Monday 14 March 2022

স্বপ্নলোকের চাবি - পর্ব ৬৩

 


#স্বপ্নলোকের_চাবি_৬৩

মহাভারতের ভীষ্ম চরিত্রটিকে আমার বেশ লাগে। প্রচন্ড শক্তিধর এই মানুষটির জীবন ঘটনাচক্রে ট্র্যাজিক। এমন এমন পরিস্থিতির সামনে তাঁকে পড়তে হয় যখন তাঁর শক্তি, বুদ্ধি, বিচক্ষণতা কিছুই তেমন কাজে আসে না। পান্ডবরা তাঁর প্রিয় হলেও কুরুক্ষেত্রের যুদ্ধে কৌরবদের পক্ষ নিয়ে তাঁকে যুদ্ধ করতে হয়েছে পান্ডবদের বিপক্ষে। তিনি এতই শক্তিশালী ছিলেন যে তাঁকে কিছুতেই পরাস্ত করা যাচ্ছিল না। শেষে তিনিই পান্ডবদের বলে দেন কীভাবে তাঁকে মারা যাবে। তাঁর দেখানো পথে অর্জুন তাঁকে বাণের পর বাণ মেরে রথ থেকে ফেলে দিয়েছিলেন। অর্জুন এত বেশি বাণ মেরেছিলেন যে ভীষ্মের শরীরের প্রতি ইঞ্চিতে তীর গেঁথে গিয়েছিল। রথ থেকে পড়ে গিয়েও ভীষ্ম মাটিতে পড়েননি, তীরের উপর ছিলেন। ওভাবেই শরশয্যায় তিনি ছিলেন আরো আটান্ন দিন। থিসিসের ভাইভা দিতে গিয়ে আমার ভীষ্মের কথাই মনে হচ্ছিলো বারবার। স্যাররা সবাই কেন যেন একেকটা অর্জুন হয়ে উঠেছিলেন। প্রশ্নের তীর-ধনুক নিয়ে অনবরত প্রশ্নবাণ নিক্ষেপ করেছেন যেদিক থেকে পেরেছেন।

আমার ধারণা ছিল থিসিসের ভাইভা হবে থিসিসের বিষয়ের উপর। আমি কী কাজ করেছি তা বলবো, তারপর স্যাররা সেই সংক্রান্ত প্রশ্ন করবেন, আমি উত্তর দেবো কিংবা আলোচনা করবো। সবচেয়ে ন্যায্য হতো যদি ভাইভার বদলে থিসিস প্রেজেন্টেশান হতো।

আমি কাজ করেছি কোয়ান্টাম মেকানিক্যাল থ্রি পার্টিক্যাল সিস্টেম নিয়ে। পুরোটাই থিওরেটিক্যাল। অকথ্য লম্বা লম্বা সমীকরণ -  যেগুলি কোন রকমে লেখা যায়, কিন্তু মুখে উচ্চারণ করা যায় না। কোয়ান্টাম মেকানিক্সের বাবাও নাকি কোয়ান্টাম মেকানিক্স বোঝেন না। সেটা স্বাভাবিক, পিতার পক্ষে পুত্রকে বুঝতে পারা সহজ নয়। কিন্তু যাঁরা কোয়ান্টাম মেকানিক্স আবিষ্কার করেছেন, অর্থাৎ কোয়ান্টাম মেকানিক্সের বাবারাই নাকি বলেছেন যে কোয়ান্টাম মেকানিক্স পুরোপুরি বোঝা সহজ নয়, সেক্ষেত্রে আমরা যদি কোয়ান্টাম মেকানিক্স মোটেও না বুঝি আমাদের দোষ দেয়া কি উচিত? যাই হোক, স্যাররা ইচ্ছেমতো ধোলাই করলেন আমাকে। কোয়ান্টাম মেকানিক্স দিয়ে শুরু করে পদার্থবিজ্ঞানের অলিগলি খুঁজে খুঁজে এমন সব প্রশ্নের তীর নিক্ষেপ করলেন – ভীষ্মের মতো আমারও সারা শরীরে প্রশ্নবাণ গেঁথে রইলো। প্রামাণিকস্যারের কাছে থিসিস করেছি – কোথায় তিনি আমাকে যুদ্ধক্ষেত্রে রক্ষা করবেন – তা না করে তিনি নিজেই আক্রমণ করতে শুরু করলেন। প্রাচীন কালের গুরুরা নাকি এরকম করতেন - শিষ্যদের শিক্ষা পূর্ণ করার জন্য বাঘের মুখে ছেড়ে দিতেন। এতে শিষ্যের প্রাণ যায় তো যাক।

