Sunday, 8 August 2021

নোবেলবিজয়ী পদার্থবিজ্ঞানী - পল ডিরাক

 



বিংশ শতাব্দীর তত্ত্বীয় পদার্থবিজ্ঞানের সবচেয়ে বড় আবিষ্কার - কোয়ান্টাম মেকানিক্স। শতাব্দী প্রাচীন ক্ল্যাসিক্যাল মেকানিক্স পরমাণু ও পরমাণুর চেয়ে ছোট অতিপারমাণবিক কণার গতিপ্রকৃতি সঠিকভাবে ব্যাখ্যা করার জন্য যথেষ্ট শক্তিশালী নয়। পরমাণুর গঠন ও গতিপ্রকৃতি সম্পর্কে নতুন নতুন ধারণা তৈরি হবার সাথে সাথে সেগুলোকে সঠিকভাবে ব্যাখ্যা করার জন্য একটা নতুন গাণিতিক প্রক্রিয়ার যে ভীষণ দরকার তা বিংশ শতাব্দীর শুরুতেই বুঝতে পেরেছিলেন বিজ্ঞানীরা। ম্যাক্স প্ল্যাংক, ম্যাক্স বর্ন, নিল্‌স বোরসহ যে ক’জন বিজ্ঞানীর হাতে কোয়ান্টাম মেকানিক্সের জন্ম ও বেড়ে ওঠা - পল ডিরাক তাঁদের অন্যতম। 

কোয়ান্টাম মেকানিক্সের দুটো প্রধান সমীকরণের একটি হলো শ্রোডিংগার সমীকরণ এবং অন্যটি ডিরাক সমীকরণ। কোয়ান্টাম মেকানিক্সে আইনস্টাইনের থিওরি অব রিলেটিভিটির প্রয়োগ করে রিলেটিভিস্টিক কোয়ান্টাম মেকানিক্সের ভিত্তি প্রতিষ্ঠা করেন পল ডিরাক। কোয়ান্টাম ইলেকট্রোডায়নামিক্সের সূচনা হয় ডিরাকের হাতে। পরে রিচার্ড ফাইনম্যান ইলেকট্রোডায়নামিক্সের সম্প্রসারণ করেন। পদার্থবিজ্ঞানে অ্যান্টিম্যাটার বা প্রতি-পদার্থের ধারণা ডিরাকের সমীকরণ থেকে উদ্ভূত। ১৯২৮ সালে ডিরাকই সর্বপ্রথম পজিট্রন কণার অস্তিত্বের ধারণা দেন। পরে ১৯৩২ সালে পরীক্ষাগারে এই পজিট্রন আবিষ্কার করেন বিজ্ঞানী কার্ল এন্ডারসন। ১৯৩০ সালে প্রকাশিত পল ডিরাকের বই ‘প্রিন্সিপলস অব কোয়ান্টাম মেকানিক্স’কে আধুনিক পদার্থবিজ্ঞানের ‘বাইবেল’ মনে করা হয়। কারণ ওটাই কোয়ান্টাম মেকানিক্সের সর্বপ্রথম সার্থক বই। কোয়ান্টাম মেকানিক্সের গাণিতিক ভিত্তির স্বীকৃতি স্বরূপ ১৯৩৩ সালে পদার্থবিজ্ঞানের নোবেল পুরষ্কার দেয়া হয় আরভিন শ্রোডিংগার ও পল ডিরাককে। পল ডিরাকের বয়স তখন মাত্র ৩১ বছর। নোবেল পুরষ্কারের ইতিহাসে সবচেয়ে কমবয়সী নোবেলবিজয়ী তাত্ত্বিক পদার্থবিজ্ঞানী হলেন পল ডিরাক। 

আধুনিক পদার্থবিজ্ঞানের গাণিতিক ভিত্তি রচনায় পল ডিরাকের ভূমিকা অনস্বীকার্য। স্ট্যান্ডার্ড মডেল অনুযায়ী মৌলিক কণাগুলোকে প্রধানত দু’ভাগে ভাগ করা যায় - বোসন আর ফার্মিয়ন। বোসন কণাগুলো সত্যেন বসু ও আলবার্ট আইনস্টাইনের ‘বোস-আইনস্টাইন পরিসংখ্যান’ মেনে চলে, আর ফার্মিয়ন কণাগুলো মেনে চলে এনরিকো ফার্মি ও পল ডিরাকের ‘ফার্মি-ডিরাক পরিসংখ্যান’। 

ত্রিশ বছর বয়স হবার আগেই ডিরাক হয়ে ওঠেন গাণিতিক পদার্থবিজ্ঞানের উজ্জ্বল নক্ষত্র। মাত্র ২৮ বছর বয়সেই রয়েল সোসাইটির ফেলো নির্বাচিত হয়েছেন। ১৯৩২ সালে মাত্র ত্রিশ বছর বয়সে কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ে লুকাসিয়ান প্রফেসর পদে যোগ দেন - যে পদে স্যার আইজাক নিউটন অধিষ্ঠিত ছিলেন এক সময়। পরের বছর নোবেল পুরষ্কার পাওয়ার পর খ্যাতির শিখরে উঠে যান পল ডিরাক। অথচ এই খ্যাতি তিনি কখনোই চাননি। কারণ তিনি ছিলেন স্মরণকালের সবচেয়ে অসামাজিক পদার্থবিজ্ঞানী। প্রয়োজনের বাইরে তিনি কারো সাথে একটা কথাও বলতেন না।  

