি। পর্দা লাগানো আছে, তবে সেই পর্দা পুরনো বিল্ডিং-এ প্রিন্সিপালের অফিসের পর্দার মতো অতটা ভারী নয়।

“ম্যাডাম আসি?”

“আসেন।“

দেখলাম ম্যাডামের ডেস্কের সামনের দুটি চেয়ারে বসে আছেন দু’জন ম্যাডাম। তাঁরা কোন কিছু নিয়ে হাসাহাসি করছিলেন। আমি ঢুকার সাথে সাথে হাসি বন্ধ হয়ে গেল।

“প্রদীপবাবু, এতক্ষণ কোথায় ছিলেন? আপনাকে ডেকেছি প্রায় পনেরো মিনিট আগে।“

“ঐ বিল্ডিং-এ ক্লাস ছিল ম্যাডাম। ক্লাসের পর রিকশার জন্য অপেক্ষা করতে হয়েছে। রিকশা এই বিল্ডিং-এ ছিল।“

“হ্যাঁ আপা, এই রিকশাওয়ালাটাকে আমি কখনোই সময়মতো পাই না।“– চেয়ারে বসা একজন ম্যাডাম হাসতে হাসতে বললেন। তিনি কি অভিযোগ করলেন, না প্রশংসা করলেন তা তাঁর বলার ভঙ্গি ও গলার উচ্ছ্বাস থেকে বোঝা গেল না।

“বসেন আপনি।“ – গম্ভীরভাবে বললেন ভারপ্রাপ্ত প্রিন্সিপাল। তাঁর ডেস্কের সামনের দুটি চেয়ার দুজন ম্যাডামের দখলে। আরেকটি চেয়ার আছে তাঁর ডান পাশে বাথরুমের দরজার কাছে দেয়ালের সাথে লাগানো। বসলাম ওখানে। তিনি আমাকে কী বলবেন বুঝতে পারছি না। অন্য দুজন ম্যাডামের সাথে আমাকে ডাকার কোন কারণ আমি খুঁজে পাচ্ছি না। ম্যাডামরা ঘাড় ফিরিয়ে একবার আমার দিকে তাকিয়েছিলেন, তারপর থেকে তাঁদের সব মনযোগ ভারপ্রাপ্ত প্রিন্সিপালের দিকে। তিনি চায়ের কাপে একটা চুমুক দিয়ে কাপটা নামিয়ে রাখতে না রাখতেই টেলিফোন বেজে উঠলো। তিনি ফোন ধরলেন। টেলিফোনের এক প্রান্তের কথা শুনে অন্যদিকের ব্যাপারে কিছুটা ধারণা পাওয়া যায়। “ভাবী” সম্বোধন শুনে ধারণা করা যাচ্ছে পরিচিত কেউ ফোন করেছেন। শুনেছি অফিসারের স্ত্রীরা পরস্পরকে ভাবী সম্বোধন করেন। একে অপরের বোন না হয়ে ভাইয়ের বউ কেন হন জানি না।

ম্যাডামদ্বয় টেলিভিশনে প্রিয় অনুষ্ঠান দেখার মতো মনযোগ দিয়ে তাকিয়ে আছেন টেলিফোনরত অ্যাকটিং-প্রিন্সিপালের দিকে। আমি এখনো বুঝতে পারছি না উনারা কী করছেন এখানে। রাজা-রানিরা পারিষদ-পরিবেষ্টিত থাকতে পছন্দ করেন। প্রতিষ্ঠানের রাজা-রানিদের পাশে পারিষদ-বর্গ জুটে যায়। রাজা-রানি বদলানোর সাথে সাথে পারিষদ বদলায়, আবার অনেক সময় বদলায়ও না। শুনেছি অনেক কলেজে নাকি শিক্ষক পরিষদের নেতারা সারাদিন প্রিন্সিপালের রুমে বসে থাকেন। এই কলেজে অবশ্য শিক্ষক পরিষদ বলে কিছুই নেই। থাকলে কী হতো জানি না।