কোনোরকমে প্রাণ হাতে নিয়ে ফেরার সময় ব্রহ্মাস্ত্র নিক্ষেপ করলেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আসা বহিরাগত পরীক্ষক। “তোমার থিসিস কোন্‌ কাজে লাগবে?” আসলেই তো, পরীক্ষায় পাস করা ছাড়া আমার এই থিসিস আর কী কাজে লাগবে? এতে এমন কোন নতুন জিনিস নেই যা দেখিয়ে আমি বলতে পারি যে এটা একটা বিরাট আবিষ্কার! মাস্টার্সের মিনি থিসিস আসলে গবেষণার হাতেখড়ি ছাড়া আর কিছুই নয়। এই থিসিস করার সময় আমি জীবনের প্রথমবার ফিজিক্যাল রিভিউর পাতা উল্টিয়েছি। সেন্ট্রাল লাইব্রেরির অসংখ্য বই ঘেঁটেছি যেগুলিতে আক্ষরিক অর্থেই ধুলো জমে ছিল। একই বিষয়ে কত শত গবেষণাপত্র প্রকাশিত হয়েছে তা জার্নাল খুঁজে খুঁজে বের করার নিয়মকানুন কিছু শিখেছি। এটুকুই লাভ হয়েছে বলতে পারি। কিন্তু আর কী কাজে লাগবে? এক্সপ্যানসান অব নলেজ – গবেষণার মূল উদ্দেশ্য। সেখানে খুব সামান্য হলেও কিছুটা ভূমিকা রাখবে।

বিচারালয়ে বিচারকের মুখ দেখে যেমন তাঁর সিদ্ধান্ত বোঝা যায় না, সেরকম মৌখিক পরীক্ষাতেও আমাদের স্যাররা কী এক অদ্ভুত কায়দায় মুখমন্ডল এমনই গম্ভীর করে রাখেন যে দেখে বোঝার উপায় থাকে না খুশি হলেন কি অখুশি।

মোবাশ্বেরস্যারের রুম থেকে বের হয়েই বুঝতে পারলাম – এখানে আমার আর কোন কাজ নেই। যীশুর ভাইভা আমার আগে হয়ে গেছে। সে অপেক্ষা করছিলো আমার জন্য। অঞ্জন, মইনুল, প্রেমাঙ্কর, দীলিপ, রিনা – এদের পরীক্ষা এখনো হয়নি। যীশু কারো জন্য অপেক্ষা করতে রাজি না।

“চল্‌ যাই গই” – তাগাদা দেয় সে।

আমার কেমন যেন যেতে ইচ্ছে করছে না। এতদিন অস্থির হয়েছিলাম কখন সবকিছু শেষ হবে। এখন শেষ হবার পর মনে হচ্ছে কেন শেষ হয়ে গেলো। চার বছরের জায়গায় সাত বছর লেগেছে বলে যে ক্ষোভ, যে হা-হুতাশ ছিল তা কোথায় যেন মিলিয়ে গেছে।

যীশু তাগাদা দিচ্ছে, কারণ যীশুর গন্তব্য ঠিক হয়ে গেছে। তার সৌদি আরবের ভিসা হয়ে গেছে। সেপ্টেম্বরের মধ্যে সে চলে যাবে। প্রদীপ নাথও কক্সবাজার চলে গেছে। কলাতলী চিংড়ি প্রজেক্টের অফিসার হয়ে এমন অনেক কাজ করছে যেগুলির সাথে পদার্থবিজ্ঞানের কোন সম্পর্ক নেই। কিন্তু আমার এখনো কোনকিছুই ঠিক নেই। সম্ভবত সেই কারণেই ভালো লাগছে না।

