০৪
সাহা স্যারের
ক্লাস করতে করতে ‘প্রোপার্টিজ অব হিট’ যতটুকু
বুঝতে পেরেছি তাতে জানি - তাপ দিলে পদার্থের পরমাণুগুলির কম্পন বেড়ে যায়। তারা তখন
স্বাভাবিক তাপমাত্রায় যতটা ছটফট করতো তার চেয়ে বেশি ছটফট করতে থাকে। সেই তত্ত্ব শুধু
মানুষের পরমাণু নয় – সম্পূর্ণ মানুষের উপরও যে কাজ করে তা চোখের সামনেই দেখতে পাচ্ছি।
ট্রেনের বগিতে লোকসংখ্যা যত বাড়ছে, বগির ভেতর আগস্ট মাসের ভ্যাপসা গরমও ততোই বাড়ছে।
আর এই গরমের মধ্যেই পারস্পরিক দূরত্ব কমাতে হচ্ছে বলে যীশু আর অর্পণের ছটফটানিও তত
বাড়ছে। অর্পণ হাতের রুমাল দিয়ে মুখের ঘাম মুছতে মুছতে রাগে থমথম করছে। আর যীশু একটু
পর পর দাঁত্মুখ খিঁচে নিজের মাথার ছোট ছোট চুলধরে টানার চেষ্টা করছে। মনে হচ্ছে চুলগুলি
আর একটু লম্বা হলে গোছাশুদ্ধ উপড়ে ফেলতো।
এই দু’জনের
কেউই ট্রেনে যাতায়াত পছন্দ করে না। ট্রেনে যাবার কথা শুনে যীশু দু’দিন আগেই বলেছিল,
“না না, ট্রেনে আমি যাচ্ছি না। যে রকম ‘হাম্বুরি হাম্বুরি’ যায় তাতে ‘বেইন্নাই’ মেজাজ
গরম হয়ে যায়। তার চেয়ে বাস অনেক ভালো আমার জন্য।“ অর্পণ দুই হাত শূন্যে তুলে নৃত্যসহকারে
যীশুকে সমর্থন করেছিল। কিন্তু আজ তাদের দুজনকেই ঠাসাঠাসি ভীড়ের মধ্যে ট্রেনে যেতে হচ্ছে।
আজ অবশ্য অন্য
কোন উপায় নেই। বাসের ভাড়া বৃদ্ধির দাবিতে পরিবহন ধর্মঘট আজ। অর্পণ-যীশুর মতো আরো অনেক
ট্রেন-বিদ্বেষীকেও আজ ট্রেনে যেতে হচ্ছে। তাই এত ভীড়। আমি সকালে ষোলশহরের বদলে বটতলি
স্টেশনে গিয়েও সিট পেলাম না। অর্পণ আর যীশুও বটতলি স্টেশনে গিয়েছে আমার একটু পর।
শুরুতে বগির
ভেতর কিছুটা হাঁটাচলার জায়গা ছিল। ষোলশহর স্টেশনে এসে থামার পর থেকে যে যেভাবে পারে
ঠেসে ঢুকে যাচ্ছে। বগির দুপাশের দরজাই খোলা। আমরা যথাসম্ভব দরজার কাছে দাঁড়ানোর চেষ্টা
করছি যেন কিছুটা বাতাস গায়ে লাগে। ট্রেনের একদিকে প্লাটফরম – সেদিক থেকে তো উঠছেই,
অন্যদিকে রেললাইন ধরে হেঁটে এসেও ট্রেনে উঠছে অনেকে। হঠাৎ “অ্যাই প্রদীপ, অ্যাই” –
মনে হচ্ছে অত্যন্ত ক্ষীণকন্ঠে আমার নাম ধরে ডাকছে কেউ। দেখলাম সিঁড়ির কাছে নিচে দাঁড়িয়ে
আছে আমাদের ক্লাসের সবচেয়ে লম্বা সবচেয়ে চিকন মেয়ে শবনম।
“উঠে এসো।“
বললাম বটে, কিন্তু সিঁড়িতে যে দুজন ছাত্রী বসে আছেন তাঁরা উঠে শবনমকে ট্রেনে ওঠার সুযোগ
করে দেয়ার ব্যাপারে কোন ইচ্ছা প্রকাশ করলেন না।
“আমার ব্যাগটা
