বিংশ অধ্যায়
সত্যেন বসু ও নোবেল পুরষ্কার
এই যে মহাবিশ্বের সবগুলো মৌলিক কণার প্রধান দুই
শ্রেণির মধ্যে এক শ্রেণির নাম দেয়া হয়েছে একজন বাঙালি বিজ্ঞানীর নামে, এবং সেই
বিজ্ঞানী এই ব্যাপারটা আবিষ্কার করেছেন আমাদের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থবিজ্ঞান
বিভাগে শিক্ষকতা করার সময় - এর চেয়ে গৌরবের আর কী হতে পারে। শুধু তাই নয়, বোসন
কণাগুলোর ধর্ম ও কর্ম ব্যাখ্যা করার জন্য যে গণিত দরকার হয় তার নাম বোস-আইনস্টাইন
স্ট্যাটিসটিক্স। আইনস্টাইনের নামের সাথে সত্যেন বসুর নাম এমনভাবে জুড়ে গেছে যে এখন
আইনস্টাইনের বৈজ্ঞানিক জীবনী লিখতে গেলে সেই জীবনীতে সত্যেন বসুর কথা লিখতেই হয়।
এমন চমৎকার সম্মান পাবার পরেও আমাদের বিশেষ করে
বাঙালিদের মাঝে মাঝে মনে হয় যেন সত্যেন বসুকে তাঁর উপযুক্ত সম্মান দেয়া হয়নি। সেই
'উপযুক্ত সম্মান' বলতে আমরা বিজ্ঞানের সবচেয়ে দুর্লভ সম্মান নোবেল পুরষ্কারকেই
বুঝে থাকি। বেতার তরঙ্গ সংক্রান্ত গবেষণায় আমাদের জগদীশচন্দ্র বসুকে বঞ্চিত করা
হয়েছে নোবেল পুরষ্কার থেকে। সেই ক্ষোভ আমাদের আছে। তার ওপর যখন আমরা দেখি যে
সত্যেন বসু যে পথ দেখিয়েছেন সেই পথে গবেষণা করে অন্যরা নোবেল পুরষ্কার পেয়ে যাচ্ছে
- তখন আমাদের রাগ হয় বৈ কি।
১৯৯৬ সালের পদার্থবিজ্ঞানে নোবেল পুরষ্কার
পান তিন জন আমেরিকান পদার্থবিজ্ঞানী। কর্নেল
ইউনিভার্সিটির ডেভিড লি ও রবার্ট রিচার্ডসন, এবং স্ট্যানফোর্ড ইউনিভার্সিটির ডগলাস
ওসারফ। হিলিয়াম-৩ আইসোটোপের সুপারফ্লুইডিটি আবিষ্কার করে তাঁরা নোবেল পুরষ্কার
পান। কিন্তু আমাদের রাগ হয় যখন আমরা দেখি যে হিলিয়াম পরমাণুর সুপারফ্লুইডিটি আসে
বোস-আইনস্টাইন কনডেনসেশান বা বোস-আইনস্টাইন ঘনীভবন থেকে যা সত্যেন্দ্রনাথ বসুর
অবদান। আমরা ক্ষুব্ধ হই সত্যেন বসুকে নোবেল দেয়া হয়নি বলে।
পরের বছর আবারো একই ব্যাপার ঘটে। ১৯৯৭ সালে
পদার্থবিজ্ঞানে নোবেল পুরষ্কার পান দুজন আমেরিকান - স্ট্যানফোর্ড ইউনিভার্সিটির
স্টিভেন চু ও ন্যাশনাল ইন্সটিটিউট অব স্ট্যান্ডার্ড অ্যান্ড টেকনোলজির উইলিয়াম
ফিলিপ্স, এবং একজন ফরাসী পদার্থবিজ্ঞানী - প্যারিসের কলেজ ডি ফ্রান্সের ক্লদে
কোহেন-তানোজি। লেজার আলোর সাহায্যে পরমাণুকে ঠান্ডা করে আটকে ফেলার পদ্ধতি
আবিষ্কারের জন্য তাঁরা নোবেল পুরষ্কার পেয়েছেন।
চিত্র: ১৯৯৬ সালে পদার্থবিজ্ঞানে নোবেলবিজয়ী: (বাম থেকে ডানে) ডেভিড লি, ডগলাস ওসারফ ও রবার্ট রিচার্ডসন।
চিত্র: ১৯৯৭ সালে পদার্থবিজ্ঞানে নোবেলবিজয়ী: (বাম থেকে ডানে) স্টিভেন চু, ক্লদে কোহেন-তানোজি, ও উইলিয়াম ফিলিপ্স।
স্বাভাবিক তাপমাত্রায় পরমাণুগুলো কিন্তু ঘন্টায়