আপেক্ষিকতা কাজ করতে শুরু করেছে। এই যে ডেকে এনে বসিয়ে রাখা – এটাকে আমার কাছে শাস্তি মনে হচ্ছে। মনে হচ্ছে চেয়ারে নয় – গরম চুল্লিতে বসে আছি, আমার গ্লুটিয়াস ম্যাক্সিমাস এখনই পুড়ে যাবে। অথচ পারিষদদ্বয় কত আরামে বসে ছন্দোবদ্ধভাবে মাথা নাড়ছেন।

“প্রদীপবাবু, বলেন তো বিতর্কে হারলেন কেন?” – টেলিফোনের রিসিভার নামিয়ে রেখে চায়ের কাপটা একপাশে সরিয়ে রাখতে রাখতে প্রশ্ন করলেন অ্যাকটিং প্রিন্সিপাল। তাহলে এই ব্যাপার। জবাবদিহি করতে হবে আমাকে। কিন্তু ‘বিতর্কে হারলাম কেন’ না বলে ‘হারলেন কেন’ বলার অর্থ হচ্ছে – এই হারের অংশীদার হতে তিনি রাজি নন। মনে হচ্ছে প্রতিষ্ঠান হারেনি, হেরেছি আমি নিজে।

“বিতর্ক কমিটির আর কেউ কি আসবেন ম্যাডাম? নাকি আমি আমারটা বলবো?”

“সবাই যেন থাকতে পারেন তাই তো টিফিন আওয়ারে ডেকেছিলাম আপনাদের। রিফাৎ আপা ছুটিতে, নাসরীন এসেছিলেন। কিন্তু আপনি তো আসেননি।“

“ওই বিল্ডিং-এ ক্লাস ছিল ম্যাডাম।“  - একই কথা আবার বলতে ভালো লাগছে না। তিনি কথাগুলি এমনভাবে বলছেন যেন আমি ঐ বিল্ডিং-এ খোশগল্প করতে আর মন্ডা-মিঠাই খেতে গিয়েছিলাম। মিটিং-এর কথা সকালে জানিয়ে দিলে হতো।

এরপর ম্যাডাম কলিং-বেল টিপে আবুল হোসেনকে অর্ডার দিলেন। আবুল হোসেন ধীর পদক্ষেপে রুম থেকে বের হলেন। জানি না আর কতক্ষণ থাকতে হবে এখানে।

“এটা সেমি-ফাইনাল ছিল না?” –পারিষদদের একজন জিজ্ঞেস করলেন। আমি এখনো বুঝতে পারছি না এই প্রশ্নটি কৌতূহল থেকে করা হচ্ছে, নাকি ইতোমধ্যেই একটা তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়ে গেছে – যে কমিটি জাতীয় টেলিভিশন স্কুল বিতর্ক প্রতিযোগিতায় শাহীন কলেজ জিততে পারলো না কেন তার তদন্ত করবে। এই ম্যাডামদ্বয় কি সেই কমিটির সদস্য? নইলে এখানে বসে আছেন কেন? আর প্রশ্নও করছেন কেন?

“না, কোয়ার্টার ফাইনাল ছিল।“– আমি সহজভাবে উত্তর দিলাম।

“নাসরীন ম্যাডাম ক্লাসে গেছেন ম্যাডাম।“ – আবুল হোসেন এসে খবর দিলেন। যতক্ষণ লাগবে আশংকা করেছিলাম তার অনেক আগেই ফিরে এসেছেন আবুল হোসেন।

“আপনি টিমে যাকে যাকে চেয়েছিলেন তাকে তাকে দিয়েছিলাম। তারপরও টিম হারলো কেন?”