ধরো” – শবনম চিঁচিঁ করে বললো আবার। সিঁড়িতে উপবিষ্টাদের মাথার উপর দিয়ে হাত বাড়িয়ে
শবনমের ব্যাগটা হাতে নিতেই সেটা ঠাস করে লাগলো একজনের মাথায়। ব্যাগটা যে এত ভারী হবে
তা আমি চিন্তাও করিনি। তাই হঠাৎ গ্রাভিটি বেশি কাজ করে ফেলেছে। তাতে অবশ্য ভালোই হয়েছে।
মাথায় বাড়ি খেয়ে তিনি উঠে দাঁড়িয়েছেন, শবনমও সেই সুযোগে উঠে এলো। ট্রেন ছেড়ে দিলো।
“তুমি এদিক
দিয়ে কীভাবে এলে?” – শবনমকে প্রশ্ন করলাম।
“আমার বাসা
এদিকে। ফরেস্ট কলোনি।“
“ও”
তারপর সে কী
বললো তা আর শুনতে পেলাম না। মনে হচ্ছে তার কথার কম্পাঙ্ক ২০ হার্টজের কম, যা আমার শ্রবণ-ক্ষমতার
বাইরে। কিন্তু দেখলাম - যে যীশু এতক্ষণ ধরে ট্রেনের বেশি ভীড় আর কম গতির কারণে বিরক্ত
ছিল – সে খুব হেসে হেসে গল্প শুরু করে দিয়েছে শবনমের সাথে। শবনমের ইনফ্রাসোনিক সাউন্ড
সে কীভাবে শুনছে কে জানে।
ইউনিভার্সিটির
শাটল ট্রেনে যাতায়াত আমার বেশ ভালোই লাগে। যীশু যেটাকে ‘হাম্বুরি হাম্বুরি’ বা হামাগুড়ি
দিয়ে চলা বলছে – সেই আস্তে আস্তে থামতে থামতে ঢিমেতালে চলতে চলতে দু’পাশের দৃশ্যগুলি মুখস্থ করতে করতে যাওয়া বেশ লাগে
আমার। তাছাড়া ট্রেনের ভেতর কত রকমের মজা হয়, তাস খেলা হয়, সুরে-বেসুরে গান চলে, মাঝে
মাঝে হাতাহাতি ঠিক না হলেও হাতাহাতির উপক্রম হয়, আর জনতার মাঝেই নির্জনতার সুযোগে মান-অভিমান,
রাগ-অনুরাগের পালাও চোখে পড়ে। আর বন্ধুদের সাথে গল্প তো আছেই। সবচেয়ে মজার ব্যাপার
হলো পুরো ট্রেনটা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-ছাত্রীতে ভর্তি – সব যাত্রীই কোন না কোনভাবে
সতীর্থ।
চৌধুরি হাট
স্টেশন থেকে প্রদীপ উঠে। অন্যদিন দরজায় দাঁড়িয়ে তাকে হাত দেখাই। আজ ঠাসাঠাসি ভিড়ে সেই
সুযোগ নেই। কিন্তু হাত না দেখালেও সে জানে আমি ইঞ্জিনের পরের বগিতে উঠি। সেখানেই উঠবে
সে। গলা উঁচু করে দেখলাম প্লাটফরমে সে সেই দূরত্বেই দাঁড়িয়ে আছে। ভেবেছিলাম সে সম্ভবত
উঠতে পারবে না। কিন্তু না, শাটল ট্রেনে যত ভীড়ই হোক – কীভাবে যেন সবার জায়গা হয়ে যায়।
শিক্ষার্থীদের ভেতর এই যে একটা পারস্পরিক সহযোগিতা কাজ করে তা দেখলে বেশ ভালো লাগে।
অথচ ক্যাম্পাসে বা হলে রাজনৈতিক মতভিন্নতার ব্যাপারে এক চুলও ছাড় দেয় না কেউ কাউকে।
ট্রেন থেকে
নেমে দেখলাম একটা বাসও নেই আজ। পরিবহন ধর্মঘটের কারণে সমিতিভুক্ত কোন যানবাহন আজ চলছে
