Sunday 5 May 2024

সৈয়দ শামসুল হকের কবিতা - দাঁড়িয়ে থাকা মানুষের গান



১৯৯৫ সালের ২৩ আগস্ট দিনাজপুরের কাহারোল উপজেলার দশমাইল এলাকায় কিছু পুলিশ সদস্য ইয়াসমিন নামের এক ষোল বছরের কিশোরীকে ধর্ষণের পর হত্যা করে। এই ঘটনার প্রতিবাদে মানুষ বিক্ষুব্ধ হয়ে উঠলে পুলিশ গুলি করে আরো সাতজন মানুষকে হত্যা করে। 

১৯৯৩ সালের ১০ জানুয়ারি মৌলভীবাজার জেলার কমলগঞ্জ উপজেলার ছাতকছড়া গ্রামের গৃহবধূ নূরজাহান বেগম গ্রামের মোল্লাদের ফতোয়ার শিকার হয়ে আত্মহত্যা করতে বাধ্য হয়। বিয়ের পরেরদিনই গ্রামের মোল্লারা একত্রিত হয়ে নূরজাহান ও তার দ্বিতীয় স্বামী মোতালিবকে ডেকে এনে শালিস বসায়। সেখানে তাদের বিয়েকে অবৈধ ঘোষণা করে নূরজাহান ও মোতালিবকে গলা পর্যন্ত মাটিতে পুঁতে ১০১টি পাথর নিক্ষেপ এবং ১০১টি দোররা মারার আদেশ দেয়া হয়। বিয়েতে যারা উপস্থিত ছিলেন তাদেরকেও সবার সামনে কান ধরে উঠবস করার আদেশ দেয়া হয়। মোতালিবের বাবার অনুরোধে বিচারের শাস্তি কিছুটা কমিয়ে নূরজাহান ও মোতালিবকে কোমর পর্যন্ত মাটিতে পুঁতে ৫১টি পাথর এবং ৫১টি দোররা মারা হয়। শাস্তিভোগের পর অপমান সহ্য করতে না পেরে বিষপান করে আত্মহত্যা করে নূরজাহান। 

১৯৯৬ সালের ৯ অক্টোবর চট্টগ্রামের রাউজানে সন্ধ্যায় ১৭ বছরের সীমা চৌধুরিকে রাস্তা থেকে তুলে নিয়ে যায় তিনজন পুলিশ। থানায় পুলিশের হাতে সীমা ধর্ষণের শিকার হয়। এই ঘটনার বিরুদ্ধে মামলা হলে পুলিশ অপ্রাপ্তবয়স্ক সীমাকে রাষ্ট্রীয় হেফাজতে রাখে জেলা কারাগারে। ১৯৯৭ সালের ৭ ফেব্রুয়ারি সেখানে সীমা চৌধুরির মৃত্যু হয়। 

এই তিনটি ঘটনার প্রেক্ষাপটে লেখা সৈয়দ শামসুল হকের কবিতা “দাঁড়িয়ে থাকা মানুষের গান”। কবিতাটি লেখা হয়েছিল ১৯৯৯ সালের ২৩শে ডিসেম্বর। 


No comments:

Post a Comment

Latest Post

Dorothy Crowfoot Hodgkin

  Look closely at the fingers of the person in the picture. Her fingers had not bent in this way due to age; she had been suffering from chr...

Popular Posts