Wednesday 2 May 2018

আমার সত্যজিৎ রায়



২রা মে সত্যজিৎ রায়ের জন্মদিন। আমার খুব প্রিয় একটি দিন। ২৫শে বৈশাখ বললে যেমন দিনটি সম্পর্কে আর কিছু না বললেও চলে, ২রা মে-ও আমার কাছে তেমনি। রবীন্দ্রনাথ প্রচার পছন্দ করতেন - নিজের জন্মদিনে নিজেকে নিয়ে উৎসবেও উৎসাহ ছিল তাঁর। 'চিরনূতনেরে দিল ডাক, পঁচিশে বৈশাখ' - তারই প্রমাণ। কিন্তু সত্যজিৎ রায় ব্যক্তিগত ব্যাপারে ছিলেন নিভৃতচারী। জীবদ্দশায় ঘটা করে তাঁর জন্মোৎসব করার কোন খবর আমার জানা নেই। কিন্তু আমি নিজে নিজে ২রা মে পালন করি। রবীন্দ্রজয়ন্তী যেমন রবীন্দ্রনাথ দিয়েই সারা হয় - আমার সত্যজিৎ উৎসবও হয় সেরকম। সেদিন আমি সত্যজিতের সিনেমা দেখি, পড়ি প্রফেসর শঙ্কু বা ফেলুদার কোন গল্প। বিশ্বব্যক্তিত্বের ওপর অধিকার জন্মায় সারা বিশ্বের। সে হিসেবে সত্যজিৎ রায়কে আমি 'আমার সত্যজিৎ' বলতেই পারি। এ লেখায় আমি আমার নিজস্ব অনুভবের সত্যজিৎ রায়কে প্রকাশ করছি।
বাংলাদেশের একটি অজ পাড়াগাঁয়ে আমার জন্ম। ওখানেই আমার বেড়ে ওঠা - ওখানেই আমার স্কুল। শৈশব কৈশোরে সাংস্কৃতিক বিকাশ বলতে বুঝতাম স্কুলের বার্ষিক পুরষ্কার বিতরণী সভা আর দুর্গাপূজায় দাদা কাকাদের গোঁফ কামিয়ে শাড়ি পরে মেয়ে সেজে সীতা মন্দোদরীর অভিনয়। আশির দশক পর্যন্ত আমাদের গ্রামে কোন টেলিভিশন ছিল না। বিদ্যুৎ সংযোগ হয়েছে মাত্র সেদিন - নব্বই-এর দশকে। ১৯৮১ সালের আগে সত্যজিৎ রায়ের নামও আমি শুনিনি।
স্কুল জীবনের শেষের বছরে গ্রাম থেকে মফস্বলের একটি স্কুলে উত্তরণ ঘটে আমার। নতুন স্কুলে এসে আমি কুয়োর ব্যাঙ নদীর পানিতে হাবুডুবু খেতে খেতে শুনতাম সহপাঠীরা মাঝে মাঝেই ছড়া কাটছে - "লেখাপড়া করে যে, অনাহারে মরে সে", "জানার কোন শেষ নাই, জানার চেষ্টা বৃথা তাই"। শুরুতে মনে হয়েছিল এগুলো তাদের নিজেদের রচনা। তাদের প্রতিভায় মুগ্ধ হয়ে একটু বেশিরকম প্রশংসা করতেই একজন বিরক্ত হয়ে জিজ্ঞেস করেছিল, "তুই হীরক রাজার দেশে দেখিসনি?" 'হীরক রাজার দেশে' যে একটা সিনেমার নাম সেটা জানলাম। সিনেমার পরিচালক সত্যজিৎ রায়-এর নাম শুনলাম।