না। আমরা হাঁটতে শুরু করলাম।
আমাদের ইউনিভার্সিটি
ক্যাম্পাসটি যে কত বিশাল তার সামান্য একটু ধারণা পেয়েছি ক্লাস শুরু হবার পর এই এক মাসে।
প্রদীপ ইউনিভার্সিটি কলেজের স্টুডেন্ট ছিল। এই ক্যাম্পাসে টিচারদের ছেলেমেয়েদের অনেকেই
তার বন্ধু। তার কাছ থেকে ক্যাম্পাসের অনেক কিছু চিনতে পেরেছি। এক নম্বর গেট থেকে কয়েক
কিলোমিটার ভিতরে বিশ্ববিদ্যালয় ট্রেন স্টেশন। স্টেশনসহ গেটের ভেতরের সবুজ-পাহাড়পর্বতসহ
প্রায় সতের শ একর জায়গা নিয়ে এই ক্যাম্পাস। বাংলাদেশের আর কোন ইউনিভার্সিটির এত বড়
ক্যাম্পাস নেই। কিন্তু এত বড় ক্যাম্পাসের সামান্য কিছু অংশেই শুধু আমাদের যাতায়াত।
রেলস্টেশন থেকে
বের হয়ে ইউনিভার্সিটির মেইন গেট দিয়ে ঢুকে রাস্তা চলে গেছে ডানদিকে। কিন্তু বামদিকেও
একটি সরু পিচঢালা রাস্তা আছে। ওদিকে অনেক স্যার-ম্যাডামের বাসা। সোজাসুজি পাহাড়ের মাঝখানে
ছোট্ট পায়ে চলা পাহাড়ি পথ। ওই পথ দিয়ে হেঁটে গেলে বাসের আগেই ফ্যাকাল্টিতে পৌঁছে যাওয়া
যায়। আমরা আজ হাঁটছি এই পথে। বৃষ্টির পানিতে রাস্তা ভিজে গেছে। কিছু কিছু জায়গায় কাদা
জমে গেছে। এদিকে এখনো প্রপার কোন রাস্তা হয়নি।
তবে ইউনিভার্সিটির মাস্টার প্ল্যানে নাকি এদিকে একটি সংযোগ সড়ক হবার কথা আছে।
যেপথে এখন বাস
চলে সেই সড়ক ডানদিকে। স্টেশনের কয়েক শ মিটার পরেই শাহজালাল হল। লাল ইটের তৈরি এই হলটি
অনেক বড়। শাহজালালের পাশেই শাহ আমানত হল। এই হলটিও অনেক বড়। পাঁচ তলা আধুনিক বিল্ডিং-এর
একটা অংশ একেবারে রাস্তার পাশে এসে পৌঁছেছে। হলের সামনে রাস্তার অন্যপাশে গড়ে উঠেছে
সারি সারি দোকান। বেশিরভাগই রেস্টুরেন্ট। হলের ছাত্রদের আনাগোনা এখানে লেগেই থাকে।
সকালে বাসে যাবার সময় দেখা যায় সারি সারি টুল-টেবিলের কোনটাই খালি নেই। খাবারের প্লেট
সামনে নিয়ে অনেকেই তাকিয়ে থাকে চলন্ত বাসের জানালার দিকে।
আমানত হলের
পর রাস্তার বামপাশে অনেকটা খালি জায়গা। সেখানে সবুজ ঘাস, মাঝে মাঝে কয়েকটা ছোট্ট গাছ
– মনে হয় কিছুদিন আগেই মাত্র লাগানো হয়েছে। এখানে রাস্তা ঘুরে গেছে বামে। ডানপাশে সোহরাওয়ার্দী
হল। বেশ কয়েকটি সাদা রঙের দোতলা বিল্ডিং পাশাপাশি দাঁড়িয়ে আছে। হলগুলির মধ্যে মনে হয়
এই হলটিই সবচেয়ে ছোট। ইউনিভার্সিটির সব শিক্ষার্থীকেই কোন না কোন হলের সাথে সংযুক্ত
থাকতে হয়। আমি কেন সোহরাওয়ার্দী হলের সাথে সংযুক্ত হয়েছি জানি না।