পলের বাবা চার্লস ডিরাক ছিলেন সুইজারল্যান্ডের নাগরিক। ১৮৮৮ সালে চার্লস ইংল্যান্ডে আসেন এবং ব্রিস্টলের স্কুলে ফরাসি ভাষার শিক্ষকতা শুরু করেন। পলের মা ফ্লোরেন্স হল্টেন ছিলেন ইংল্যান্ডের কর্নওয়েলের অধিবাসী। ফ্লোরেন্স তখন লাইব্রেরিয়ান হিসেবে কাজ করতেন ব্রিস্টলে। লাইব্রেরিতেই চার্লসের সাথে ফ্লোরেন্সের পরিচয় হয় এবং ১৮৯৯ সালে তাঁদের বিয়ে হয়। 

পরের বছর ডিরাক দম্পতির প্রথম সন্তান রেগিনাল্ডের জন্ম হয়। তারপর ১৯০২ সালের ৮ই আগস্ট জন্ম নেয় তাঁদের দ্বিতীয় সন্তান পল এবং কয়েক বছর পর জন্ম হয় পলের ছোটবোন বিয়াট্রিসের। 

চার্লস ডিরাক তাঁর ভাষা ও পারিবারিক সংস্কারের ব্যাপারে ছিলেন ভীষণ গোঁড়া। পরিবারের ছেলেমেয়েদের নামের অনেকগুলো অংশ। চার্লসের পুরো নাম ছিল - চার্লস এড্রিয়েন ল্যাডিসলাস ডিরাক। ঐতিহ্য অনুসারে তিনি বড়ছেলের নাম রাখলেন রেগিনাল্ড চার্লস ফেলিক্স ডিরাক, ছোটছেলের নাম রাখলেন পল এড্রিয়েন মরিস ডিরাক, আর মেয়ের নাম রাখলেন বিয়াট্রিস ইসাবেল মার্গারিট ওয়ালা ডিরাক। 

পরিবারের অধিকর্তা হিসেবে চার্লস ডিরাক ছিলেন ভীষণ কড়া। বাড়িতে তাঁর কথার বাইরে কারো কিছু করার উপায় ছিল না। ভালবেসে বিয়ে করলেও ফ্লোরেন্সের সাধ্য ছিলো না চার্লসের মতের বিরুদ্ধে কিছু করেন। চার্লসের মার্তৃভাষা ফরাসি। তাই তিনি ছেলেমেয়েদের ফরাসি ভাষা শেখানোর উদ্দেশ্যে বাড়িতে ফরাসি ভাষায় কথা বলা বাধ্যতামূলক করে দিলেন। 

চার্লস যখন বাড়িতে থাকেন ছেলে-মেয়েরা ভয়ে ভয়ে ফরাসি ভাষায় কথা বলে, কিন্তু তাঁর অনুপস্থিতিতে চলে ইংরেজি। চার্লস ব্যাপারটা বুঝতে পারলেন। তিনি নতুন নিয়ম চালু করলেন - খাবার টেবিলে বিশুদ্ধ ফরাসি ভাষায় কথা বলতে হবে। ভাষা যতক্ষণ না শুদ্ধ হচ্ছে ততক্ষণ খেতে পাবে না। 

ক’দিন পরেই ছেলে-মেয়েরা নিজেদের নিয়ম চালু করলো। তারা চার্লসের সাথে ডাইনিং টেবিলে না বসে মায়ের সাথে রান্নাঘরে বসে খেতে শুরু করলো। কিন্তু এরকম অবাধ্যতা চার্লস কেন সহ্য করবেন? তিনি ছেলে-মেয়েদের ধরে মার লাগালেন। কিন্তু তাতেও তেমন কোন লাভ হলো না। পল ছাড়া আর কেউই তাঁর সাথে খেতে বসলো না। 

পল খুবই সরল ছেলে। তার শারীরিক গঠন বয়সের তুলনায় এতই ছোট যে বাড়িতে তার নামই হয়ে গেছে ‘টাইনি’। ডাক্তার যদিও সব রকমের পরীক্ষানিরীক্ষা করে বলেছেন যে পলের বড়ধরনের কোন অসুখ নেই, কিন্তু হজমশক্তি তার খুবই কম। 