প্রায় চার হাজার কিলোমিটার বেগে ছুটোছুটি করে। তাদেরকে এরকম ছুটন্ত অবস্থায়
সূক্ষ্মভাবে পর্যবেক্ষণ করা সম্ভব হয় না। পরমাণুকে ক্রমাগত ঠান্ডা করতে থাকলে
তাদের গতিবেগ ক্রমশ কমতে থাকে। দেখা গেলো যে এই আবিষ্কারও বোস-আইনস্টাইন
কনডেনসেশানকে সমর্থন করছে। সত্যেন বসু নোবেল না পাওয়ায় আমাদের ক্ষোভ আরো বাড়তে
থাকে।
এরপর ২০০১ সালে পরীক্ষাগারে বোস-আইনস্টাইন
কনডেনসেশান তৈরির জন্য নোবেল পুরষ্কার পান তিন জন আমেরিকান পদার্থবিজ্ঞানী -
এম-আই-টি'র উলফ্গ্যাং কেটেরলি, এবং কলরাডোর এরিক কর্নেল ও কার্ল ওয়াইম্যান। ১৯২৪
সালে সত্যেন বসুর তত্ত্বীয় গবেষণা থেকে উদ্ভূত বোস-আইনস্টাইন ঘনীভবনের পরীক্ষামূলক
প্রমাণ হাতের মুঠোয় চলে এলো। কিন্তু সত্যেন্দ্রনাথ বসু নোবেল পুরষ্কার পাননি বলে
আমরা আবারো মন খারাপ করি।
চিত্র: ২০০১ সালে পদার্থবিজ্ঞানে নোবেলবিজয়ী: (বাম থেকে ডানে) এরিক কর্নেল, উলফ্গ্যাং কেটেরলি, ও কার্ল ওয়াইম্যান। |
সত্যেন বসুর গবেষণা যে নোবেল পুরষ্কার পাওয়ার
যোগ্য ছিল তাতে কারো কোন সন্দেহ নেই। ২০০১ সালের নোবেলবিজয়ী বিজ্ঞানীরাও তা
স্বীকার করেছেন তাঁদের নোবেল বক্তৃতায় এবং অন্যান্য সাক্ষাতকারে। সত্যেন বসুর
নাতি ফাল্গুনী সরকার ২০০১ সালে নোবেল বিজয়ী পদার্থবিজ্ঞানী এরিক কর্নেল ও কার্ল
ওয়াইম্যানের সঙ্গে দেখা করেছিলেন। এই দু'জন বিজ্ঞানী সত্যেন বসুর কাজকে খুবই
শ্রদ্ধা করেন।
২০১২ সালে হিগ্স বোসন আবিষ্কৃত হয়।
হিগ্স বোসনের নাম ঘটনাচক্রে 'গড পার্টিক্যাল' হয়ে যাওয়াতে এই কণার আবিষ্কার নিয়ে
ব্যাপক তোলপাড় হয় পৃথিবীজুড়ে।
১৯৬৪ সালে এডিনবরা বিশ্ববিদ্যালয়ের
অধ্যাপক পিটার হিগ্স কণা-পদার্থবিজ্ঞানের স্ট্যান্ডার্ড মডেলে একটি নতুন কণার
অস্তিত্ব থাকার তত্ত্ব প্রস্তাব করেন, যে কণাটি যেকোনো পদার্থের ভর সৃষ্টির জন্য
দায়ী। পরে এই কণার নাম হয় হিগ্স কণা। এই কণাগুলো বোস-আইনস্টাইন সংখ্যায়ন মেনে চলে
বলে এগুলো বোসন। তাই এই কণাগুলোর নাম হয় হিগ্স বোসন। একই ধরনের কণার প্রস্তাব
বেলজিয়ামের প্রফেসর ফ্রাঁসো ইংলার্ট (François Englert) এবং তাঁর সহকর্মী রবার্ট ব্রাউটও দিয়েছিলেন একই বছর
প্রায় একই সময়। পিটার হিগ্সের পেপারটি আগে প্রকাশিত হয়েছে বলেই কণাটির নাম হয়েছে
হিগ্স বোসন।
ছবি: সত্যেন্দ্রনাথ বসুর নাতি (মেয়ের ছেলে) ফাল্গুনী সরকারের সাথে ২০০১ সালের নোবেলবিজয়ী পদার্থবিজ্ঞানী এরিক কর্নেল ও কার্ল ওয়াইম্যান। |
সুইজারল্যান্ডের জেনিভায় পৃথিবীর সবচেয়ে জটিল এবং
সবচেয়ে বড় বৈজ্ঞানিক যন্ত্র লার্জ হ্যাড্রন কোলাইডারে ছয় হাজার বিজ্ঞানীর নিরলস
প্রচেষ্টায় কোটি কোটি কণার মধ্যে সংঘর্ষের তথ্য উপাত্ত বিশ্লেষণ করে হিগ্স বোসন
