Monday 27 July 2020

সত্যেন্দ্রনাথ বসু - পর্ব ৮



সত্যেন্দ্রনাথ বসু: বোসন কণার জনক

অষ্টম অধ্যায়

আইনস্টাইনের সাথে যোগাযোগ 

মৌলিক কণাগুলোর প্রধান দুই শ্রেণি - ফার্মিয়ন ও বোসন। ফার্মিয়ন নামটি এসেছে বিজ্ঞানী এনরিকো ফার্মির নাম থেকে, আর বোসন কথাটি এসেছে বিজ্ঞানী সত্যেন বসুর নাম থেকে। এটুকু আমরা সবাই জানি। এই বোসন কণার ধারণা কীভাবে এলো, সত্যেন বসুর গবেষণাপত্র কীভাবে লেখা হলো এবং সেখানে পদার্থবিজ্ঞানের কী এমন ছিল - যার ফলে একটা বিপ্লব ঘটে গেলো মৌলিক পদার্থবিজ্ঞানে? চলুন এই অধ্যায়ে আমরা সেই ব্যাপারগুলো দেখি।

          বিজ্ঞানের গবেষণায় হঠাৎ করে রাতারাতি কিছু ঘটে না। বিজ্ঞানে একটি আবিষ্কার থেকে অন্য আবিষ্কারের সূত্রপাত হয়। ১৯২৪ সালে সত্যেন বসুর যে আবিষ্কার - তার সূত্রপাত হয়েছিল অনেক বছর আগে। ১৮৭৭ সালে বিজ্ঞানী লুডভিগ বোল্টজম্যান[1] আদর্শ গ্যাসের সাম্যাবস্থার বিভিন্ন দশার সম্ভাবনা হিসেব করার একটি পদ্ধতি বের করেছিলেন। যার নাম দেয়া হয়েছিল ম্যাক্সওয়েল-বোল্টজম্যান ডিস্ট্রিবিউশান। বোল্টজম্যানের কাজের উপর ভিত্তি করে ১৯০০ সালে ম্যাক্স প্ল্যাংক এনট্রপি ও গ্যাসীয় পরমাণুর বিন্যাসের সম্ভাবনার মধ্যে সম্পর্ক স্থাপন করেন: S = k ln(W), যেখানে S হলো এনট্রপি, k হলো বোল্টজম্যান ধ্রুবক (যার মান 1.38064852 x 10-23 m2 kg s-1 K-1), W হলো কোষের মধ্যে গ্যাসীয় পরমাণুর দশার বিন্যাসের সম্ভাবনার সংখ্যা।

          ম্যাক্স প্ল্যাংক তাঁর বিখ্যাত গবেষণাপত্র On the Law of Distribution of Energy Distribution in the Normal Spectrum-এ ম্যাক্সওয়েলের ইলেকট্রোম্যাগনেটিক থিওরির সাহায্যে ব্ল্যাকবডি রেডিয়েশানের ব্যাখ্যা দেন। ব্ল্যাকবডি বা কালো-বস্তুর ধারণাটা হলো এই যে এটা এমন একটা আদর্শ কাল্পনিক বস্তু যেটা সব কম্পাঙ্কের শক্তি শোষণ করবে এবং যেখান থেকে সব কম্পাঙ্কের শক্তি নির্গত হবে। ক্ল্যাসিক্যাল মেকানিক্স দিয়ে ব্ল্যাক-বডি রেডিয়েশান বা কালো-বস্তুর শক্তির বিকিরণ সঠিকভাবে ব্যাখ্যা করা যায় না। কারণ ক্ল্যাসিক্যাল মেকানিক্স অনুসারে বিকিরণের কম্পাঙ্ক যত বাড়তে থাকবে বিকিরণের পরিমাণও তত বাড়তে থাকবে অনবরত। কিন্তু বাস্তবে সেরকম হয় না। যদি হতো তাহলে সবকিছু অনবরত উত্তপ্ত হতে থাকতো, শক্তির বিকিরণের তীব্রতা অনবরত বাড়তে থাকতো। ম্যাক্স প্ল্যাংক ধারণা দিলেন যে শক্তির বিকিরণ ক্ল্যাসিক্যাল পদ্ধতি অর্থাৎ অবিরাম বা অবিচ্ছিন্নভাবে হয় না, বরং শক্তির বিকিরণ ঘটে বিচ্ছিন্ন বিচ্ছিন্নভাবে - কারণ বিকিরণ শক্তি আলাদা আলাদা গুচ্ছাকারে বের হয়। এর নাম দেয়া হলো এনার্জি কোয়ান্টা। (অনেক শক্তিগুচ্ছকে একসাথে কোয়ান্টা, আর একটি শক্তিগুচ্ছকে কোয়ান্টাম বলা হয়)। প্ল্যাংক নিজের তত্ত্ব প্রমাণ করার জন্য ক্ল্যাসিক্যাল মেকানিক্সের সাথে সাময়িকভাবে কিছু অনুমানের সাহায্য নিয়েছেন। পরে দেখেছেন যে শুধুমাত্র বোল্টজম্যান স্ট্যাটিস্‌টিক্স থেকে তাঁর  ধ্রুবকের মান বের করা সম্ভব হচ্ছে না।