বাবাকে ভীষণ ভয় পায় পল। আর বাবাও তার ওপরই সমস্ত ভাষাজ্ঞান প্রয়োগ করতে শুরু করলেন। পল কোন ফরাসি শব্দ  ঠিকমত উচ্চারণ করতে না পারলে খাবার পেতো না। ফলে প্রচন্ড মানসিক চাপে উচ্চারণ ভুল হয়ে যাবার ভয়ে কোন কথাই বলতে পারতো না সে। আস্তে আস্তে দেখা গেলো পল প্রয়োজন না হলে কোন কথাই বলে না; আর যদিও বলে তাও মাত্র একটা বা দুটো শব্দ।  

ব্রিস্টলের বিশপ প্রাইমারি স্কুলে পড়ালেখা শুরু হয় পলের। স্কুলে গণিতের প্রতি ভালোবাসা এবং অসম্ভব গাণিতিক দক্ষতা দেখা দেয় তার। বারো বছর বয়সে প্রাইমারি স্কুলের পড়াশোনা শেষ করে হাইস্কুলে ভর্তি হলো পল। তখন প্রথম বিশ্বযুদ্ধ শুরু হয়ে গেছে। স্কুলের উঁচুক্লাসের সব ছেলেরা বাধ্য হয়ে যুদ্ধের সৈন্যদলে যোগ দিয়েছে। ফলে স্কুলে নিচুক্লাসের ছাত্রছাত্রীদের লাইব্রেরির উঁচুক্লাসের বই পেতে সুবিধে হয়। পল লাইব্রেরিতে গিয়ে উঁচুক্লাসের গণিত ও বিজ্ঞানের বই পড়তে শুরু করে। ১৯১৮ সালে তার স্কুলের পড়াশোনা শেষ হলো। 

গণিত নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার ইচ্ছে ছিল পলের। কিন্তু তখন গণিত নিয়ে পাস করে শুধুমাত্র গণিতের শিক্ষক হওয়া ছাড়া আর কোন সুযোগ ছিল না। পল তার বাবার মতো শিক্ষক হতে চাননি কখনো, ইঞ্জিনিয়ার হওয়াও তাঁর লক্ষ্য নয়। কিন্তু তাঁর বাবার নির্দেশে ব্রিস্টল ইউনিভার্সিটিতে ইলেকট্রিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং-এ ভর্তি হতে বাধ্য হলেন। বাবার মতের বিরুদ্ধে যাবার মত মানসিক জোর তাঁর নেই। দু’বছর আগে পলের বড়ভাই রেগিনাল্ডকেও তাঁর বাবা বাধ্য করেছেন ইঞ্জিনিয়ারিং-এ ভর্তি হতে।   

১৯২১ সালে ইঞ্জিনিয়ারিং পাস করেন পল। কিন্তু পাস করার পর অনেক জায়গায় দরখাস্ত করেও কোন ভালো চাকরি পেলেন না। আবার গণিত নিয়ে পড়াশোনা করার ইচ্ছে চাঙা দিলো মনে। কিন্তু পল জানেন পড়াশোনার খরচ নিজেকেই জোগাড় করতে হবে। বাবা একটা টাকাও দেবেন না। কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের স্কলারশিপ পরীক্ষা দিলেন ১৯২১ সালে। 

কেমব্রিজের সেন্ট জোন্স কলেজে গণিত নিয়ে পড়াশোনা করার জন্য একটা স্কলারশিপ তিনি পেলেন ঠিকই - কিন্তু স্কলারশিপের টাকা দিয়ে পড়াশোনার পুরো খরচ চালানো সম্ভব নয়। বাবার সামর্থ্য থাকলেও বাবা টাকা দেবেন না। স্থানীয় সরকারের কাছ থেকে অর্থসাহায্যের জন্য দরখাস্ত করলেন পল। কিন্তু অর্থসাহায্য পাওয়া গেলো না এই কারণে যে তার বাবা চার্লস ডিরাক জন্মসূত্রে ব্রিটিশ নন। কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার স্বপ্ন ভেঙে গেলো পল ডিরাকের। 

ব্রিস্টল ইউনিভার্সিটিতে গণিত বিষয়ে ভর্তির সুযোগ মিললো স্কলারশিপসহ। ১৯২৩ সালে গণিতে ফার্স্ট ক্লাস অনার্স ডিগ্রি পেলেন পল ডিরাক। এবার সুযোগ এলো কেমব্রিজ ইউনিভার্সিটিতে পড়ার। কেমব্রিজের একটি রিসার্চ ফেলোশিপ পেলেন তিনি। পিএইচডি’র গবেষণা শুরু করলেন কেমব্রিজের সেন্ট জোন্‌স কলেজে। 