শনাক্ত করতে সক্ষম হয়েছেন ২০১২ সালে। ২০১৩ সালে হিগ্স বোসন এর তত্ত্বের জন্য
নোবেল পুরষ্কার দেয়া হয়েছে পিটার হিগ্স ও ফ্রাঁসো ইংলার্টকে। হিগ্স বোসন
আবিষ্কারের আগেই রবার্ট ব্রাউটের মৃত্যু হয়। ফলে তাঁর নাম বিবেচিত হয়নি নোবেল
পুরষ্কারের জন্য। হিগ্স বোসন যেহেতু এত বড় আবিষ্কার, আর যে সময়ে এটা নিয়ে কথা
হচ্ছে সেই সময়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অংশগ্রহণ তুঙ্গে, বাঙালিরা আবারো টেনে
নিয়ে এলেন সত্যেন বসুর কথা। বলা হলো সত্যেন বসুকে আবারো নোবেল পুরষ্কার থেকে
বঞ্চিত করা হয়েছে। বলা হলো পশ্চিমারা সত্যেন বসুকে যথেষ্ট দাম দেয়নি। এ নিয়ে
প্রচারমাধ্যম, সামাজিক মাধ্যম সয়লাব হয়ে গেলো মানুষের মন্তব্যে। দুঃখজনক হলেও সত্য
এসব মন্তব্যে আবেগের ঘনঘটা যত বেশি বৈজ্ঞানিক যুক্তি তত কম।
চিত্র: ২০১৩ সালে পদার্থবিজ্ঞানে নোবেলবিজয়ী পিটার হিগ্স ও ফ্রাঁসো ইংলার্ট |
চিত্র সার্নের মহাপরিচালক রাল্ফ হিউয়ার বিশ্বাস করেন যে সত্যেন্দ্রনাথ বসুকে নোবেল পুরষ্কার দেয়া উচিত ছিল |
আমাদের অনেকেরই সঠিক ধারণা নেই বিজ্ঞানে নোবেল
পুরষ্কার কারা পাবেন সেটা কীভাবে নির্ধারিত হয়। বিজ্ঞানে নোবেল পুরষ্কার দেওয়ার নিয়মগুলো একটু
বলে নেয়া যাক। বিজ্ঞানে শুধুমাত্র তত্ত্বীয় গবেষণার জন্য নোবেল পুরষ্কার দেয়া হয়
না। তত্ত্বীয় গবেষণা যতদিন পর্যন্ত পরীক্ষাগারে সত্য বলে প্রমাণিত না হচ্ছে ততদিন
সেই তত্ত্বের নোবেল পুরষ্কার পাওয়ার কোন সম্ভাবনা নেই। বোস-আইনস্টাইন কনডেনসেশান
তত্ত্ব পরীক্ষাগারে প্রথম প্রমাণিত হয়েছে ১৯৯৫ সালে। ততদিন পর্যন্ত যদি
সত্যেন্দ্রনাথ বসু বেঁচে থাকতেন তাহলে তাঁর জন্য কেউ না কেউ মনোনয়ন পাঠাতেন। ২০০১
সালে বোস-আইনস্টাইন কনডেনসেশানের জন্য পুরষ্কার দেয়া হয়েছে। সত্যেন্দ্রনাথ বসু যদি
ঐ সময় বেঁচে থাকতেন তাহলে নিশ্চিন্তভাবে বলা যায় তিনি নোবেল পুরষ্কার পেতেন। নোবেল
পুরষ্কার পাওয়ার জন্য সশরীরে বেঁচে থাকাটাও জরুরি, কারণ মৃত ব্যক্তিকে নোবেল
পুরষ্কার দেয়ার নিয়ম নেই। কোন কোন তত্ত্ব পরীক্ষাগারে প্রমাণিত হতে বেশিদিন সময়
নেয় না। তখন সেই তত্ত্ব যিনি আবিষ্কার করেছিলেন তিনি দ্রুত নোবেল পুরষ্কার পেয়ে
যান। যেমন পল ডিরাক পজিট্রনের তত্ত্ব দিয়েছিলেন ১৯২৮ সালে। ১৯৩২ সালে পরীক্ষাগারে
পজিট্রন পাওয়া গেলো। ১৯৩৩ সালে পল ডিরাক নোবেল পুরষ্কার পেলেন।
নোবেল পুরষ্কার পাওয়ার জন্য আরো একটি ব্যাপার
খুবই জরুরি - তা হলো নোবেল কমিটির কাছে মনোনয়ন পাঠানো। যাঁরা একবার নোবেল পুরষ্কার
পান - তাঁরা যতদিন বেঁচে থাকেন ততদিন তাঁদের মতে যাঁরা যোগ্য তাদের নামে মনোনয়ন
পাঠাতে পারেন। আবার নোবেল কমিটিও প্রতি বছর পৃথিবীর বিভিন্ন দেশের বিজ্ঞানীদের কাছে