'বাক্স রহস্য' - আমার পড়া প্রথম সত্যজিৎ। তখন আমি কলেজে পড়ি। 'বাক্স রহস্য' পড়েই আমি ফেলুদার জালে ধরা পড়ে গেছি। এরপর সময় কেটে গেছে। প্রতিবছর 'দেশ' পূজাসংখ্যার জন্য অপেক্ষা করে থাকতাম সত্যজিৎ রায়ের নতুন গল্প পড়বো বলে। এখান থেকে ওখান থেকে যেভাবে পারি সত্যজিৎ রায়ের বই জোগাড় করে পড়েছি। তখন ভারতীয় বই কিনতে হতো তিনগুণ সাড়ে তিনগুণ দাম দিয়ে। এত টাকা জোগাড় করা আমার পক্ষে সবসময় সম্ভব হতো না। স্টেশন রোডে 'অমর বই ঘর' নামে একটি পুরনো বইয়ের দোকান থেকে খুঁজে খুঁজে অনেক কম দামে পেয়ে গিয়েছিলাম সত্যজিৎ রায়ের অনেকগুলো বই। তার কিছুদিন পর আমার দিদি বিসিএস পাস করে একটা চাকরি পেয়ে যায়, আর আমিও নিয়মিত পেতে শুরু করি সত্যজিৎ রায়ের নতুন বই, নতুন নতুন পূজাসংখ্যা।

একে একে পড়া হয়ে যায় - বাদশাহী আংটি, গ্যাংটকে গন্ডগোল, সোনার কেল্লা, কৈলাসে কেলেংকারি, রয়েল বেঙ্গল রহস্য, জয় বাবা ফেলুনাথ, ফটিকচাঁদ (এই বইটি প্রথমবার পড়ে আমি কেঁদেছিলাম। কেন কেঁদেছিলাম জানি না।), গোরস্থানে সাবধান, ছিন্নমস্তার অভিশাপ, হত্যাপুরী, টিনটোরেটোর যীশু, ফেলুদা অ্যান্ড কোং, নয়ন রহস্য, ডাবল ফেলুদা, দার্জিলিং জমজমাট, যত কান্ড কাঠমান্ডুতে, তারিণীখুড়োর কীর্তিকলাপ, পিকুর ডায়েরি ও অন্যান্য, এক ডজন গপ্পো, আরো এক ডজন, আরো বারো, একের পিঠে দুই, এবারো বারো, ব্রেজিলের কালো বাঘ, প্রফেসর শঙ্কু, প্রফেসর শঙ্কুর কান্ডকারখানা, স্বয়ং প্রফেসর শঙ্কু, সাবাস প্রফেসর শঙ্কু, মহাসঙ্কটে শঙ্কু, শঙ্কু একাই একশো, যখন ছোট ছিলাম।

রবীন্দ্রনাথের গল্পগুচ্ছ যতবারই পড়ি - ততবারই নতুন মনে হয়। একই অনুভূতি হয় সত্যজিৎ রায়ের ছোটগল্পগুলো পড়ার বেলাতেও। ফেলুদার গল্পগুলো অনেকদিন বিরতি না দিয়ে পড়লে বারবার পড়তে ইচ্ছে করে না। কারণ রহস্য উদ্ঘাটিত হয়ে যাবার পরে রহস্য গল্পের আবেদন কিছুটা বাসি হয়ে যায়। কিন্তু বারো সিরিজের গল্পগুলো চিরনতুন। সত্যজিৎ রায়ের পাঁচটি ছোটগল্পের বইয়ের পাঁচ ডজন গল্পই আমার প্রিয়।

প্রফেসর শঙ্কুর গল্পগুলো পড়ার সময় আমার মনে যে শঙ্কুর চেহারা ভেসে ওঠে তার সাথে সত্যজিৎ রায়ের আঁকা লম্বা দাড়িওয়ালা টেকো প্রফেসরের কোন মিল নেই। আমার কল্পনার প্রফেসর শঙ্কুর চেহারা অনেকটা সৌমিত্র চট্টোপাধায়ের মত। অবশ্য ইদানিং প্রফেসর শঙ্কু পড়ার সময় প্রফেসর জাফর ইকবালের চেহারা ভেসে ওঠে।
ফেলুদার গল্পগুলো পড়ার সময় ফেলুদাকে কিছুতেই সৌমিত্রের মত মনে হয় না। সেজন্য 'জয় বাবা ফেলুনাথ' ও 'সোনার কেল্লা' দেখার সময় গল্পের ফেলুদাকে খুব বেশি মিস করেছি।