ডিরাক প্রথমে কাজ শুরু করেছিলেন প্রফেসর কানিংহামের অধীনে। কিন্তু কানিংহামের ছাত্রসংখ্যা বেশি হয়ে যাওয়াতে ডিরাক চলে আসেন প্রফেসর রালফ ফাউলারের অধীনে। কোয়ান্টাম থিওরির ওপর কাজ শুরু করলেন। দু’বছরের মধ্যে তিনি ছয়টি গবেষণাপত্র প্রকাশ করেন। পরের বছরের মধ্যে আরো পাঁচটি গবেষণাপত্র প্রকাশ করে ফেললেন। ১৯২৬ সালে তিনি গণিতে পিএইচডি ডিগ্রি পেলেন। ডক্টরেট থিসিস সাবমিট করার আগেই তাঁর ১১টি গবেষণাপত্র প্রকাশিত হয় - যা সেই সময়ের সবচেয়ে প্রতিভাশালী পদার্থবিদ্‌দের জন্যেও খুব একটা সহজ কাজ ছিল না। ডিরাকের পিএইচডি থিসিসের শিরোনাম ছিল ‘কোয়ান্টাম মেকানিক্স’। 

পিএইচডি’র পর তিনি কোপেনহ্যাগেনে গিয়ে নিল্‌স বোরের সাথে কাজ করেন কিছুদিন। নিল্‌স বোর ডিরাককে কয়েকদিন দেখেই বুঝতে পারলেন যে ছেলেটি জানে প্রচুর, কিন্তু বলে না কিছুই। ডেনমার্ক থেকে জার্মানির গোটিনগেনে গেলেন ১৯২৭ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে। সেখানে তিনি পরিচিত হলেন রবার্ট ওপেনহেইমার ও ম্যাক্স বর্নের সাথে। সেখান থেকে ফিরে এসে যোগ দিলেন কেমব্রিজ ইউনিভার্সিটিতে সেন্ট জোন্‌স কলেজের ফেলো হিসেবে। এসময় তিনি আইনস্টাইনের জেনারেল থিওরি অব রিলেটিভিটি সম্পর্কে আগ্রহী হয়ে ওঠেন। 

১৯২৮ সালে রিলেটিভিটি ও কোয়ান্টাম মেকানিক্সের সাথে গাণিতিক সম্পর্ক স্থাপন করেন ডিরাক। তাঁর বিখ্যাত ডিরাক সমীকরণের জন্ম হয় এসময়। ডিরাকই প্রথম ব্যক্তি যিনি ইলেকট্রোম্যাগনেটিক ফিল্ডের ওপর কোয়ান্টাম মেকানিক্স প্রয়োগ করেন। কোয়ান্টাম থিওরির এই ভিত্তিকে ডিরাক নাম দিলেন কোয়ান্টাম ইলেকট্রোডায়নামিক্স। কোয়ান্টাম মেকানিক্সের সিঙ্গুলার ডেল্টা ফাংশান - ডিরাকের অবদান। স্টেট-ভেক্টর ও তাদের আইগেন ভ্যালু প্রকাশ করার জন্য নতুন চিহ্নের প্রচলন করলেন করলেন ডিরাক। ব্র্যাকেট ভেঙে চালু করলেন ‘ব্রা’ <। ও ‘কেট’ ।> ফাংশান।  

১৯৩০ সালে ডিরাকের ‘প্রিন্সিপল্‌স অব কোয়ান্টাম মেকানিক্স’ বইটি প্রকাশিত হয়। একই বছর তিনি রয়েল সোসাইটির ফেলো নির্বাচিত হন। মাত্র আটাশ বছর বয়সে রয়েল সোসাইটির ফেলোশিপ তাঁর আগে আর কেউ পাননি। 

রয়েল সোসাইটির ফেলোশিপ পাবার পর কেমব্রিজ ফিলসফিক্যাল সোসাইটি’র হপকিন্স মেডেল পান ডিরাক। ১৯৩২ সালে কেমব্রিজের লুকাশিয়ান প্রফেসর পদে নিযুক্ত হন তিনি। কোয়ান্টাম মেকানিক্সের প্রথম কোর্স তিনিই পড়াতে শুরু করেন। রবার্ট ওপেনহাইমার, চন্দ্রশেখর সুব্রাহ্মনিয়াম, আবদুস সালাম, ডেনিস স্কায়ামা - যারা পরবর্তীতে খ্যাতিমান - এমন অনেক পদার্থবিজ্ঞানীই ডিরাকের ছাত্র ছিলেন। তবে ডিরাক তাঁর পিএইচডি স্টুডেন্টদের সাথেও খুব একটা কথা বলতেন না। তাই তাঁর ছাত্রদের হতে হতো অনেকটাই স্ব-নিয়ন্ত্রিত। ডেনিস স্কায়ামা ডিরাকের অধীনে পিএইচডি করে পরে কেমব্রিজে যোগ দেন। স্টিফেন হকিং স্কায়ামার অধীনে পিএইচডি করেন। 

ক্লাসে ডিরাক তাঁর কোয়ান্টাম মেকানিক্স বই থেকে হুবহু লাইনের পর লাইন বলে যেতেন - একটা শব্দও কম বা বেশি বলতেন না। ক্লাসের বাইরে কারো সাথে কথা বলার তো প্রশ্নই ওঠে না। ডিপার্টমেন্টের সহকর্মীদের সাথেও ‘ইয়েস’ ‘নো’ কিংবা ‘আই ডোন্ট নো’র বেশি কথা হয় না তাঁর। কেমব্রিজে ডিরাকের ছাত্ররা ‘ডিরাক’ নামে একটা নতুন একক চালু করে ফেলেছে। কথা বলার একক - ‘এক ডিরাক’ মানে এক ঘন্টায় একটি শব্দ।  