মনোনয়ন পাঠানোর জন্য আমন্ত্রণপত্র পাঠান। নিজের ইচ্ছেয় মনোনয়ন পাঠানোর কোন সুযোগ
নেই। কে কাকে মনোনয়ন পাঠিয়েছে তা নোবেল পুরষ্কার পাওয়ার পরবর্তী পঞ্চাশ বছর
পর্যন্ত গোপন থাকে। অর্থাৎ ২০১৮ সালে নোবেল পুরষ্কারের জন্য কে কে মনোনয়ন
পেয়েছিলেন তা জানা যাবে ২০৬৮ সালের পরে। ১৯০১ থেকে ১৯৬৮ সাল পর্যন্ত যতগুলো মনোনয়ন
পাঠানো হয়েছে নোবেল কমিটির কাছে - তা এখন জানা যাচ্ছে।
নোবেল কমিটির রেকর্ড থেকে দেখা যাচ্ছে সত্যেন
বসুকে পদার্থবিজ্ঞানে নোবেল পুরষ্কার দেয়ার জন্য শুধুমাত্র চারটি মনোনয়ন পাঠানো
হয়েছিল। প্রথম বার ১৯৫৬ সালে এলাহাবাদ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অধ্যাপক কেদারেশ্বর
ব্যানার্জি, দ্বিতীয় বার ১৯৫৮ সালে দিল্লী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে দৌলত সিং কোঠারি,
এবং সর্বশেষ ১৯৬২ সালে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে দুটো মনোনয়ন পাঠান প্রফেসর এস এন
বাগচি ও প্রফেসর এ দত্ত। আইনস্টাইন সত্যেন বসুকে মনোনয়ন দেননি, ডিরাকও নয়। ইওরোপের
অনেক নোবেলবিজয়ী বিজ্ঞানীর সাথে জানাশোনা ছিল সত্যেন বসুর। তাঁদের কেউই তাঁর জন্য
মনোনয়ন পাঠাননি। এমনকি সি ভি রামন বা মেঘনাদ সাহাও সত্যেন বসুর জন্য মনোনয়ন
পাঠাননি। আমরা হয়তো এতেও ক্ষুদ্ধ হচ্ছি। কিন্তু আসলে তার কোন দরকার নেই। কারণ
নোবেল পুরষ্কার শুধুমাত্র কয়টা মনোনয়ন গেলো তার উপর নির্ভর করে না। যে সময়ে সত্যেন
বসুর জন্য মনোনয়ন পাঠানো হয়েছিল - সেই সময়ে সত্যেন বসুর তত্ত্ব নিয়ে পরীক্ষাগারে
কোন অগ্রগতিই হয়নি। ১৯৬৪ সালে হিগ্স বোসন সংক্রান্ত গবেষণাপত্র প্রকাশিত
হবার পর শত শত পেপার প্রকাশিত হয়েছে এ ব্যাপারে। সত্যেন বসু সেই সময় থেকে আরো দশ
বছর বেঁচেছিলেন। কিন্তু তিনি কোন গবেষণা করেননি হিগ্স বোসন সংক্রান্ত। সত্যেন বসু
১৯৫৫ সালের পরে অনেক গবেষণা করেছেন ঠিকই, কিন্তু একটি গবেষণাপত্রও প্রকাশ করেননি।
১৯৫৬ সালে যখন প্রথমবার নোবেল কমিটিতে
নমিনেশান আসে, তখন নোবেল কমিটি সত্যেন বসুর জন্য বিশেষজ্ঞ কমিটি গঠন করে। নোবেল
কমিটি নিযুক্ত বিশেষজ্ঞ ছিলেন অস্কার ক্লেইন। সেই কমিটির রিপোর্টে সত্যেন বসুর
গবেষণাকাজের মূল্যায়ন করে নোবেল পুরষ্কারের জন্য বিবেচনার যোগ্য কি না সে সম্পর্কে
মন্তব্য করা হয়। সত্যেন বসু সম্পর্কে নোবেল কমিটির রিপোর্টে লেখা ছিল:[1]
“Professor S.N. Bose,
Kolkata, has been proposed this year for the Nobel Prize in Physics by
Professor K. Banerjee, Allahabad, for the quantum statistics named after him
and for his contribution to Einstein’s unified field theory.”