প্রশ্নের ধরন দেখেই বোঝা যাচ্ছে আমাকে আক্রমণ করবেন বলে প্রস্তুত হয়ে আছেন তিনি। বিতর্কে অংশ নেয়ার মূল উদ্দেশ্যই তিনি বুঝতে পারেননি এখনো। এর আগেও আমরা কলেজ বিতর্কে দুই সিজনে হেরেছি। তখন প্রিন্সিপাল মজিদ স্যার সেই প্রসঙ্গে কোন প্রশ্ন করেননি। বরং আমাদের আন্তরিক চেষ্টাকে ধন্যবাদ দিয়েছেন। কারণ তিনি জানতেন প্রতিযোগিতায় হারজিৎ থাকবেই। তাঁরই অবিরাম উৎসাহে আমাদের ছেলে-মেয়েরা চ্যাম্পিয়ন হতে পেরেছিল। প্রথমবার অংশ নিয়েই চ্যাম্পিয়ন হয়ে গেলে যা হয়, এরপর আর কোনকিছুতেই মন ভরে না। এখানেও তা হচ্ছে। কিন্তু উদ্দেশ্যমূলক আক্রমণাত্মক প্রশ্নের উত্তরে আমার মুখ থেকে যে কথাগুলি বের হবে তা তিনি পছন্দ করবেন না। কারণ ক্ষমতার বন্দুক হাতে থাকলে মানুষ খুব বেশি স্পর্শকাতর হয়ে ওঠে।

“দিঠির নাকি গলা বসে গিয়েছিল?” – একজন পারিষদ বেশ উৎসাহ নিয়ে প্রশ্ন করলেন।

“হ্যাঁ আপা, আইসক্রিম খেয়েছিল।“– অন্য পারিষদ যোগ করলেন।

আমি কী বলবো ঠিক বুঝতে পারছি না। সব ডিটেল্‌স এঁরা জেনে বসে আছেন। তবে সমস্যা হচ্ছে ডিটেল্‌স-এ রঙ একটু বেশি হয়ে গেছে।

“আইসক্রিমের সাথে বিতর্কের কোন সম্পর্ক নেই। আইসক্রিম আমরা সবাই মিলে খেয়েছি – বিতর্কের পর। দিঠির গলা বসে গেছে বলে তো শুনিনি। সে এই বিতর্কে শ্রেষ্ঠ বক্তা হয়েছে।“

আমার গলায় সম্ভবত একটু উত্তাপ ছিল। পারিষদবৃন্দ বুঝতে পারলেন। তাঁরা “আমরা আসি আপা” বলে উঠে চলে গেলেন।

“কিছু মনে করবেন না। আমি জানতে চাচ্ছি আসলে কী হয়েছিল। নাজমুলকে নিলে নাকি আমরাই জিততাম?”

বুঝতে পারছি একপ্রস্থ আলোচনা ইতোমধ্যে হয়ে গেছে আমার অনুপস্থিতিতে। বললাম, “তা তো জানি না ম্যাডাম। কী হলে কী হতে পারতো তা তো বলা যায় না। নাজমুলকে নেবার সুযোগ আমাদের ছিল না ম্যাডাম। তার এসএসসি পরীক্ষার মাঝখানে আমরা তাকে জোর করে নিয়ে গিয়েছিলাম আগের রাউন্ডে। পরীক্ষার পড়া বাদ দিয়ে বিতর্কের স্ক্রিপ্ট মুখস্থ করতে হয়েছে তাকে। এবার তার প্র্যাকটিক্যাল পরীক্ষার সময় রেকর্ডিং হয়েছে। নিয়ম অনুযায়ী তাকে তো আমরা স্কুল বিতর্কের টিমে নিতে পারি না ম্যাডাম। তাছাড়া সে নিজে অনুরোধ করেছে যেন তাকে আমরা জোর না করি। আমাদের টিম খুব স্ট্রং টিম ম্যাডাম। সবাই খুব ভালো বলেছে। স্ক্রিপ্টও খুব রিচ ছিল। আমাদের দলনেতা শ্রেষ্ঠ বক্তা হয়েছে। আমাদের যুক্তিগুলি খুবই গঠনমূলক ছিল। আমি মনে করি আমাদেরই জেতা উচিত ছিল।  প্রচারিত হলে বিতর্কটা যদি দেখেন – আপনি বুঝতে পারবেন।“

“আপনি নাকি খুব একটা সিরিয়াস ছিলেন না? সারাক্ষণ হাসি-ঠাট্টা করেছেন ছেলে-মেয়েদের সাথে।“