সায়েন্স ফ্যাকাল্টি থেকে বের হয়ে ক্যাফেটোরিয়ার সামনে আসতেই দেখা হয়ে গেলো অনামিকাদের গ্রুপের সাথে। অনামিকা, প্রীতি, মুক্তি, মইনুল – সবাই মিলে জোর করে ক্যাফেটরিয়ায় নিয়ে গেল। যীশুর তাড়া আছে। সে চলে গেল। মুক্তি বাসা থেকে খাবার নিয়ে এসেছে। এটা বিদায়ী খানা কিনা জিজ্ঞেস করলাম না। গত দুই বছরে এদের সাথে একটা স্নেহের সম্পর্ক তৈরি হয়ে গেছে। ক্যাম্পাসে আর নিয়মিত আসা হবে না। এদের সাথে আর কখনো দেখা হবে কি না তাও জানি না।

রুমে এসে লম্বা হয়ে শুয়ে পড়লাম। টেবিলভর্তি বইপত্র গোছানো দরকার। অসীমদের আসার কথা আছে আজ। অসীম, ইলোরা, দীলিপ আর মিতু কয়েকদিন এসেছিল পদার্থবিজ্ঞানের কিছু বিষয় আলোচনা করতে। ভাইভা উপলক্ষে গত ক’দিন আসতে মানা করেছিলাম। আজ আসতে পারে। কিন্তু কিছুই করতে ইচ্ছে করছে না এখন। কী করা উচিত তাও ভাবতে ইচ্ছে করছে না।

মানুষের নাকি স্বপ্ন থাকে। বড় হবার স্বপ্ন, কোন একটা জায়গায় পৌঁছে যাবার স্বপ্ন। আমার স্বপ্ন কী? কী হতে চাই আমি? কোথায় পৌঁছতে চাই? অনেক ভেবে দেখলাম - আমার নির্দিষ্ট কোন স্বপ্নই তৈরি হয়নি। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক হবার ইষৎ একটা স্বপ্ন উঁকিঝুঁকি মারতে শুরু করেছে মাথার ভেতর, কিন্তু তাকে প্রশ্রয় দিচ্ছি না। কারণ বাস্তবতা বিবেচনা করে যতটুকু বুঝতে পারছি – তাতে সেই স্বপ্নলোকের চাবি আমার হাতে আসার সম্ভাবনা খুবই কম।

দরজায় শব্দ শুনে দ্রুত উঠে গেলাম। সম্ভবত অসীমরা এসেছে। কিন্তু দরজা খুলে দেখি – আকর্ণবিস্তৃত হাসিমুখে প্রদীপ নাথ দাঁড়িয়ে আছে। আমি অবাক হয়ে গেলাম। মাত্র ক’দিন আগেই সে কক্সবাজার ফিরে গেছে। আবার ছুটিতে চলে এলো?

“কী রে, কখন এলি আবার?”

“চাকরি ছেড়ে দিয়েছি।“ – হাসতে হাসতে বসতে বসতে বললো সে।

“কী বলিস?”

ঘটনা সত্যি। তার ম্যানেজার তার উপর বেশি খবরদারি করতে গিয়েছিল। সে তার মুখের উপর বলে এসেছে – “তোমার চাকরির ক্যাথা পুড়ি।“

আমি আবার অবাক হয়ে, অনেকটা ঈর্ষান্বিতভাবে তাকিয়ে থাকি তার দিকে। আমি এখনো কোন চাকরির ইন্টারভিউই দিতে পারিনি। সে এরমধ্যে চাকরি করেছে, আবার সেই চাকরির ক্যাথাও পুড়িয়ে ফেলেছে।

পনেরোতম বিসিএস-এর ফরম ফিল আপ করার পরিকল্পনা করি দু’জনে। চতুর্দশ বিসিএস আমরা দিতে পারিনি। শিক্ষা ক্যাডারের স্পেশাল বিসিএস ছিল। আমাদের সিনিয়র ব্যাচের অনেকেই সরকারি কলেজের শিক্ষক হয়ে গেছেন এই বিসিএস পাস করে। কিন্তু আমাদের জন্য ওরকম কোন সুযোগ আসবে কি না জানি না।