সোহরাওয়ার্দী
হলের সামনে দিয়ে রাস্তা চলে গেছে আরো ভেতরের দিকে। সেদিকে এ এফ রহমান হল, এবং আলাওল হল এবং ইউনিভার্সিটি কলেজ,
খেলার মাঠ, মেডিক্যাল সেন্টার এবং ভিসির কার্যালয় ও প্রশাসনিক ভবন। ক্যাম্পাসের যেসব
বাসে আমরা চড়ি – সেই বাসগুলির কোনটাই এদিকে যায় না। সেগুলি সোহরাওয়ার্দী হলের সামনে
এসে বামে মোড় নিয়ে সোজা চলে যায়। দুপাশে খালি সবুজ মাঠ পেরিয়ে পৌঁছে যায় শহীদ মিনারের
সামনে।
আজ আমরা পাহাড়ের
ভেতর দিয়ে হেঁটে চলে এলাম শহীদ মিনার চত্বরে। শহীদ মিনারের চত্বরটা বেশ সুন্দর। লাল
ইটের তৈরি শহীদ স্তম্ভ দেখলে মনে হয় ছোপ ছোপ রক্ত লেগে আছে সেখানে – যে রক্তের উত্তরাধিকার
আমরা বহন করছি। শহীদ মিনার থেকে বাম দিকের রাস্তা চলে গেছে শামসুন্নাহার হলের দিকে।
তারও পরে বোটানিক্যাল গার্ডেন। একদিন যেতে হবে বোটানিক্যাল গার্ডেনে।
শহীদ মিনার
থেকে সোজা হেঁটে চলে এলাম চাকসু ভবনে। সায়েন্স ফ্যাকাল্টিতে যাবার রাস্তায় তিন তলা
সাদা ভবনটি বেশ সুন্দর। চাকসু ভবন, কিন্তু চাকসুর নির্বাচন হচ্ছে না অনেক বছর ধরে।
ক্যাম্পাসের প্রায় সবকিছুই এখন জাতীয় ছাত্রসমাজের দখলে। নিচের তলায় ডানদিকে ক্যাফেটরিয়া,
বামদিকে অনেকগুলি টেবিল চেয়ার নিয়ে বসার জায়গা, আর ছাত্রদের টয়লেট।
ক্যাফেটরিয়ায়
ঢুকলাম সবাই মিলে। আজ বাস নেই বলে এখনো তেমন ভীড় হয়নি। অন্যদিন এতক্ষণে লম্বা লাইন
হয়ে যায়। এখানে খাবারের দাম তুলনামূলকভাবে কম। সকালে সিঙাড়া আর কেক পাওয়া যায়। দুপুরে
ভাত আর মাংস অথবা মাছ। খাবারের মান হলের খাবারের মতোই। তবে খাবার বেশ গরম গরম পাওয়া
যায়, কোন বাসী খাবার থাকে না। একটা নির্দিষ্ট পরিমাণে তৈরি করা হয়, এবং আগে এলে আগে
পাবেন ভিত্তিতে ঐটুকুই বিক্রি করা হয়। কাউন্টার থেকে দাম দিয়ে সিঙাড়ার টিকেট নিয়ে ডেলিভারি
কাউন্টার থেকে ট্রে-তে সিঙাড়া নিয়ে গিয়ে বসলাম বাম দিকের রুমে। টয়লেটে যেতে হবে।
আজ টয়লেটেও
তেমন ভীড় নেই। কিন্তু এত সকালেও তীব্র ঝাঁজালো দুর্গন্ধে বমি আসার জোগাড়। এত বড় বিশ্ববিদ্যালয়,
অথচ এখানে ছাত্রদের একটা টয়লেটও ঠিকমতো পরিষ্কার করা হয় না। ছাত্রীদের টয়লেটগুলির কী
অবস্থা জানি না। তবে সেগুলির অবস্থাও যে খুব একটা ভালো হবে তা আশা করা যায় না। ইউনিভার্সিটিতে
যতজন শিক্ষক আছেন, তার তিনগুণ আছেন কর্মচারী। তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারীদের শক্তিশালী