“জ্বি ম্যাডাম। আমি সিরিয়াস হতে শিখিনি।“

“রিফাৎ আপা গেলে মনে হয় আমরা জিততে পারতাম। তিনি অসুস্থ হয়ে পড়াতেই সমস্যা হলো।“

তাই তো। আজ সকালে বিমল স্যারও এরকমই বলেছেন। রিফাৎ আরা ম্যাডাম যতবার টিম নিয়ে গেছেন – ততবারই টিম জিতেছে। আর রিফাৎ আরা ম্যাডামকে ছাড়া আমি যে দু’বার গিয়েছি – দু’বারই হেরে এসেছি। হারার দায়টা আসলে আমার উপরেই বর্তায়। আমি খুব ঠান্ডাভাবে বেশ সিরিয়াস মুখ করে বললাম, “ম্যাডাম, এই বিতর্কে হেরে যাবার পুরো দায় আমি নিচ্ছি। আপনি অফিসিয়ালি আমাকে একটা শো-কজ করেন। আপনাকে কেউ জিজ্ঞেস করলে আপনি বলতে পারবেন যে আপনি ডিউ অ্যাকশান নিয়েছেন।“

ম্যাডামের ঠোঁটে এক চিলতে হাসির রেখা ফুটে উঠলো। মনে হচ্ছে আমার প্রস্তাব পছন্দ হয়েছে তাঁর।

প্রিন্সিপালের রুম থেকে বের হয়ে সিঁড়ি দিয়ে নামতে যাবো – দেখলাম ইভা আসছে ওদিক থেকে। হাতে চক ডাস্টার দেখে বুঝতে পারছি ক্লাসে যাচ্ছে।

“অ্যাই, তোমাকে নাকি বকা দিয়েছে আজ? কী হয়েছে?” – সিঁড়ি দিয়ে পাশাপাশি নামতে নামতে প্রশ্ন করলো ইভা।

“তোমাদের স্টাফরুমে বুঝি এই আলোচনা চলছে এখন?”

“হ্যাঁ, বলো না কী হয়েছে?”

“তুমি যা শুনেছো তাই হয়েছে।“

“ধুর্‌, তোমার পেট থেকে কথা বের করা যায় না। শয়তান একটা।“

সে আমাদের টিচার্স রুমের দরজা পর্যন্ত এসে বাম দিকের করিডোর ধরে চলে গেল ক্লাসে। আমি আমার চেয়ারে এসে বসলাম। সেকেন্ড পিরিয়ডে বের হয়েছিলাম। এখন সিক্সথ পিরিয়ড চলছে। টেবিলে দুটো সিঙাড়া ঠান্ডা হয়ে কিছুটা চুপসে পড়ে আছে একটা প্লেটের উপর। জন্ডিজ থেকে উঠে কিছুদিন মসলা দেয়া খাবার বন্ধ করে রেখেছিলাম। এখন আবার সবকিছু খেতে শুরু করেছি। প্রচন্ড ক্ষুধায় ঠান্ডা সিঙাড়াকেও অমৃত মনে হয়। আচ্ছা, অমৃত মানে কী? অ-মৃত? যা মৃত নয় – জীবন্ত? চুপসানো সিঙাড়া কীভাবে জীবন্ত হয়?

রুমে ফ্যান চলছে ফুলস্পিডে। তারপরও বেশ গরম লাগছে। মে মাসের গরম। সিঙাড়ায় মরিচ ছিল। জিভ জ্বলছে। আলী হায়দার আমার পাশের সিটে বসেন। তিনি ক্লাস শেষ করে এসে ব্যাগ থেকে এক গাদা কার্ড বের করে খামের উপর নাম লিখছেন। তাঁর বিয়ের কার্ড। টিচার্স রুমে সবার জন্য একটা কার্ড রাখা আছে। এখন তিনি আরেকটি কার্ড আমার দিকে এগিয়ে দিয়ে বললেন, “দাদা, এটা স্পেশালি আপনার জন্য। সবার সাথে দাওয়াত তো আছেই। কিন্তু স্পেশালি আবার একটা দিচ্ছি। আপনাকে আসতেই হবে।“

আমি অভিভূত হয়ে কার্ডটা খুললাম। খুবই সুন্দর সোনালী কার্ড। ২৪ মে শুক্রবার ১৯৯৬, পাহাড়তলির মুনমুন কমিউনিটি সেন্টারে তাঁদের সোনালী যুগল জীবন শুরু হবে।