আমানত খান বিল্ডিং-এর পাট গুটাতে হবে। চাকরিবাকরি খুঁজতে গেলে শহরে থাকাই উত্তম। বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসের কাজ যেহেতু শেষ হয়েছে, এখন এদিকে থাকার আর দরকার নেই। কিন্তু শহরে বাসা ভাড়া করার মতো একটা আর্থিক সঙ্গতি তো অর্জন করতে হবে আগে। পরীক্ষা শেষ করার পর বাবার কাছ থেকে টাকা নিতে ইচ্ছে করছে না আর। ছোট্ট একটা দোকান থেকে বাবার আয় অত্যন্ত সীমিত। এখন দিনে দিনে খরচ যেভাবে বেড়েছে, আয় সেভাবে বাড়েনি। এখন আমার স্বাবলম্বী হওয়া উচিত।

যে কাজটি এখনই করতে পারি সেটা হচ্ছে টিউশনি। বিচ্ছিন্নভাবে কিছু টিউশনি করেছি এতদিন। কিন্তু তাতে পড়ানোর আনন্দেই পড়িয়েছি, টাকা পয়সার দিকটা ভাবিওনি। ফতেয়াবাদ স্কুলের হেডমাস্টারের শালাকে পড়িয়েছিলাম তার উচ্চমাধ্যমিকের আগে। সে এখন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে অর্থনীতিতে ভর্তি হয়েছে। খানসাহেব একদিন ধরে নিয়ে গিয়েছিলেন ফতেয়াবাদ স্কুলের অ্যাসিস্ট্যান্ট হেডমাস্টারের বাসায়। তাঁর ছেলেও উচ্চমাধ্যমিক দেবে। ফিজিক্স দেখিয়ে দিতে হবে। সেখানেও আনন্দ আছে অনেক, অর্থ নেই।

আক্কাস নামে এক ছেলে আছে এই বিল্ডিং-এ। দোতলায় থাকে। ঠিক কার ভাগনে জানি না, সবাইকে সে মামা ডাকে। পড়ে হাটহাজারি কলেজে। একদিন সকালে ফিজিক্স বই নিয়ে হাজির হয়েছিল আমার রুমে। তারপর থেকে সুযোগ পেলেই আসে। পড়ার প্রতি আগ্রহ আছে অনেক, কিন্তু বুঝতে সময় লাগে। তাকে বলেছি আমি এই বিল্ডিং থেকে শীঘ্রই চলে যাচ্ছি। শুনে সে মুখ গোমড়া করে বলে, “মামা, অঁনে যাইবার আগদ্দি আঁর ফিজিক্স শ্যাষ গরাইয়েনে যাইবান্‌দে।“  

আক্কাসের জন্য কেমন যেন মায়া লাগে। ছেলেটাকে দেখলে ক্লাস সেভেন এইটের বেশি মনে হয় না। অপুষ্টির কারণেই হয়তো শরীর বাড়ার সুযোগ পায়নি। মগজের পুষ্টিও সেভাবে হয়নি। কিন্তু আগ্রহ আছে অনেক। যাবার আগে মাসখানেকের মধ্যে তার ফিজিক্স শেষ করানো কতটুকু সম্ভব হবে জানি না।

ইলোরারা এলো পরদিন বিকেলে। অসীম সকালে এসে জানিয়ে গিয়েছিল বিকেলে থাকার জন্য। ইলোরা আমার বন্ধু। এক ইয়ার ড্রপ করে আমাদের পরের ব্যাচে চলে গেছে। এখন সে অসীমদের সহপাঠী। অসীম, ইলোরা, দীলিপ, মিতু – এরা মাঝে মাঝে বিকেলে আমার রুমে এসে ফিজিক্স পড়ে। আমারও বেশ ভালো লাগে তাদের সাথে মাস্টার্সের যে বিষয়গুলি মাত্র কিছুদিন আগে পরীক্ষা দিয়েছি – সেগুলি নিয়ে আলোচনা করতে। বুঝতে পারছি – মাস্টারি করতে বেশ ভালোই লাগছে আমার।