১৯৩৩ সালে ডিরাকের ল্যাগরেঞ্জিয়ান কোয়ান্টাম মেকানিক্স পেপার প্রকাশিত হয়। সেখান থেকেই অনুপ্রেরণা পেয়ে পরবর্তীতে রিচার্ড ফাইনম্যান তাঁর বিখ্যাত পাথ ইনটিগ্র্যাল সমীকরণ প্রতিষ্ঠা করেন। 

১৯৩৩ সালে পদার্থবিজ্ঞানের নোবেল পুরষ্কার পাবার কথা শুনে ভীষণ অবাক হয়ে যান পল ডিরাক। আরভিন শ্রোডিংগার নোবেল পুরষ্কার পাবেন তা তিনি জানতেন, কিন্তু শ্রোডিংগারের সাথে নিজেও যে নোবেল পুরষ্কার পাবেন তা তিনি কখনো আশা করেননি। নোবেল পুরষ্কার পাবার সাথে সাথে বিজ্ঞানীরা যে পাবলিক সেলিব্রেটি হয়ে যান তা ডিরাক জানেন। ডিরাক জনসমক্ষে আসতে চান না। স্টকহোমে গিয়ে নোবেল পুরষ্কার নিতে হবে, নোবেল বক্তৃতা দিতে হবে, পার্টিতে যোগ দিতে হবে - এসব ভাবতেই ডিরাকের অস্বস্তি লাগতে শুরু করলো। তিনি সিদ্ধান্ত নিলেন নোবেল পুরষ্কার প্রত্যাখ্যান করবেন। 

১৯০৮ সালের রসায়নে নোবেলবিজয়ী বিজ্ঞানী রাদারফোর্ড ডিরাকের সুপারভাইজার রাল্‌ফ ফাউলারের শ্বশুর। ডিরাককে খুব স্নেহ করেন রাদারফোর্ড। তিনি ডিরাককে অভিনন্দন জানালে ডিরাক বললেন, “আমি নোবেল পুরষ্কার প্রত্যাখ্যান করবো ভাবছি।”

“কেন?”

“হৈচৈ ভাল লাগে না।”

রাদারফোর্ড বুঝতে পারলেন ডিরাক কী বলতে চাইছেন। বললেন, “প্রত্যাখ্যান করলে তো হৈচৈ বেড়ে যাবে।”

“কীভাবে?”

“পুরষ্কার নিলে এক বছরের মধ্যেই লোকে তোমাকে ভুলে যাবে। পরের বছর অন্য কেউ নোবেল পুরষ্কার পাবে, তখন তাকে নিয়ে মেতে উঠবে। কিন্তু তুমি পুরষ্কার প্রত্যাখ্যান করলে প্রত্যেক বছরই লোকে তোমাকে নিয়ে হৈচৈ করবে।”

“ইয়েস।”

ডিসেম্বরে নোবেল পুরষ্কার নিতে স্টকহোমে গেলেন পল ডিরাক। 

পল ডিরাক সাংবাদিকদের কাছ থেকে পালিয়ে বেড়ালেও নাছোড়বান্দা সাংবাদিকদের কিছু প্রশ্নের উত্তর দিতেই হলো। 

“প্রফেসর ডিরাক, আপনার কোয়ান্টাম মেকানিক্স মানুষের দৈনন্দিন জীবনে কী কাজে লাগবে?”

“কোন কাজে লাগবে না।”

“ভবিষ্যতে কি কোন কাজে লাগতে পারে?”

“আমি জানি না। আমি আমার তত্ত্ব নিয়ে কাজ করছি। এই তত্ত্বকে কে কীভাবে কাজে লাগাবে তা জানা আমার কাজ নয়।”

“এখন কী নিয়ে কাজ করছেন?”

“পজিটিভ ইলেকট্রনের তত্ত্ব নিয়ে কাজ শুরু করেছি।”

“গবেষণা ছাড়া আপনার আর কী কী বিষয়ে আগ্রহ আছে?”

“মানে?”

“সাহিত্য, নাটক-থিয়েটার, সংগীত?”

“আমি সাহিত্য পছন্দ করি না। আমি থিয়েটার দেখতে যাই না। আমি কোন গান শুনি না। আমি আমার পারমাণবিক তত্ত্ব নিয়েই সুখে আছি।”

“আপনার গবেষণার ফল কি আপনার দৈনন্দিন জীবনে কোন প্রভাব ফেলেছে?”