“In 1924, in two publications derivation of
Planck’s heat radiation by Bose, inspired Einstein formulate a theory of the
ideal gas degeneration at low temperatures; which in turn provided the
background for Fermi treatment of the same problems on the basis of the Pauli
Exclusion Principle (1926). The same year Paul A.M. Dirac showed that both
forms of quantum statistics could be based on the rational quantum mechanics,
which, as he and Werner Heisenberg showed, contains two classes of physically
possible solutions, the symmetrical, corresponding to the Bose-Einstein
statistics, and the anti-symmetric, corresponding Fermi statistics.”
"Although Bose’s
work of 1924 has been an important contribution; but it is not so distinguished
as the work of other physicists. Thus it cannot be rewarded with a Nobel
Prize."
বাংলায়
অনুবাদ করলে দাঁড়ায়:
"এ
বছরের পদার্থবিজ্ঞানে নোবেল পুরষ্কারের জন্য কলকাতার প্রফেসর এস. এন. বোসকে মনোনয়ন নিয়েছেন এলাহাবাদের প্রফেসর কে. ব্যানার্জি। কোয়ান্টাম
স্ট্যাটিসটিক্স যা তাঁর নামে নামকরণ করা হয়েছে এবং আইনস্টাইনের ইউনিফাইড ফিল্ড
থিওরিতে অবদান রাখার জন্য প্রফেসর বোসকে এই মনোনয়ন দেয়া হয়েছে।"
"১৯২৪
সালে বোসের প্ল্যাংকের তাপ বিকিরণের সূত্র নির্ণয় সংক্রান্ত দুটো গবেষণাপত্র
দ্বারা উৎসাহিত হয়ে আইনস্টাইন নিম্ন তাপমাত্রায় আদর্শ গ্যাসের আচরণ সম্পর্কিত
তত্ত্ব প্রতিষ্ঠা করেছেন। সেখান থেকে পাউলি এক্সক্লুশান প্রিন্সিপাল ব্যবহার করে
একই সমস্যার ফার্মির পদ্ধতিতে সমাধানের উপায় বের করা হয় (১৯২৬)। একই বছর পি এ এম
ডিরাক দেখান যে কোয়ান্টাম স্ট্যাটিসটিক্সের দুই ধরনের অবস্থা থেকেই কোয়ান্টাম
মেকানিক্সের মূল সূত্র প্রতিপাদন করা যায়, যা তিনি এবং ভার্নার হাইজেনবার্গ
দেখিয়েছেন, যেটা দুই ধরনের সম্ভাব্য সমাধান দেয়। সাম্য অবস্থার সাথে বোস-আইনস্টাইন
এবং অসাম্য অবস্থার সাথে ফার্মি স্ট্যাটিস্টিক্স জড়িত।"
"যদিও
বোসের ১৯২৪ সালের কাজ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, কিন্তু এই কাজটি অন্যান্য
পদার্থবিজ্ঞানীদের কাজের মত গুরুত্বপূর্ণ নয়। তাই এই কাজের জন্য নোবেল পুরষ্কার
দেয়া যায় না।"
১৯৫৮ এবং ১৯৬২ সালে আরো দু'বার মনোনয়ন
দেয়া হলেও নোবেল কমিটি
সত্যেন বসুকে নিয়ে আর কোন
রিপোর্টও তৈরি করেনি।
সত্যেন বসু নোবেল পুরষ্কার পাননি তাতে কী হয়েছে!
তাঁর তত্ত্ব ইতোমধ্যেই চার বার নোবেল পুরষ্কার পেয়ে গেছে। আর কী চাই?