মিতু খুব গোছানো স্বভাবের মানুষ। সে রুমে এসে টেবিলের বইপত্র আগে গোছায় – তারপর নিজের বইখাতা খোলে। অসীম যতটুকু পদার্থবিজ্ঞানের ছাত্র, তার চেয়েও বেশি গায়ক ও সংগঠক। সে সবাইকে সাথে করে নিয়ে আসে। অসীম যখন মাঝে মাঝে গলা খুলে গায় – অদ্ভুত ভালো লাগে।  

“তোমার অসীমে প্রাণমন লয়ে যত দূরে আমি ধাই

কোথাও দুঃখ, কোথাও মৃত্যু, কোথা বিচ্ছেদ নাই”

কোয়ান্টাম মেকানিক্স পড়তে পড়তে অসীম গলা খুললো। আমার মনে হচ্ছে জটিল ফিজিক্সের মাঝে মাঝে এরকম উদাত্ত জীবনের গান হলে – সব জটিলতাই কেটে যেতো। গানের মাঝেই দেখলাম আমার জানালার বাইরে একজন শিবিরকর্মী এসে উঁকিঝুঁকি মারছে। আমার সাথে চোখাচোখি হতেই চলে গেল। একটু পরে দেখি আরেকজন এসে উঁকি দিচ্ছে। তার চোখ মিতু আর ইলোরার দিকে ঘুরছে।

ওরা চলে যাবার সময় দেখলাম শিবিরের বেশ কয়েকজন ছেলে করিডোরে হাঁটাহাঁটি করছে। এদের সমস্যা হয়তো গান, হয়তো মেয়ে, হয়তো উভয়ই। পেছন থেকে তাদের মন্তব্য কানে এলো – “ব্যাচেলর মেসে মেয়ে আসা নিষেধ। কিছু হয়ে গেলে আমরা দায়ি নই।“

ওদের বাসে তুলে দিয়ে আসার সময় দেখলাম ছেলেগুলির একটাও নেই করিডোরে। সবগুলি ফার্স্ট ইয়ার বা সেকেন্ড ইয়ারে পড়ে। এদেরকে খুঁজে বের করে মুখোমুখি হয়ে ঝগড়া করার রুচি হচ্ছে না। এড়িয়ে চললেও প্রশ্রয় দেয়া হয়। কিন্তু ওরা যদি ইলোরা বা মিতুকে অপমান করে বসে? মিতু কতটা শক্ত আমি জানি না, কিন্তু ইলোরা এতটাই নরম মনের মানুষ যে সমাজের কদর্য দিকটা সম্ভবত সে চোখেই দেখেনি কোনদিন। তার অধ্যাপক মা-বাবা হাজার হাজার বইয়ের মধ্যে সর্বোচ্চ যত্ন দিয়ে বড় করেছেন তাঁদের মেয়েকে। সমাজে যে কতগুলি মানুষের মতো কীট আছে সে সম্পর্কে মেয়েকে সচেতন করেছেন কি না আমি জানি না। তার চেয়ে ওরা এখানে না এলেই ভালো হয়। বরং আমিই ক্যাম্পাসে গিয়ে তাদের সাথে বসবো।  

ফতেয়াবাদ স্টেশনের পেছনে একটা বাড়িতে মেস করে থাকে অসীমরা কয়েকজন। পরদিন খুব সকালে অসীমদের মেসে গেলাম। সব শুনে অসীম বললো, “ওদের কমেন্ট আমি শুনেছি দাদা। ওদের ব্যবস্থা আমি করবো।“ এবার আমি ভয় পেয়ে গেলাম। অসীম কী ব্যবস্থা করতে কী ব্যবস্থা করে কে জানে। সে রবীন্দ্রসঙ্গীত যেমন ভালো গায়, শুনেছি হাত-পাও ভালো চালায়। 

পরের পর্ব >>>>>>>>>>>>>

<<<<<< আগের পর্ব

No comments:

Post a Comment

Latest Post

Dorothy Crowfoot Hodgkin

  Look closely at the fingers of the person in the picture. Her fingers had not bent in this way due to age; she had been suffering from chr...

Popular Posts