          প্ল্যাংকের ফর্মুলা E = hf এর সঠিক ব্যাখ্যা দিয়ে ফটো-ইলেকট্রিক ইফেক্টের তত্ত্ব প্রতিষ্ঠা করেন আইনস্টাইন ১৯০৫ সালে। (এর জন্য তিনি নোবেল পুরষ্কার পান ১৯২১ সালে)। প্ল্যাংকের ধ্রুবকের মান সঠিকভাবে বের করার জন্য তখনো ক্ল্যাসিক্যাল মেকানিক্সে কিছু আনুমানিক সিদ্ধান্তের দরকার হতো। ব্ল্যাক-বডির বিকিরণ শক্তির ঘনত্ব এবং বিকিরকের গড় শক্তির মধ্যে সমন্বয়ের দরকার হতো - অর্থাৎ এই দুটো ফ্যাক্টরের মধ্যে সমন্বয় ঠিকমত না হলে ধ্রুবকের মান পরিবর্তিত হয়ে যেতো। মান পরিবর্তন হলে সেটা তো আর ধ্রুবক থাকে না। এই সমস্যার সমাধান করার জন্য ১৯১০ সালে পিটার ডিবাই (Peter Debye)[2] বিকিরকের গড় শক্তির হিসেব ছাড়াই প্ল্যাংকের ধ্রুবকের মান বের করার একটি পদ্ধতি প্রকাশ করেন। প্ল্যাংক এবং ডিবাই - দুজনের হিসাবেই দেখা গেছে যে শক্তির গুচ্ছগুলো বা কোয়ান্টা একটি থেকে অন্যটি আলাদা নয়। কিন্তু ডিবাই-এর পদ্ধতিতেও কিছু ধারণা ধার করতে হয়েছে যেগুলো খুবই সাময়িক সমাধান। এখানেই সত্যেন বসুর আপত্তি ছিল। সত্যেন বসু সাময়িক সমাধানের বদলে একটি স্বতন্ত্র কিন্তু স্থায়ী পদ্ধতি আবিষ্কার করতে সক্ষম হয়েছেন যেটা দিয়ে প্ল্যাংকের ধ্রুবকের মান সঠিকভাবে নিরূপণ করা যায় এবং সেটা করতে গিয়েই তিনি ধারণা দেন যে একই শক্তিস্তরে অসংখ্য ফোটন থাকতে পারে।

          সত্যেন বসু প্ল্যাংকের বিকিরণ সূত্র নতুনভাবে বের করার জন্য ফোটনগুলোকে কণা হিসেবে গণ্য করেছেন। শক্তি বিকিরণের হিসেব করার সময় তিনি হিসেব করেছেন এক একটা সেল বা কোষে কতটা করে ফোটন বিন্যস্ত হতে পারে। সেল বা কোষ - একটা ধারণা। সবচেয়ে ছোট আকারের যে জায়গা সম্ভব - পদার্থবিজ্ঞানে সেরকম সম্ভাব্য ছোট জায়গাকে সেল বা কোষ বলা হচ্ছে (এর সাথে জীববিজ্ঞানের কোষের সম্পর্ক নেই)। প্ল্যাংকের মান h দিয়েই সবচেয়ে ছোট দৈর্ঘ্যের হিসাব করা হয়। একটি সেলের আয়তন হিসেব করতে গেলে তাই h x h x h = h3 ধরে নেয়া হয়। সত্যেন বসু দেখিয়েছেন যে কোনো দশা-স্থানে (phase-space)[3] যদি A সংখ্যক সেল থাকে তাহলে সেই সেলের সংখ্যা সবগুলো দশা-স্থানের সম্ভাবনা থেকে নির্ণয় করা যায়। এই সম্ভাবনা বা probability নির্ণয় করার জন্য তিনি বোল্টজম্যানের ক্ল্যাসিক্যাল পদ্ধতিতে যেখানে বস্তুকণা ব্যবহার করা হয়েছে সেখানে তিনি কোষ-এর ধারণা ব্যবহার করলেন। ক্ল্যাসিক্যাল মেকানিক্সে প্রত্যেকটি বস্তুকণা স্বতন্ত্র। তারা দেখতে একই রকম হতে পারে, কিন্তু তারা স্বতন্ত্র। নীতিগতভাবে প্রত্যেকটিকেই অন্যটি থেকে আলাদা করা সম্ভব। সেক্ষেত্রে দুটো বস্তুকণাকে স্থান পরিবর্তন করালে তা আলাদা অবস্থার সৃষ্টি করবে। যে কয়টি শক্তিগুচ্ছ (কোয়ান্টা) আছে তা দিয়ে দশা-স্থান পূরণ করলেই প্ল্যাংকের নীতি প্রতিষ্ঠা পায়।