সত্যেন্দ্রনাথ বসুর বই
১। The principle of relativity, Original papers by A. Einstein and H. Minkowski, translated into English by M. N. Saha and S. N. Bose, with an historical introduction by P. C. Mahalanobis, University of Calcutta, 1920.
২। বিজ্ঞানের সংকট ও অন্যান্য প্রবন্ধ, লেখক সমবায় সমিতি, কলকাতা, ১৯৬৪।
৩। সত্যেন্দ্রনাথ বসু রচনা সংকলন, বঙ্গীয়
বিজ্ঞান পরিষদ, কলকাতা, ১৯৮০।
সত্যেন্দ্রনাথ বসুর গবেষণাপত্র
1918
1. Megh Nad Saha and Satyendra Nath
Basu, On the Influence of the
Finite Volume of Molecules on the Equation
of State, Phil. Mag. Ser. 6, 36, pp. 199-203 (1918).
1919
2. Satyendranath Basu, The Stress-Equations of Equilibrium, Bull Cal Math Soc 10, pp. 117-121, (1919) (Calcutta Mathematical Society).
3. Satyendranath Basu, On the
Herpolhode, Bull. Cal. Math.
Soc. 11, pp. 21-22 (1919).
1920
4. M. N. Saha and S. N. Basu, On The Equation of State, Phil. Mag. Ser. 6, 39, p. 456 (1920).
5. S. N. Basu, On the Deduction of Rydberg's Law from the Quantum Theory of Spectral Emission,
Phil. Mag. 40, pp. 619-627 (1920).
1924
6. Bose, Plancks Gesetz und Lichtquantenhypothese (Planck's Law and the Light-Quantum Hypothesis), Z. Physik 26, pp. 168-171 (1924).
7. S. N. Bose, Wiirmegleichgewicht im Strahlungsfeld bei Anwesenheit von Materie (Thermal
Equilibrium in the Radiation Field in
the Presence of Matter), Z. Physik 27, pp. 384-393 (1924).
1927
8. Susil Chandra Biswas and S. N. Bose, Measurements of the Decomposition Voltage in Non-aqueous
Solvents, English
translation of Z Phys Chem 125, pp. 442- 451,1927
(Johnson Reprint Corporation, NY).
1929
9. S. N. Bose and S. K. Mukherjee, Beryllium Spectrum in the Region l =
3367-1964. Phil Mag Ser 7,7, pp. 197- 200,1929 (Taylor and Francis, London).
1936
10. S. N. Bose, On the Complete Moment-Coefficients of the D2-Statistic, Sankhya
~ Ind. J. Stat. 2, pp. 385-396 (1936).
1937
11. S. N. Bose, On the Moment-Coefficients of the D2- Statistic and Certain Integral and Differential Equations Connected with the Multivariate Normal Population, Sankhya ~ Ind. J. Stat.3, pp. 105-124 (1937).
12. S. N. Bose, Recent Progress in Nuclear Physics, Science & Culture, 2, p 473 (1937).
13. S. N. Bose and S. R. Khastgir, Anomalous Dielectric Constant of Artificial Ionosphere, Sci.
& Cult. 3, pp. 335-337
(1937).
1938
14. S. N. Bose, On the Total Reflection of Electromagnetic Waves in the Ionosphere, Ind. J. Phys. 12,
pp. 121-144 (1938).
1939
15. S. N. Bose, Studies in Lorentz Group, Bull. Cal. Math. Soc.
31, pp. 137-147 (1939).
1941
16. S. N. Bose and S. C. Kar, The Complete Solution of the Equation: , Proc. Nat. Inst. Sc. India 7, pp.
93-102 (1941).
1943
17. S. N. Bose and P. K. Dutta, Reaction of Sulphonazides with Pyridine: Salts and Derivatives of Pyridineamine, Science and Culture, 8, p48 (1943).
18. S. N. Bose and K. Basu, A Note on Dirac Equation and the Zeeman Effect, Ind. J. Phys. 17, pp.
301-308 (1943).
1944
19. S. N. Bose, The Classical Determinism and the Quantum Theory, 31st Indian Science
Congress Presidential Address, Proc Ind Sci Cong 31, pp.1-6, 1944 (Asiatic Society of Bengal)
1945
20. S. N. Bose, On an Integral Equation Associated with the Equation for Hydrogen Atom, Bull. Cal. Math. Soc. 37, pp.
51-61 (1945).
1950
21. S. N. Bose and R. K. Datta, Germanium in Sphalerite from Nepal, Letters to the Editor, J Sci Indust Res 9B, pp.52-53, 1950.