“না। আমি যখন ঘুমাই, বা হাঁটতে যাই, বা ভ্রমণ করি - তখন আমি কোন কাজ করি না। আমার মস্তিষ্ক তখন পারমাণবিক তত্ত্ব নিয়ে ভাবে না। আমি এক সাথে একাধিক কাজ করতে পারি না।”

অদ্ভুত হলেও সত্যি যে ডিরাক এক সাথে দুটো সাধারণ কাজও করতে পারতেন না। একবার রাশিয়ায় ডিরাককে আমন্ত্রণ করে নিয়ে যাওয়া হয়েছে রিসার্চ স্টুডেন্টদের সেমিনার শোনার জন্য। ডিরাক চুপচাপ সেমিনার শুনলেন এবং যথারীতি কোন মন্তব্য করলেন না। সেমিনার শেষে প্রফেসর আর স্টুডেন্টরা ডিরাকের কাছে এসে জিজ্ঞেস করলেন, “প্রফেসর ডিরাক, আমাদের প্রেজেন্টেশান কেমন লাগলো আপনার?”

“আমার তো এখন তা বলার সময় নেই। আমি এখন পোস্টাপিসে যাচ্ছি।”

“স্যার, আমরাও আপনার সাথে আসি। আপনি হাঁটতে হাঁটতে  বলবেন।”

“আমি তো একসাথে দুটো কাজ করতে পারি না।”



কেমব্রিজে ডিরাকের কাজের ধরন খুবই নিয়মে বাঁধা। দিনে পাঁচ ঘন্টার বেশি গবেষণায় বিশ্বাসী নন ডিরাক। গরমের দিনে কাজের শেষে তিনি সাইকেল চালিয়ে চলে যান অনেক দূরে। পথে কোন বড় গাছ দেখলে হঠাৎ সাইকেল থেকে নেমে গাছে উঠে যান সুট-কোট-টাই সহ। [শীত-বসন্ত-গ্রীষ্ম-হেমন্ত সব  ঋতুতেই তাঁর একই পোশাক। একটা কোট না ছেঁড়া পর্যন্ত তিনি অন্য কোন কোট কেনেন না।] গাছের ওপর কিছুক্ষণ সময় কাটিয়ে নেমে আসেন। আবার সাইকেল চালিয়ে ফিরে আসার সময় কোন লেকের পাশে থেমে জামা-কাপড় ছেড়ে নেমে যান লেকের পানিতে, কিছুক্ষণ সাঁতার কাটেন। নোবেল পুরষ্কার পাবার পরেও তাঁর রুটিনে তেমন কোন পরিবর্তন নেই। 