           সত্যেন বসু তাঁর গবেষণাপত্র 'Planck's Law and the Light-Quantum Hypothesis' প্রকাশ করার জন্য পাঠিয়ে দিলেন লন্ডনের ফিলোসফিক্যাল ম্যাগাজিনে। ঐ পেপারটি পাঠিয়ে দিয়েই তিনি কয়েক দিনের মধ্যে আরেকটি পেপার 'Thermal Equilibrium in the Radiation Field in the Presence of Matter' লিখে ফেললেন। প্রথম পেপারটি লন্ডনের বিখ্যাত সায়েন্স জার্নাল ফিলোসফিক্যাল ম্যাগাজিনে প্রকাশের ব্যাপারে তিনি এতটাই আত্মবিশ্বাসী ছিলেন যে পরের পেপারে তিনি আগের পেপারটার রেফারেন্স দিয়েছেন - 'to appear in Philosophical Magazine'। কিন্তু প্রায় তিন মাস পরেও ফিলোসফিক্যাল ম্যাগাজিন পেপারটা প্রকাশের কোন উদ্যোগ নেয়নি। সম্ভবত তারা পেপারটি রিজেক্ট করেছে।

          সত্যেন বসু এবার যেটা করলেন সেটা না করলে পদার্থবিজ্ঞানের ইতিহাসে সত্যেন বসুর নাম হয়তো যেভাবে আছে সেভাবে থাকতো না। সত্যেন বসু একটা চিঠি লিখলেন আইনস্টাইনের কাছে। তারপর চিঠির সাথে পেপারটি পাঠিয়ে দিলেন আইনস্টাইনের ঠিকানায় জার্মানিতে।

          আইনস্টাইনের কাছে চিঠি তিনি কয়েক বছর আগেও একবার লিখেছিলেন। আইনস্টাইনের রিলেটিভিটি পেপার যখন অনুবাদ করছিলেন তখন অনুবাদ করার অনুমতি নেওয়ার জন্য আইনস্টাইনকে চিঠি লিখেছিলেন সত্যেন বসু এবং আইনস্টাইন অনুমতি দিয়েছিলেন।

          এবার সত্যেন বসু যে চিঠিটি আইনস্টাইনকে লিখলেন তা এরকম:

 

"অনেক সাহস করে প্রবন্ধটি আপনার কাছে পাঠালাম আপনার মতামতের জন্য। প্রবন্ধটি আপনার কেমন লাগলো তা জানার জন্য খুব উৎকন্ঠা নিয়ে অপেক্ষা করছি। আপনি দেখবেন যে আমি প্ল্যাংকের সূত্রের সহগটি ক্ল্যাসিক্যাল ইলেকট্রোডায়নামিক্স থেকে সম্পূর্ণ স্বাধীনভাবে নির্ণয় করার চেষ্টা করেছি কেবল দশাস্থানের ক্ষুদ্রতম অংশ h3 ধরা যায় এই অনুমান থেকে। এই পেপারটি জার্মান ভাষায় অনুবাদ করার মত জার্মান আমি জানি না। আপনি যদি মনে করেন পেপারটি প্রকাশের যোগ্য, তাহলে আপনি যদি পেপারটি Zeitschrift fur Physik এ প্রকাশের ব্যবস্থা করেন কৃতজ্ঞ থাকবো। যদিও আপনার কাছে আমি সম্পূর্ণ অপরিচিত, তবু এই অনুরোধ জানাতে আমি কোন দ্বিধা করছি না। কারণ আমরা সবাই আপনার ছাত্র, যদিও শুধুমাত্র আপনার লেখা পড়েই আপনার কাছ থেকে শিক্ষা লাভ করছি। আমি জানি না আপনার মনে আছে কি না, কলকাতা থেকে কেউ একজন আপনার রিলেটিভিটি প্রবন্ধ ইংরেজিতে অনুবাদ করার অনুমতি চেয়ে আপনার সাথে যোগাযোগ করেছিল। আপনি অনুমতি দিয়েছিলেন। সেই বইটি প্রকাশিত হয়েছে। আমিই সেই ব্যক্তি যে আপনার জেনারেল রিলেটিভিটি অনুবাদ করেছে।"