সত্যজিৎ রায় অনুদিত আর্থার কনান ডয়েলের 'ব্রেজিলের কালো বাঘ' পড়ার পরে মূল গল্পটিও পড়েছি। মনে হয়েছে মূল গল্পের চেয়েও অনুবাদটি সুন্দর - অনেক বেশি টানটান। আমার দুর্বল ইংরেজি জ্ঞানের কারণেই হয়তো।

সত্যজিৎ রায়ের প্রথম ছবি 'পথের পাঁচালী' দেখার সুযোগ পেয়েছিলাম সত্যজিৎ রায়ের মৃত্যুর পর ১৯৯২ সালে। বিটিভিতে দেখানো হয়েছিল সত্যজিৎ রায়ের স্মরণে। সিনেমাটি দেখার জন্য আমরা গাড়ির ব্যাটারি ভাড়া করে নিয়ে এসেছিলাম লোডশেডিং হলে ব্যাটারি দিয়ে টিভি চালানোর জন্য। এর আগে ১৯৮৫তে সার্ক সম্মেলন উপলক্ষে অনেকগুলো ভারতীয় বাংলাছবি দেখানো হলেও সত্যজিৎ রায়ের কোন সিনেমা দেখানো হয়নি। তার কারণ জানি না। ইউনিভার্সিটি থেকে আমরা বিটিভির রামপুরা কেন্দ্র দেখতে গিয়েছিলাম ১৯৯২ সালে। তখন বিটিভির সম্প্রচার পরিচালক কোরেশী সাহেবকে আমি জিজ্ঞেস করেছিলাম, "আপনারা টিভিতে নিয়মিত হলিউডের সিনেমা দেখান, বিদেশী সিরিয়াল দেখান, অথচ সত্যজিৎ রায়ের সিনেমা দেখান না। কেন?" তিনি উত্তর দিয়েছিলেন, "সরকারের নিষেধ আছে।"

সেই সময়কালে বিটিভিতে সত্যজিতের আরেকটি সিনেমা দেখানো হয়েছিল - সদ্‌গতি। হিন্দি ভাষায় নির্মিত এই স্বল্পদৈর্ঘ্য সিনেমাটি দেখে শিউরে উঠেছি। উচ্চবর্ণের হিন্দুরা নিম্নবর্ণের হিন্দুদের যে মানুষ বলে মনে করে না - তা চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিয়েছেন সত্যজিৎ রায়।

নব্বই-এর দশকে ভিসিআর ও ভিডিও লাইব্রেরি সহজলভ্য হয়ে যাবার সুবাদে একে একে দেখা হয়ে যায় সত্যজিৎ রায়ের অনেকগুলো ছবি। পরে কম্পিউটার, ভিসিডি, ডিভিডি এবং শেষে ইউ টিউবের কল্যাণে সত্যজিৎ রায়ের সবগুলো সিনেমা ব্যক্তিগত সংগ্রহে চলে আসে।

১৯৫৫ থেকে ১৯৯১ পর্যন্ত সময়ে মোট ২৯টি পূর্ণদৈর্ঘ্য কাহিনিচিত্র, দুটো স্বল্পদৈর্ঘ্য কাহিনিচিত্র এবং পাঁচটি তথ্যচিত্র নির্মাণ করেছেন সত্যজিৎ রায়। পূর্ণদৈর্ঘ্য কাহিনিচিত্রগুলো হলো:



(১) পথের পাঁচালী (১৯৫৫)

(২) অপরাজিত (১৯৫৬)

(৩) জলসাঘর (১৯৫৮)

(৪) পরশ পাথর (১৯৫৮)

(৫) অপুর সংসার (১৯৫৯)

(৬) দেবী (১৯৬০)

(৭) তিন কন্যা (পোস্টমাস্টার, মণিহারা, সমাপ্তি) (১৯৬১)

(৮) কাঞ্চনজঙ্ঘা (১৯৬২)

(৯) অভিযান (১৯৬২)

(১০) মহানগর (১৯৬৩)

(১১) চারুলতা (১৯৬৪)

(১২) মহাপুরুষ (১৯৬৪)

(১৩) কাপুরুষ (১৯৬৫)

(১৪) নায়ক (১৯৬৬)

(১৫) চিড়িয়াখানা (১৯৬৭)

(১৬) গুপি গাইন বাঘা বাইন (১৯৬৮)

(১৭) প্রতিদ্বন্দ্বী (১৯৭০)

(১৮) অরণ্যের দিনরাত্রি (১৯৭০)

(১৯) সীমাবদ্ধ (১৯৭১)

(২০) অশনি সংকেত (১৯৭৩)

(২১) সোনার কেল্লা (১৯৭৪)

(২২) জন অরণ্য (১৯৭৪)


(২৩) সতরঞ্জ কি খিলাড়ি (হিন্দি) (১৯৭৭)

(২৪) জয় বাবা ফেলুনাথ (১৯৭৮)

(২৫) হীরক রাজার দেশে (১৯৮০)

(২৬) ঘরে বাইরে (১৯৮৪)

(২৭) গণশত্রু (১৯৮৯)

(২৮) শাখা প্রশাখা (১৯৯০)

(২৯) আগন্তুক (১৯৯১)


স্বল্পদৈর্ঘ্য কাহিনিচিত্রগুলো:
(১) সদ্‌গতি (হিন্দি) (১৯৮১)
(২) পিকু (১৯৮২)

তথ্যচিত্র:
(১) রবীন্দ্রনাথ (১৯৬১)
(২) সিকিম (১৯৭১)
(৩) দ্য ইনার আই (১৯৭২)
(৪) বালা (১৯৭৬)
(৫) সুকুমার রায় (১৯৮৭)

নিরাসক্ত ভঙ্গিতে বিবেচনা করলে একজন শিল্পীর সবগুলো শিল্পকর্মই সমান ভালো হয় না বা সমান ভাবে ভালো লাগে না সবার। সত্যজিৎ রায়ের সবগুলো সিনেমাই কালোত্তীর্ণ তাতে কোন সন্দেহ নেই। তারপরও কিছু কিছু ছবির ব্যাপারে ভালো লাগা মন্দ লাগার ব্যাপার থাকে। সত্যজিৎ রায়ের সিনেমাগুলোর সবকিছুই এত ভালো যে কী কী ভালো লেগেছে বলার চেয়ে কিছু যদি ভালো না লেগে থাকে তা বলাটা আমার পক্ষে সহজ। কারণ ভালো লাগার তুলনায় ভালো না লাগার ব্যাপারটি একেবারেই নগণ্য।

সোনার কেল্লা ও জয় বাবা ফেলুনাথে ফেলুদা হিসেবে সৌমিত্রকে মেনে নিতে পারিনি। বই পড়ার সময় ফেলুদার যে অবয়ব আমার মনে ভেসে উঠেছিলো তার সাথে সৌমিত্রের মিল নেই বলেই এরকম হয়েছে।