আজ আর কোন ক্লাস নেই। ঘন্টাখানেক সময় হাতে আছে ছুটি হবার। ভবিষ্যত শো-কজের উত্তর দেবার কিছু প্রস্তুতি নিয়ে রাখা যাক। ইংরেজি শব্দকে বাংলায় লিখলে অনেক সময় অর্থ বদলে যায়। জলজ শব্দের অর্থ যেভাবে হয় সেভাবে শোকজ শব্দটিকে বাংলা শব্দ বিবেচনা করলে কি এর অর্থ হবে শোক থেকে জন্ম যাদের? হওয়া তো উচিত।

খুব তো পরামর্শ দিয়ে এলাম আমাকে শো-কজ করার জন্য। এখন যদি শো-কজ করা হয়, আমি কী উত্তর দেবো? বিতর্কের পুরো বিবরণ তুলে দিতে হবে। সেকেন্ড রাউন্ডে ভিকারুননিসা নুন স্কুলকে হারিয়ে আমাদের টিম কোয়ার্টার ফাইনালে উঠেছিল। কোয়ার্টার ফাইনালে আমাদের প্রতিপক্ষ হলো খুলনা সরকারি বালিকা বিদ্যালয়। বিতর্কের বিষয়টা বেশ খটমটে – “ব্যাংকিং খাতে স্থিতিশীলতাই সামগ্রিক অর্থনৈতিক ভারসাম্য আনতে পারে।“ আমাদের বলতে হবে এর পক্ষে। বিষয়টা এতটাই টেকনিক্যাল যে আমাদের স্কুল পড়ুয়াদের পক্ষে তো বটেই আমাদের পক্ষেও বেশ কঠিন। স্ক্রিপ্টের পয়েন্ট জোগান দেয়ার জন্য ম্যাকমিলানের ডিকশনারি, এনসাইক্লোপিডিয়া অব মডার্ন ইকোনমিক্স থেকে শুরু করে অনেক কিছু উল্টাতে হলো। বিতর্কের টিম নতুন করে সাজাতে হলো। নাজমুলের এসএসসি পরীক্ষা চলছে। তাই নিয়ম অনুসারে তাকে নেয়া যাচ্ছে না। রেহনুমাকে দলনেতা করা হলো। সুব্রতকে প্রথম বক্তা। আরজুম এবারো দ্বিতীয় বক্তা।

রিফাৎ আরা ম্যাডাম অনেক খেটেখুটে স্ক্রিপ্ট তৈরি করলেন। রাত জেগে মশার কামড় খেতে খেতে স্ক্রিপ্ট তৈরি করেছেন। ফলে রেকর্ডিং-এর জন্য ঢাকায় যাবার আগেই তিনি ম্যালেরিয়ায় শয্যাশায়ী হয়ে পড়লেন। নাসরীন বানু ম্যাডামের অভিভাবকত্বে আমরা ঢাকায় গেলাম রেকর্ডিং-এর জন্য। যথারীতি অফিসার্স মেসে থাকার ব্যবস্থা। ঢাকা শাহীনের তিনজন শিক্ষক এবং চল্লিশ জন ছাত্রছাত্রী সাথে নিয়ে আমরা গেলাম রামপুরা টেলিভিশন ভবনে। হাসান আহমেদ চৌধুরি কিরণের পরিচালনায় যথাসময়েই শুরু হলো ১৯৯৫ সালের টেলিভিশন স্কুল বিতর্ক প্রতিযোগিতার কোয়ার্টার ফাইনাল। এখানেও এক বছরের সেশান জট। সভাপতিত্ব করলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যাংকিং ও ফিন্যান্স ডিপার্টমেন্টের চেয়ারম্যান ডক্টর এ আর খান। আমাদের প্রথম বক্তা সুব্রত দাস শুরু করলো প্রস্তাবের পক্ষের বক্তৃতা। সুব্রত’র এটাই প্রথম টেলিভিশন বিতর্ক। সে খুবই সাবলিলভাবে টেকনিক্যাল বিষয়গুলি ব্যাখ্যা করলো। বাংলাদেশ ব্যাংক আদেশ, ম্যাকমিলান ডিকশনারি থেকে সংজ্ঞা, এনসাইক্লোপিডিয়া অব মডার্ন ইকোনমিক্স থেকে ব্যাখ্যা, এশিয়া উইকের প্রতিবেদন থেকে মুদ্রাস্ফীতির পরিমাণ, অর্থনৈতিক ঋণ, বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ এসব সে যেভাবে বললো – তাতে মনে হচ্ছিলো ব্যাংকিং বিষয়ে গবেষণা করছে।