 

 

মূল চিঠিটি ছিল নিম্নরূপ:

 

Physics Department,

Dacca University,

Dated, the 4th June, 1924.

Respected Sir,

 

I have ventured to send you the accompanying article for your perusal and opinion. I am anxious to know what you think of it. You will see that I have tried to deduce the coefficient in Planck's law independent of the classical electrodynamics, only assuming that the ultimate elementary regions in the Phase space have the content h3. I do not know sufficient German to translate the paper: If you think the paper worth publication, I shall be grateful if you arrange for its publication in Zeitschrift fur Physik. Though a complete stranger to you, I do not feel any hesitation in making such a request. Because we are all your pupils though profiting only by your teachings through your writings. I do not know whether you still remember that somebody from Calcutta asked your pertnission to translate your papers on Relativity in English. You acceded to the request. The book has since been published. I was the one who translated your paper on Generalised Relativity.

 

Yours faithfully,

S N Bose

 

চিত্রআইনস্টাইনকে লেখা সত্যেন বসুর চিঠি (৪ জুন ১৯২৪)



পরের দশ দিন পরেও আইনস্টাইনের কাছ থেকে কোন সাড়া আসেনি। সত্যেন বসু ১৫ জুন ১৯২৪ তারিখে তাঁর দ্বিতীয় পেপার 'Thermal Equilibrium in the Radiation Field in the Presence of Matter' পাঠিয়ে দিলেন আইনস্টাইনের কাছে। সাথে আরেকটি চিঠিতে লিখলেন:

 

"আপনার সদয় মতামতের জন্য আপনার কাছে আমার আরেকটি পেপার পাঠালাম। আশা করি আমার আগের পেপারটা আপনার হাতে পৌঁছেছে। আমি যে রেজাল্টে উপনীত হয়েছি তা আমার কাছে খুবই গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে হচ্ছে। আপনি খেয়াল করবেন আমি বিকিরণ ও পদার্থের মধ্যে তাপীয় সাম্যতার সমস্যাটি আমি ভিন্নভাবে সমাধান করেছি। এভাবে আমি একটি ভিন্ন রকমের সম্ভাবনা পদ্ধতিতে উপনীত হয়েছি। এটা মনে হচ্ছে অন্যান্য পদ্ধতির চেয়ে অনেক সরাসরি পদ্ধতি। আপনার কাছে ইংরেজিতে লেখা পেপারটি পাঠালাম। পেপারটি জার্মান ভাষায় অনুবাদ করা আমার সাধ্যের বাইরে। (আপনার কাছে দুর্বোধ্য লাগবে)। আমি অত্যন্ত আনন্দিত হব যদি পেপারটি Zeitschrift fiir Physik অথবা অন্য কোন জার্মান জার্নালে প্রকাশ করার ব্যবস্থা করা হয়। আমি নিজে জানি না কীভাবে সে ব্যবস্থা করতে হয়। যেটাই হোক আপনি যদি আমার পেপার সম্পর্কে আপনার মতামত জানান এবং তা উপরের ঠিকানায় আমার কাছে পাঠিয়ে দেন বাধিত হব।"

 

 

মূল চিঠিটি ছিল নিম্নরূপ:

Physics Laboratory

Dacca University

Dacca, India

15th June, 1924

 

Respected Master,

I send herewith another paper of mine for your kind perusal and opinion. I hope my first paper has reached your hands. The result to which I have arrived seems rather important (to me at any rate). You will see that I have dealt with the problem of thermal equilibriurn between Radiation and Matter in a different way, and have arrived at a different law for the probability for elementary processes, which seems to have simplicity in its favour. I have ventured to send you the type-written paper in English. It being beyond me to express myself in German (which will be intelligible to you), I shall be glad if its publication in Zeitschrift fiir Physik or any other German journal can be managed. I myself know not how to manage it. In any case, I shall be grateful if you express your opinion on the papers and send it to me at the above address.