গণিত ও তত্ত্বীয় পদার্থবিজ্ঞানের গবেষণার মাঝে মাঝে তিনি পরীক্ষামূলক কাজও করেন। তিনি যে একজন ফার্স্ট ক্লাস ইলেকট্রিক্যাল ইঞ্জিনিয়ার তা তিনি ভুলে যাননি। নিউক্লিয়ার আইসোটোপ সেপারেশনের কাজে উৎসাহ পেলেন ডিরাক। 
জার্মানিতে তখন হিটলারের স্বৈরাচার শুরু হয়ে গেছে। আইনস্টাইনসহ অনেক জার্মান বিজ্ঞানী দেশ ছেড়ে চলে গেছেন। ১৯৩৩ সালে আইনস্টাইন যোগ দিয়েছেন প্রিন্সটনের ইনস্টিটিউট অব এডভান্সড স্টাডিজে। সেখানে এক বছর ভিজিটিং প্রফেসর হিসেবে কাটানোর জন্য আমন্ত্রণ এসেছে ডিরাকের কাছেও। ১৯৩৪ সালের অক্টোবরে ডিরাক প্রিন্সটনে যোগ দিলেন।  ইনস্টিটিউট অব এডভান্সড স্টাডিজের ফাইন হলে ডিরাকের অফিস। ডিরাকের পাশের রুমেই বসেন ইউজিন উইগনার এবং তাঁর পাশের রুমে আইনস্টাইন। 
ডিরাক আর আইনস্টাইনকে একই সাথে প্রিন্সটনে পেয়ে বৈজ্ঞানিক মহলে একটা বিরাট আশার সঞ্চার হয়েছিল যে এই দু’জন মহারথী একসাথে কাজ করবেন। কিন্তু ডিরাক আর আইনস্টাইনের মধ্যে কোন রকমের বৈজ্ঞানিক সহযোগিতা গড়ে ওঠেনি। কারণ আইনস্টাইন ভালো ইংরেজি জানতেন না আর ডিরাক তাঁর স্বভাবমতো আইনস্টাইনের সাথেও কথা বলতে আগ্রহী ছিলেন না। 
সোভিয়েত ইউনিয়নে বিজ্ঞানী কাপিৎজাকে নজরবন্দী করে রাখা হয়েছে। কাপিৎজা রাশিয়ায় গিয়েছিলেন পারিবারিক কাজে। কিন্তু সেখান থেকে তাঁকে আর কেমব্রিজে ফিরতে দেয়া হচ্ছে না। স্ট্যালিন সরকার তাঁকে বলছেন সোভিয়েত ইউনিয়নে থেকে সরকারী বিজ্ঞানীদের কথামত কাজ করতে যা বৈজ্ঞানিক স্বাধীনতার পরিপন্থি। কাপিৎজার স্ত্রী আনা ডিরাকের সাহায্য চেয়েছেন। ডিরাক আমেরিকাতে যত পদার্থবিজ্ঞানী আছেন সবার কাছে চিঠি লিখে কাপিৎজার মুক্তির ব্যাপারে আন্তর্জাতিক চাপ দেয়ার চেষ্টা করছেন। তিনি ঠিক করেছেন আমেরিকা থেকে ফিরে রাশিয়ায় যাবেন কাপিৎজার সাথে দেখা করতে। 
১৯৩৫ সালের জুন মাসে আমেরিকা থেকে রাশিয়ার উদ্দেশ্যে রওনা হলেন ডিরাক একটা জাপানি জাহাজে চড়ে। রাশিয়ায় জুন থেকে আগস্ট পর্যন্ত কাটালেন ডিরাক। কাপিৎজার সাথে দেখা করলেন। কাপিৎজা মানসিকভাবে খুব ভেঙে পড়েছেন। সোভিয়েত সরকার ডিরাককে বাধা দিলেন না কোথাও। কিন্তু কাপিৎজাকে কিছুতেই কেমব্রিজে আসতে দিতে রাজী হলো না। কাপিৎজা ভাবছেন পদার্থবিজ্ঞানের গবেষণা বাদ দিয়ে মনোবিজ্ঞানের গবেষণা শুরু করবেন তাহলে সোভিয়েত বিজ্ঞানী আইভান পাভলভের সাথে কাজ করতে পারবেন।
১৯৩৭ সালের ২রা জানুয়ারি সেন্ট্রাল লন্ডনের হলবর্ন রেজিস্ট্রি অফিসে গিয়ে বিয়ে করেন ডিরাক বিয়ে করেন পদার্থবিজ্ঞানী ইউজিন উইগনারের বোন মার্গিটকে। 
কেমব্রিজ ইউনিভার্সিটিতে বেশ হৈচৈ পড়ে গেলো ডিরাকের বিয়ের সংবাদে। কেউ চিন্তাও করতে পারেননি যে ডিরাক মার্গিটের মত বিপরীত-স্বভাবের কাউকে বিয়ে করতে পারেন। রাদারফোর্ড তাঁর স্বভাবসুলভ উচ্চস্বরে বলতে লাগলেন - “ডিরাকের মত লোককে সামলানোর জন্য অভিজ্ঞতাসম্পন্ন কাউকে দরকার ছিলো। উইগনারের বোনের আট বছরের অভিজ্ঞতা আছে।” মার্গিটের আগে একবার বিয়ে হয়েছিল, সেখানে এক ছেলে এবং এক মেয়েও আছে। 
সহকর্মী সহ-পদার্থবিজ্ঞানীদের সাথে মার্গিটকে পরিচয় করিয়ে দেয়ার সময় ডিরাক সবসময় ‘উইগনারের বোন’-ই বলতেন, কখনোই ‘আমার স্ত্রী’ বলতেন না। কেন এরকম করতেন প্রশ্ন করলে ডিরাক কোন জবাব দিতেন না। 
১৯৩৭ সালের এপ্রিলে মার্গিট ফিরে এলেন কেমব্রিজে তাঁর ছেলে-মেয়েদের নিয়ে। ডিরাক মার্গিটের ছেলে-মেয়েকে আইনগত ভাবে নিজের করে নিলেন। গ্যাব্রিয়েল ও জুডিথ ডিরাক পদবী গ্রহণ করলো। কেমব্রিজের কাছে একটা বড় বাড়ি কিনলেন ডিরাক ও মার্গিট। ১৯৪০ সালের ৯ই ফেব্রুয়ারি তাঁদের প্রথম কন্যা মেরির জন্ম হয়। দু’বছর পর ১৯৪২ সালের ২৯ সেপ্টেম্বর জন্ম নেয় তাঁদের দ্বিতীয় কন্যা মনিকা। 