বিপক্ষের বক্তারাও খুবই শক্ত প্রস্তুতি নিয়ে এসেছে। তবে আমার কাছে আমাদের বক্তাদের যুক্তিগুলি অনেক বেশি জোরালো মনে হয়েছে। এতে অবশ্য আমার পক্ষপাতিত্ব থাকতেই পারে। কারণ নিজের ছেলে-মেয়েরা যখন প্রতিযোগিতা করে – তখন নিরপেক্ষ থাকা যায় না। আমাদের আরজুম অর্থনীতির কিছু প্রকট সমস্যা চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিল। মাত্র ১০০ জনের হাতে জিম্মি হয়ে আছে ব্যাংকের ১৪ হাজার কোটি টাকা। ব্যাংক থেকে লোন নিয়ে আর ফেরত দিচ্ছে না। ঋণ নির্ভর অর্থনীতির সামগ্রিক ভারসাম্য বজায় রাখার জন্য ব্যাংকের যে শক্তি নিয়ে স্থিতিশীল থাকার কথা – সেভাবে স্থিতিশীল থাকতে পারছে না ব্যাংকিং খাত।

বিপক্ষ রাজনৈতিক অস্থিরতাকে অনেক বেশি দায়ি করেছে সামগ্রিক অর্থনৈতিক ভারসাম্য নষ্ট করার জন্য। আমাদের দলনেতা রেহনুমা জাপানে রাজনৈতিক অস্থিরতার মধ্যেও তাদের ব্যাংকিং খাত স্থিতিশীল থাকার ফলে সামগ্রিক অর্থনৈতিক ভারসাম্য বজায় থাকার উদাহরণ দিলো। দীর্ঘ গৃহযুদ্ধের মধ্যেও শ্রীলংকার অর্থনৈতিক ভারসাম্যের উদাহরণ দিলো। সে ভারসাম্যের ব্যাপারটা খুব পরিষ্কার করে বুঝিয়ে দিলো। তাদের বিতর্ক শোনার সময় ভুলেই গিয়েছিলাম যে এই কথাগুলির অনেককিছু তারা আগে মুখস্থ করে এসেছে। কিন্তু তাদের যুক্তি খন্ডানোর ক্ষমতা দেখে আমার ভীষণ গর্ব হচ্ছিলো। তাৎক্ষণিকভাবেই যুক্তি-খন্ডন এবং পালটা যুক্তি প্রয়োগ করতে হয়। শুধুমাত্র পূর্ব-প্রস্তুতি থেকে এটা করা সম্ভব হয় না। সুব্রত আর রেহনুমা এত বেশি যুক্তি খন্ডনের পয়েন্ট লিখেছে যে শেষের দুই মিনিট যুক্তি-খন্ডন করতে এসে রেহনুমা কয়েকটা কাগজ উল্টোপাল্টা করেছিল। কিন্তু কয়েক সেকেন্ডের মধ্যেই সে সামলে নিয়েছিল।

বিতর্ক শেষে সভাপতি তাঁর বক্তৃতায় আমাদের বক্তাদের দেয়া যুক্তিগুলিকে এতটাই সমর্থন করেছেন যে আমার দৃঢ় বিশ্বাস ছিল যে আমরাই জিতবো। কিন্তু পাঁচজন বিচারকের মধ্যে আমাদের পক্ষে ভোট দিয়েছেন দুই জন। আমরা হেরে গেলেও আমাদের দলনেতা রেহনুমা বিপক্ষের দলনেতার সাথে যৌথভাবে শ্রেষ্ঠ বক্তা হয়েছে।  