 

Yours truly,

S N Bose

জুলাই মাসের দুই তারিখে আইনস্টাইন একটি পোস্ট কার্ড পাঠালেন সত্যেন্দ্রনাথ বসুর কাছে। জার্মান ভাষায় লেখা ছোট্ট একটি পোস্টকার্ড। সেই পোস্ট কার্ড পেয়ে সত্যেন বসু যেন হাতে চাঁদ পেলেন।

          আইনস্টাইন লিখেছেন:

 

চিত্র সত্যেন বসুকে লেখা আইনস্টাইনের চিঠি (২ জুলাই ১৯২৪)



মূল জার্মান থেকে ইংরেজিতে অনুবাদ করলে চিঠিটি নিম্নরূপ:

  

2. VII. 24

Dear Colleague,

 

I have translated your work and communicated it to Zeitschrifr fiir Fhjjsik for publication. It signifies an important step forward and I liked it very much. In fact I find your objections against my work not correct. For Wien's displacement law does not assume the wave (undulation) theory and Bohr's correspondence principle is not at all applicable. However, this does not matter. You are the first to derive the factor quantum theoretically, even though because of the polarization factor 2 not wholly rigorously. It is a beautiful step forward.

With friendly greeting,

Yours

A Einstein

 

আইনস্টাইন লিখেছেন যে তিনি সত্যেন বসুর পেপার দুটো জার্মান ভাষায় অনুবাদ করে Zeitschrifr fiir Fhjjsik জার্নালে প্রকাশের ব্যবস্থা করেছেন। তাঁর কাছে মনে হয়েছে পেপারটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। পেপারে সত্যেন বসু আইনস্টাইনের পেপারের প্রসঙ্গে যে যুক্তি দিয়েছিলেন আইনস্টাইন তা মেনে নেননি। সে যাই হোক, আইনস্টাইন ঘোষণা করেছেন যে সত্যেন বসুই সর্বপ্রথম কোয়ান্টাম তত্ত্ব অনুযায়ী প্ল্যাংকের রাশিমালা নির্ণয় করেছেন।

          আইনস্টাইনের পাঠানো পোস্টকার্ডটি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে সত্যেন বসুর মর্যাদা অনেক বাড়িয়ে দিল। আলবার্ট আইনস্টাইন ততদিনে পৃথিবীবিখ্যাত হয়ে গেছেন। তাঁর প্রশংসাপত্র পাওয়া মানে অনেককিছু। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সত্যেন বসুর শিক্ষাছুটি এবং অগ্রিম বেতন মঞ্জুর করতে আর একটুও দেরি করলো না। আইনস্টাইনের পোস্টকার্ড দেখে জার্মান দূতাবাস সত্যেন বসুকে ভিসা দিতেও দেরি করলো না।

          ১৯২৪ সালের সেপ্টেম্বর মাসে বোম্বে থেকে জাহাজে করে ইওরোপে পাড়ি দিলেন সত্যেন বসু।

 



[1] লুডভিগ বোল্টজম্যান (২০/০২/১৮৪৪ - ৫/৯/১৯০৬) ছিলেন অস্ট্রিয়ান পদার্থবিজ্ঞানী। স্ট্যাটিস্‌টিক্যাল মেকানিক্সে তিনি গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছেন।

[2]  পিটার জোসেফ উইলিয়াম ডিবাই (২৪/৩/১৮৮৪ - ২/১১/১৯৬৬) ছিলেন ডাচ পদার্থবিজ্ঞানী। তিনি ১৯৩৩ সালে রসায়নে নোবেল পুরষ্কার পেয়েছিলেন।

[3] ফেস-স্পেস বা দশা-স্থান বলতে কোন পদার্থের অবস্থান ও ভর-বেগের সব ধরনের সম্ভাবনা বোঝায়। 

No comments:

Post a Comment

Latest Post

Young Scientist Gitanjali Rao

At just twelve years old and in seventh grade, Gitanjali Rao earned the title of America’s Top Young Scientist in 2017 after developing &quo...

Popular Posts