22. R. K. Dutta & S. N. Bose, Extraction of Germanium from Sphalerite collected from Nepal, Part I, Jour.Sci. Indust. Res.9B, p251-252 (1950).
23. R. K. Dutta and S. N. Bose, Extraction of Germanium from Sphalerite collected from Nepal, Part II, Jour.Sci. Indust. Res.9B, p271-272 (1950).
1953
24. Note of S. N. Bose, presented by L. de Broglie, The Identities of Divergence in the New Unitary Theory [English translation of] Comptes rendus de L 'Academie des Sciences 236, pp. 1333-1335 (1953).
25. S. N. Bose, A Unitary Field Theory with [English translation of] Le Jour de Phys et le Radium (Paris), 14, pp. 641-644 (1953).
26. S. N. Bose, Certain Consequences of the Existence of the Tensor g in the Affine Relativistic
Field [English translation
of] Le Jour de Phys et le Radium (Paris), 14, pp.
645-647 (1953).
1954
27. S. N. Bose, The Affine Connection in Einstein's New Unitary Field Theory, Ann. Math. USA
59, pp. 171-176 (1954) (Princeton
University, NJ)
1955
28. S. N. Bose, A Report on the Study of Thermoluminescence, Dr D.M. Bose Seventieth Birthday Commemoration Volume, Tran. Bose Res. Inst., 20, p177 (1955).
29. S. N. Bose, Solution of a Tensor Equation Occurring in the Unitary Field Theory [English translation of] Bull. Soc.
Math. 83, pp. 81-88 (1955).
তথ্যসূত্র
1. মুহাম্মদ ইব্রাহীম, সত্যেন্দ্রনাথ বসু, বাংলাদেশ শিশু একাডেমী, ঢাকা, ১৯৯৫।
2. তপন চক্রবর্তী (সম্পাদক), সত্যেন্দ্রনাথ বসু, বাংলা একাডেমী, ঢাকা, ১৯৮৬।
3. Ioam
James, Remarkable Physicists From Galileo to Yukawa, Cambridge University
Press, UK, 2004.
4. C. K.
Majumdar, Partha Ghose, Enakshi Chatterjee, Samik Bandopadhyay, Santimay
Chatterjee (editors), S. N. Bose: The Man and His Work, S. N. Bose
National Centre for Basic Sciences, Calcutta, 1994.
5. Banesh
Hoffmann, Albert Einstein Creator & Rebel, New American Library, New
York, 1972.
6. Walter
Issacson, Einstein His Life and Universe, Simon & Schuster, New York
2007.
7. এ এম হারুন অর রশীদ, বিজ্ঞানসমগ্র, অনুপম প্রকাশনী, ঢাকা, ২০১০।
8. দেবীপ্রসাদ রায়, সত্যেন্দ্রনাথ বসু চেনা বিজ্ঞানী অজানা কথা, আনন্দ
পাবলিশার্স, কলকাতা, ২০১২।
9. Kameshwar
C. Wali, Satyendra Nath Bose His Life and Times, World Scientific,
Singapore, 2009.
10. Santimay Chatterjee and Enakshi Chatterjee, Satyendra Nath Bose, Calcutta, 1994.
11. সত্যেন্দ্রনাথ বসু রচনা সংকলন,
বঙ্গীয় বিজ্ঞান পরিষদ, কলকাতা, ১৯৯৮।
12. Stephen Hawking, A Brief
History of Time, Bantam Books, New York, 1988.
13. D. M. Bose, Meghnad Saha Memorial Lecture, 1965. Proceedings
of the National Institute of Sciences of India, 1967. 33A(3 & 4): p. 111-132.
14. Megh Nad Saha and Satyendra Nath Basu, On the Influence of the Finite Volume
of Molecules on the Equation
of State, Phil. Mag. Ser. 6, 36, pp.
199-203 (1918).
15. Satyendranath Basu, On the Herpolhode, Bull. Cal.
Math. Soc. 11, pp. 21-22 (1919).
16. Satyendranath Basu, The
Stress-Equations of Equilibrium, Bull Cal Math Soc 10, pp. 117-121, (1919)
(Calcutta Mathematical Society).
17. Nature, Volume 110, 26 August 1922, London.
18. M. N. Saha and S. N. Basu, On The Equation of State,
Phil. Mag. Ser. 6, 39, p. 456 (1920).
19. S. N. Basu, On the Deduction of Rydberg's Law from the
Quantum Theory of Spectral Emission, Phil. Mag. 40, pp. 619-627 (1920).