এরপর যতক্ষণ স্টেজে ছিল বিপক্ষের সবার সাথে ভাব বিনিময় করলো। বিচারকদের সাথে কথা বললো। তারপর স্টেজ থেকে নেমে রেহনুমা এমনভাবে কাঁদতে শুরু করলো – আমি তাকে কিছুতেই বুঝাতে পারি না যে এটা জাস্ট একটা বিতর্ক প্রতিযোগিতা। এতে হারলে কান্নাকাটি করার কিছু নেই। আরজুম মন খারাপ করে থাকলেও কাঁদলো না, কিংবা মনে মনে কাঁদলো। কিন্তু সুব্রতকে দেখলাম বেশ স্বাভাবিক আছে। রেহনুমা তার কাগজপত্র পানির বোতল সব স্টেজে ফেলে ছলছল চোখে নিচে নেমে এসেছে। আর সুব্রত কাগজপত্র, পানির বোতল সব নিয়ে ধীরেসুস্থে স্টেজ থেকে নামলো। এই ছেলে ক্লাস ওয়ান থেকে ক্লাস মনিটরের দায়িত্ব পালন করতে করতে এক্সপার্ট লিডারে পরিণত হয়েছে।

যে কোন প্রতিযোগিতায় হারজিত থাকবেই। বিতর্কের সভাপতি দু’দলকেই সমানভাবে বিজয়ীর কৃতিত্ব দিয়েছেন। আমি সেই কথাটাকে খুব গুরুত্ব দিতে চাই। মাঝে মাঝে পরাজিত হওয়াটা যে কত জরুরি সে সংক্রান্ত যত দর্শন জানা ছিল সব উপোড় করে দেয়ার পরেও কাজ হচ্ছে না দেখে অনেক দর্শন বানিয়ে বানিয়েও বললাম। তাতে কিছুটা কাজ হলো, হাসির কথায় হাসতে পারার ক্ষমতাটা ফিরে এলো আমাদের তার্কিকদের।

অফিসার্স মেসে ফিরে এসে কিছুক্ষণ বিশ্রাম। মে মাসের গরম। দিন অনেক লম্বা। ভেবেছিলাম সবাই ক্লান্ত হয়ে শুয়ে পড়বে। কিন্তু দেখা গেলো তার্কিক তিনজনই চোখ বড় বড় করে ঘুরঘুর করছে।

“আমাদের আইসক্রিম”

“কিসের আইসক্রিম?”

“আপনি খাওয়াবেন বলেছেন।“

“কখন বললাম?”

“টেলিভিশন ভবনে বলেছেন।“

“সেটা তো কান্নাকাটি থামানোর জন্য বলেছিলাম।“

“তাহলে আবার কান্নাকাটি শুরু করি?” - রেহনুমার কথায় আমি আঁৎকে উঠলাম। বলা যায় না, এই মেয়ে আবার কাঁদতে শুরু করলে আইসক্রিমেও থামবে না।

“না রে মা, দরকার নেই। চলো, আইসক্রিম খেয়ে আসি। ম্যাডামকে ডাকো।“

“ম্যাডাম ঘুমাচ্ছেন।“

“আবার ডাকো। বলো যে তোমরা যাচ্ছো আইসক্রিম খেতে।“

রেহনুমা ও আরজুম রুমে গেলো নাসরীন ম্যাডামকে ডাকতে। কিছুক্ষণ পর ফিরে এসে জানালো – ম্যাডাম খুব টায়ার্ড। বাইরে যাবেন না।

আমরা চারজন বের হলাম। হাঁটতে হাঁটতে ঢাকা শাহীনের সামনে আইসক্রিম পার্লারে গিয়ে আইসক্রিম খেয়ে আরো একটু হাঁটাহাঁটি করে ফিরে এলাম।