বাসায় সবার সঙ্গে বসে 'ঘরে বাইরে' দেখতে গিয়ে কিছুটা অস্বস্তিতে পড়েছিলাম। সন্দ্বীপ (সৌমিত্র) ও বিমলার (স্বাতীলেখা) তিনটি চুম্বনদৃশ্য আছে ছবিতে। বাংলা সিনেমায় এরকম সরাসরি চুম্বনদৃশ্য আগে কোন বাংলা সিনেমাতে দেখা যায়নি। এখন অবশ্য নানারকম চ্যানেলে প্রয়োজনে অপ্রয়োজনে এর চেয়ে অনেক বেশি খোলামেলা দৃশ্য দেখতে অভ্যস্ত হয়ে গেছে সবাই।

'শাখা প্রশাখা' দেখার সময় মনে হয়েছে ক্ল্যাসিক্যাল মিউজিক সম্পর্কে কিছু জানা থাকলে ছবিটি আরো উপভোগ্য হতো আমার কাছে। মিউজিক শুনেই যদি চিনতে পারতাম কোন্‌টি বাখ্‌ আর কোন্‌টি বেটোফেন - তাহলে কতই না মজা পেতাম। সৌমিত্র ও দীপংকর-এর ছোটভাই-এর চরিত্রে রঞ্জিত মল্লিককে খুব বেমানান মনে হয়েছে।






সত্যজিতের সিনেমাগুলোকে ভালো লাগার ভিত্তিতে আমি তিন ভাগে ভাগ করে নিয়েছি। তৃতীয় স্থানে আছে 'গণশত্রু' ও 'আগন্তুক' ছাড়া বাকি সবগুলো ছবি। দ্বিতীয় স্থানে 'গণশত্রু' আর সবচেয়ে ভালো লাগা ছবিটি হলো সত্যজিতের শেষ ছবি 'আগন্তুক'।

ধর্ম নিয়ে মন্দির নিয়ে ব্যবসার বিরুদ্ধে সরাসরি প্রতিবাদ 'গণশত্রু'। সামাজিক অবস্থার বাস্তব চিত্র ফুটিয়ে তুলেছেন ছবিটিতে। ছবির সবচেয়ে পজিটিভ দিক হলো - নিশ্চিত পরাজয় জেনেও নীতির প্রশ্নে আপোস না করা, সাথে কেউ নেই জেনেও পিছু না হঠা। ছবিটি যতবারই দেখি - মনের ভেতর অন্য ধরনের এক জোর পাই।

সত্যজিৎ রায়ের ছবিগুলোর মধ্যে আমার সবচেয়ে ভালো লাগা ছবি 'আগন্তুক'। সত্যজিৎ রায়ের শেষ ছবি। আগন্তুক মনমোহনের (উৎপল দত্ত) মধ্যে আমি যেন সত্যজিৎ রায়ের ভাবনারই প্রতিফলন দেখতে পাই। প্রচলিত সাংগঠনিক ধর্ম সম্পর্কে সত্যজিৎ রায় খোলাখুলিই বলেছেন এখানে, "যে ধর্ম মানুষে মানুষে বিভেদ তৈরি করে, তা মেনে নেয়া যায় না। অর্গানাইজড রিলিজিয়ন তা করেই। তাই আমি ধর্ম মানি না।" আর এ ছবিতে সত্যজিৎ রায় পরিষ্কার করে যা বলে গেছেন তা হলো কূপমন্ডুক হতে নেই। ছবির শেষের দিকের দুটো সংলাপ এরকম:
"কী হবে না বলে কথা দিয়েছো?"
"কূপমন্ডুক"
________________
১৯ মে ২০০৬
ব্রিসবেন, অস্ট্রেলিয়া
______________________


No comments:

Post a Comment

Latest Post

বিজ্ঞানী গীতাঞ্জলি রাও

  পানি-দূষণের মাত্রা নির্ধারণের দ্রুততম বৈজ্ঞানিক পদ্ধতি ‘টেথিস’ উদ্ভাবন করে গীতাঞ্জলি রাও যখন   ২০১৭ সালে আমেরিকার শ্রেষ্ঠ তরুণ বিজ্ঞানীর শ...

Popular Posts