20. Banglapedia,
National Encyclopedia of Bangladesh. Online. Last Modified 12 August 2014.
Accessed 1 Jan 2019
21. প্রদীপ দেব, 'মেঘনাদ সাহা বিপ্লবী পদার্থবিজ্ঞানী',
মীরা প্রকাশন, ঢাকা, ২০১৮।
22. প্রদীপ দেব, "জগদীশচন্দ্র বসু
বিশ্বের প্রথম জীবপদার্থবিজ্ঞানী", মীরা প্রকাশন, ঢাকা,
২০১৬।
23. প্রদীপ দেব, "চন্দ্রশেখর
ভেঙ্কট রামন এশিয়ার প্রথম নোবেলবিজয়ী পদার্থবিজ্ঞানী", মীরা প্রকাশন,
ঢাকা, ২০১৭।
24. শ্যামল
চক্রবর্তী. বিশ্বসেরা বিজ্ঞানী. কলকাতা: শিশু সাহিত্য সংসদ ১৯৯৯.
25. প্রদীপ দেব, 'উপমহাদেশের
এগারজন পদার্থবিজ্ঞানী', মীরা প্রকাশন, ঢাকা, ২০১৪।
26. প্রদীপ দেব, আইনস্টাইনের কাল, মীরা প্রকাশন, ঢাকা, ২০০৬,
২০১২।
27. প্রদীপ দেব, কোয়ান্টাম ভালোবাসা,
মীরা প্রকাশন, ঢাকা, ২০১৪।
28. প্রদীপ দেব, রেডিয়াম ভালোবাসা,
মীরা প্রকাশন, ঢাকা, ২০১৪।
29. রমেশচন্দ্র
মজুমদার, জীবনের স্মৃতিদীপে, জেনারেল প্রিন্টার্স অ্যান্ড পাবলিশার্স
লিমিটেড, কলকাতা, ১৯৭৮।
30. Girijapati Bhattacharjee, My Friend Satyen,
Science Today, January 1974.
31. Jagadish Mehra, Satyendra
Nath Bose, Biographical Memoirs of Fellows of the Royal Society, Vol 21
(Nov 1975), pp. 116-154.
32. F. London, The A-phenomenon of liquid helium and the
Bose- Einstein degeneracy, Nature,
Lond. 141, 643-644 (1938); On the
Bose-Einstein condensation, Phys. Rev. 54, 947-954 (1938).
33. P. A. M. Dirac, On the theory of quantum mechanics,
Proc. R. Soc. Lond. A 112, 661-77
(1926).
34. রবীন
বন্দ্যোপাধ্যায়, বিজ্ঞানাচার্য সত্যেন্দ্রনাথ বসু, শ্রীভূমি পাবলিশিং
কোম্পানী, কলকাতা-৯, ১৩৬৭ বাংলা।
35. পূর্ণিমা
সিংহ, "সত্যেন বসুর ব্যক্তিত্ব ও মনের ধারা', দেশ, ২৯ অক্টোবর ১৯৭৭।
36. Ajit Roy, Two Famous
Bengali Scientists Some Personal Memories, Economic and Political Weekly,
Vol. 28, No 17 (Apr 24 1993), pp796-797.
37. The Nobel Committee’s
Expert’s Report 1956.
38. Rajinder Singh, The ultimate facts - S. N. Bose
and the missed physics nobel prize, Science and Culture, January-February
2017, page - 32-35.
কৃতজ্ঞতাস্বীকার
অজিত পোদ্দার - সার্বিক
তত্ত্বাবধান
অভ্র - বাংলা
সফ্টঅয়্যার
আর-এম-আই-টি
ইউনিভার্সিটি লাইব্রেরি
ইউনিভার্সিটি অব
মেলবোর্ন লাইব্রেরি
গুগল - ছবি
ও তথ্য
লা ট্রোব
ইউনিভার্সিটি লাইব্রেরি
S N Bose National Centre for Basic Sciences - তথ্য ও ছবি
সানজিদা নাসিম - পান্ডুলিপি
নিরীক্ষণ
শ্রাবণী পাল - পান্ডুলিপি নিরীক্ষণ
মোহাম্মদ হারুন অর
রশীদ - মীরা
প্রকাশন
[1] The Nobel Committee’s
Expert’s Report 1956.
Rajinder
Singh, The ultimate facts - S. N. Bose and the missed physics Nobel prize,
Science and Culture, January-February 2017, page - 32-35.
No comments:
Post a Comment