সংগঠন আছে তাঁদের স্বার্থ দেখার জন্য। কিন্তু তাঁদের কাজ দেখার জন্য কেউ আছেন বলে মনে
হয় না। ফ্যাকাল্টির টয়লেটগুলিতে ঢুকলে মনে হয় এগুলি তৈরি হবার পর থেকে একবারও কেউ পরিষ্কার
করেনি। অথচ ইউনিভার্সিটিতে যতগুলি টয়লেট আছে, সুইপার পদে লোক আছে তার চেয়েও বেশি।
মোবাশ্বের স্যারের
ক্লাস-টেস্ট আছে আজ। তিনি বলেছেন যে কোনদিন যে কোন ক্লাসে তিনি পরীক্ষা নিতে পারেন।
পরীক্ষার ফরম্যাট লিখিত কিংবা মৌখিক যে কোনটাই হতে পারে। মোবাশ্বের স্যারের ক্লাসে
খুব ভয়ে ভয়ে থাকি আমি। এর আগে দু’দিন তাঁর প্রশ্নের উত্তর দিতে পারিনি। উত্তর দিতে
না পারলে তিনি ক্লাসের এক কোণায় দাঁড় করিয়ে রাখেন। এরকম শাস্তি মনে হয় এখন স্কুলেও
দেয়া হয় না। আজ কী অবস্থা হবে কে জানে। রেজনিক হ্যালিডে’র বই থেকে থার্মোডায়নামিক্স
পড়াচ্ছেন তিনি। আর্টস ফ্যাকাল্টির কোণায় অগ্রণী ব্যাংকের সামনে একটা ছোট্ট বইয়ের দোকান
আছে। বেশিরভাগই পুরনো বই। সম্ভবত তিনি পুরনো বইয়ের বেচা-কেনা দুটোই করেন। সময় পেলেই
ওখানে ঢু মেরে আসি – যদি কোন দরকারি বই পাওয়া যায়। রেজনিক হ্যালিডে পার্ট-ওয়ান পেয়েছি
কয়েকদিন আগে। বই কিনতে যেরকম উৎসাহ থাকে, বই খুলে পড়তে গেলে সেই উৎসাহ কোথায় যেন পালিয়ে
যায়। ফিজিক্স তো এমনিতেই জটিল, ইংরেজিতে লেখা ফিজিক্স আরো জটিল মনে হয়। আর যখন মনে
হয় মোবাশ্বের স্যার প্রশ্ন জিজ্ঞেস করবেন – তখন পুরো ব্যাপারটা আরো জটিল হয়ে ওঠে।
“কী রে, পকেটে
কী? সিগারেট নাকি?”
মোবাশ্বের স্যার
ক্লাসে ঢুকেই সবার পকেট চেক করতে শুরু করেছেন।
“পড়াশোনার নাম
নেই, সুযোগ পেলেই বিড়ি ফোক” বলতে বলতে ফারুকের শার্টের পকেটে হাত ঢুকিয়ে “ইউরেকা” টাইপের
উল্লসিত হয়ে কিছু একটা বের করে এনে চোখের সামনে ধরলেন। একটা সাদা বেলী ফুল। নিউট্রন
জেনারেটর বিল্ডিং-এর সামনে অনেক বেলী ফুটে আছে। ফারুক ওখান থেকে একটা তুলে পকেটে রেখেছিল।
বেলীর গন্ধটা খুব ভালো লাগে। আমার পকেটেও একটা আছে। বিড়ির বদলে বেলী দেখে মনে হলো খুব
হতাশ হয়ে গেছেন মোবাশ্বের স্যার। বিরক্ত স্বরে বললেন, “পকেটে ফুল নিয়ে ঘুরছো মেয়েদেরকে
দেয়ার জন্য? কোন লাভ নেই। ফুল দিয়ে লাভ হয় না আজকাল।“ আমি শুনলাম ফুল দিয়ে LOVE হয়
না আজকাল। পকেটের ফুলটাকে এখন কোথায় লুকাই?
No comments:
Post a Comment