“তোমরা আমাকে একা ফেলে সবাই চলে গেছো। এই কাজটা কি তোমরা ঠিক করেছো?” – নাসরীন ম্যাডাম রাগী রাগী গলায় প্রশ্ন করলেন। প্রশ্নটা আমাকে করা হয়নি ভেবে আমি চুপ করে রইলাম। রেহনুমা বিতর্কের দলনেতা হলেও আরজুম তাদের মধ্যে সিনিয়র। সুব্রত আর রেহনুমা তাকে সারাক্ষণই ‘লাবণী আপু’, ‘লাবণী আপু’ করছে। আরজুম বললো, “ম্যাডাম, আমরা আপনাকে ডেকেছিলাম। আপনি যাবেন না বলেছিলেন।“

“তাই নাকি? আমার তো কিছু মনে নেই। ঘুমের মধ্যে বলেছি হয়তো।“

গতকাল এস-আলমের বাসে ফিরে এসেছি চট্টগ্রামে। রেহনুমাকে তাদের বাসায় পৌঁছে দিতে গিয়ে রিফাৎ আরা ম্যাডামের সাথে দেখা হয়েছে। তিনি এখনো সুস্থ হননি। বিতর্কে হেরে গেছি বলে তিনি কোন অভিযোগ করলেন না। অথচ আজ অ্যাকটিং-প্রিন্সিপালের রুমে গিয়ে জবাবদিহি করতে হলো।

>>>>>>>>>>>>>>> 

যে শো-কজের জন্য আমি মনে মনে তৈরি ছিলাম, সেই শো-কজ আমাকে কখনোই করা হয়নি। আমি থাকা অবস্থায় চট্টগ্রাম শাহীন কলেজ আর কখনো টেলিভিশন বিতর্কে অংশ নেয়নি।

পরবর্তী এক মাসের মধ্যে বাংলাদেশের ইতিহাসে ব্যাপক পরিবর্তন ঘটে গেলো। মে মাসের ২০ তারিখ সেনাপ্রধান জেনারেল নাসিম অভ্যুত্থান ঘটানোর চেষ্টা করে ব্যর্থ হলেন। তাঁকে বাধ্যতামূলক অবসরে পাঠানো হয় এবং পরে গৃহবন্দী করা হয়। নতুন সেনাপ্রধান হিসেবে দায়িত্ব নেন জেনারেল মাহবুবুর রহমান।

১২ জুন সাধারণ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করলো। ২৩ জুন আওয়ামী লীগ সরকার শপথ গ্রহণ করে রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্ব নিলো। দীর্ঘ একুশ বছর পর টেলিভিশন ও রেডিওতে বঙ্গবন্ধুর নাম উচ্চারিত হলো, ভাষণ প্রচারিত হলো।

রাষ্ট্রক্ষমতার পরিবর্তনের সাথে সাথে আশ্চর্য হয়ে খেয়াল করলাম শাহীন কলেজেও অনেকের মুখ দিয়ে কথায় কথায় ‘বঙ্গবন্ধু’ শব্দটি উচ্চারিত হচ্ছে।

কিছুদিন পর এক দুপুরে দেখলাম একজন গ্রুপ-ক্যাপ্টেন আমাদের টিচার্স রুমের বারান্দার একপাশের দেয়াল টপকে লাফ দিয়ে কলেজ কম্পাউন্ডে ঢুকলেন। সেদিন তাঁকে দেখে মনে হয়েছিলো চিত্রনায়ক ওয়াসিম লাফ দিয়ে ঘোড়ার পিঠ থেকে নামলেন। কিন্তু তাঁর হাতে যে চাবুক ছিল তা সেদিন বুঝতে পারিনি। কিছুদিনের মধ্যেই বুঝতে পারলাম যখন সেই অদৃশ্য চাবুক শিক্ষকদের মানমর্যাদার উপর উদ্যত হতে শুরু করেছে।  

No comments:

Post a Comment

Latest Post

নিউক্লিয়ার শক্তির আবিষ্কার ও ম্যানহ্যাটন প্রকল্প

  “পারমাণবিক বোমার ভয়ানক বিধ্বংসী ক্ষমতা জানা সত্ত্বেও আপনি কেন বোমা তৈরিতে সহযোগিতা করেছিলেন?” ১৯৫২ সালের সেপ্টেম্বরে জাপানের ‘কাইজো’ ম্য...

Popular Posts