ডিরাক, মনিকা, মার্গিট, গ্যাব্রিয়েল, মেরি ও জুডিথ


বাবা হিসেবে নিষ্ঠার সাথে সব দায়িত্ব পালন করেছেন ডিরাক। চার সন্তানের প্রতিই তিনি সমান স্নেহশীল ছিলেন। ছেলেমেয়েদের সাথে কখনোই রাগ করেন নি। তাদের সাথে নিয়মিত খেলাধূলা করেছেন। প্রত্যেক গ্রীষ্মকালে সবাইকে নিয়ে ছুটি কাটাতে চলে যেতেন দূরে কোথাও। প্রত্যেক রবিবার সকালবেলা মেয়েদের নিয়ে সাইকেল চালাতে যেতেন। বাড়ির লনে বাগান করেছেন নিজের হাতে। প্রতি শনিবার ও রবিবার বিকেলে বাগানের কাজ করতেন। নিজেদের গাছ থেকে আপেল পেড়ে একটা একটা করে ধুয়ে মুছে গ্যারেজের দোতলায় সাজিয়ে রাখতেন অনেক যত্নে। স্কেল দিয়ে মেপে দেখতেন যেন প্রত্যেকটা আপেল পরস্পর থেকে সমান দূরত্বে থাকে। 
কুকুর পছন্দ করতেন না ডিরাক। কিন্তু মেয়েদের আবদারে তাদের বিড়াল কিনে দিয়েছিলেন। বিড়াল ঢুকার জন্য দরজা তৈরি করতে গিয়ে বিড়ালের গোঁফের দৈর্ঘ্য মেপে দেখতেন দরজার মাপ ঠিক করতে। 
গ্যাব্রিয়েল ও জুডিথ বড় হয়ে যাবার পর যে যার ইচ্ছেমত কলেজ ইউনিভার্সিটিতে পড়েছে। মেরি আর মনিকাকে প্রতি সন্ধ্যায় নিজের হাতে গণিত আর পদার্থবিজ্ঞান শেখাতেন ডিরাক। তারা আরেকটু বড় হবার পর তাদের যখন যা দরকার পরামর্শ দিতেন। কিন্তু তারা যখন জিজ্ঞেস করতো তাদের জীবনের লক্ষ্য কী হওয়া উচিত - ডিরাক সবসময় বলতেন, “তোমার যা ভালো লাগে তাই হও। মনযোগ ও ভালোবাসা থাকলে অবশ্যই ভালো করবে।”

মার্গিটের সাথে ডিরাকের সম্পর্কটা ভালোভাবেই টিকে গিয়েছিল। ডিরাক বিয়ের পরও খুব একটা বদলাননি। মানুষের সঙ্গ তিনি এড়িয়ে চলেছেন বরাবরই। অপ্রয়োজনীয় কথা বলতে পছন্দ করেন না বলে কোন ধরনের দাম্পত্য-কলহ তাঁদের কখনোই হয়নি। সংসারে যা বলার একা মার্গিটই বলে গেছেন। আর ডিরাক চুপচাপ শুনেছেন। এভাবেই নীরব সুখে কেটেছে তাঁদের ৪৭ বছরের দাম্পত্য জীবন। তবে মার্গিটের কাছ থেকে অনেক কিছু শিখেছেন ডিরাক। গান শুনতে শিখেছেন। যদিও কনসার্টে কখনো যেতেন না - কারণ সেখানে দর্শকের কাশির শব্দে নাকি তাঁর মনযোগ ব্যাহত হতো। তিনি ক্লাসিক্যাল মিউজিক শুনতেন রেডিওতে - আলো নিভিয়ে, চোখ বন্ধ করে।

সারাজীবনে দুই শতাধিক গবেষণাপত্র প্রকাশিত হয়েছে তাঁর। নোবেল পুরষ্কার পাওয়ার পরেও অনেক পুরষ্কার পেয়েছেন। রয়েল সোসাইটির রয়েল মেডেল পেয়েছেন ১৯৩৯ সালে, ম্যাক্স প্ল্যাংক মেডেল ১৯৫২ সালে, ১৯৬৯ সালে পেয়েছেন মায়ামি ইউনিভার্সিটির ওপেনহেইমার প্রাইজ আর ১৯৭৩ সালে পেয়েছেন অর্ডার অব মেরিট।

১৯৬৯ সালে ডিরাক লুকাসিয়ান প্রফেসর পদ থেকে অবসর নেন। ১৯৭১ সালে সপরিবারে ফ্লোরিডা চলে যান। সেখানে ফ্লোরিডা স্টেট ইউনিভার্সিটিতে যোগ দেন। সেখানেই ছিলেন আমৃত্যু। ১৯৮৪ সালের ২০শে অক্টোবর ৮২ বছর বয়সে মারা যান পল ডিরাক। 


তথ্যসূত্র:

১। Graham Farmelo, The strangest man the life of Paul Dirac, mystic of the atom, Basic Books, New York, 2009.

২। Otto R. Frisch, The nature of matter, Thames and Hudson, London, 1972.

৩। Lloyd Motz and Jefferson Hane Weaver, The story of physics, Avon Books, New York, 1989.

৪। Monica Dirac, Paul Dirac - my father, www.damtp.cam.ac.uk/events/strings02/dirac/dirac/ [accessed: 16/09/2013]


*** আমার 'কোয়ান্টাম ভালোবাসা' বই থেকে সংকলিত। 

No comments:

Post a Comment

Latest Post

কৃত্রিম স্নায়ুতন্ত্র ও যন্ত্রের লেখাপড়া

  মানুষ যখন থেকে বুঝতে পেরেছে যে তাদের মগজে বুদ্ধি আছে এবং বুদ্ধিবৃত্তিক চর্চার মাধ্যমে বুদ্ধির পরিমাণ এবং তীক্ষ্ণতা বাড়ানো যায় – তখন থেকেই ...

Popular Posts